অবসরের নয় বছর পরও, ২২ গজে নামলে বিধ্বংসী মেজাজে পাওয়া যায় সচিন তেন্ডুলকরকে। ৪৯ বছর বয়সেও সমান ভাবে সাবলীল মাস্টার ব্লাস্টার। বৃহস্পতিবার তিনি এমন একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন, যেটা ছাপিয়ে যাবে বর্তমান প্রজন্মের ব্যাটারদের পারফরম্যান্সকেও। সচিনকে দেখে মনে হচ্ছিল, যেন সেই অতীতেই রয়েছে সকলে।
ভারতের কিংবদন্তি টিমের অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকর রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে ইংল্যান্ড কিংবদন্তিদের বিরুদ্ধে মাত্র ২০ বলে ৪০ রানের একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন। যার মধ্যে তিনটি চার এবং তিনটি ছক্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: গোয়ালিয়রে করা ঐতিহাসিক দ্বিশতরানের বলটি উপহার হিসেবে চেয়ে নিলেন সচিন
চলতি সিরিজে তেন্ডুলকরকে দেখে মনে হচ্ছে, তিনি অবসরের আগের ক্রিকেট জীবনে ফিরে গিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৬ রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ড কিংবদন্তিদের বিপক্ষে চেনা মেজাজে দেখা যায় তাঁকে। সচিন তেন্ডুলকর ১৩ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। এই ইনিংসে তিনি চারটি বাউন্ডারি হাঁকান।
একেবারে পুরনো সচিনেই মজেছে সকলে। শেন বন্ডকে পুল অফ শট মারা, ল্যাপ শট বা ব্যাকফুটে তাঁর ট্রেডমার্ক পাঞ্চ - সচিনকে চেনা মেজাজে পেয়ে একেবারে উচ্ছ্বসিত ক্রিকেট প্রেমীরা। বৃহস্পতিবার দেরাদুনেও চেনা ছন্দে সচিন ধরা দিয়েছিলেন। যা দেখে তৃপ্ত হয়েছেন ক্রিকেট ভক্তরা।
ইনিংস শুরু করার পরে তেন্ডুলকর ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের দিকে তাঁর প্রথম বাউন্ডারি মারার আগে অবশ্য একটি সিঙ্গেল দিয়ে তাঁর রানের খাতা খোলেন। পরের ওভারেই তেন্ডুলকর প্রাক্তন ইংল্যান্ড পেসার ক্রিস ট্রেমলেটকে দু'টি ছক্কা এবং একটি চার হাঁকান। প্রথম ছক্কাটি ফাইন লেগে বাউন্ডারির উপর দিয়ে চলে যায়। যদিও দ্বিতীয় ছক্কাটি নেটপাড়ায় বেশি ভাইরাল হয়েছে। ক্রিজ থেকে বেরিয়ে লং-অনে বল তুলে দেন তিনি। ১৯৯৮ সালে শারজাতে তাঁর ডেজার্ট স্টর্মের কথা মনে করিয়ে দেন সচিন।
স্ট্রেট ড্রাইভ এবং ব্যাকফুট পাঞ্চ ছাড়াও, তেন্ডুলকরের পরিচিত শটগুলির মধ্যে একটি হল, ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে বাউন্ডারি এবং ছক্কা হাঁকানো। যার ঝলকও পাওয়া যাচ্ছে। মাস্টার ব্লাস্টারকে ঘিরে রয়েছে এখন হাজার হাজার ভক্তের মুগ্ধতা। যাই হোক পরের বলে আর একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৮ রানের দামি ওভার শেষ করেন সচি।
সচিনের বিধ্বংসী মেজাজ দেখে, নেটপাড়া তাঁকে নিয়ে উদ্বেলিত। তাঁকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে রাখার জন্য সরব হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
২০ বলে ৪০ রান করে ভারতের ভিত গড়ে দেন। শেষটা দুর্দান্ত করেন যুবরাজ সিং। তারপর বাকি কাজটা সেরে ফেলেন বোলাররা। সচিন ছাড়াও যুবি করেছেন ১৫ বলে অপরাজিত ৩১ রান। এ ছাড়া ১১ বলে ২৭ করেছেন ইউসুফ পাঠান। স্টুয়ার্ড বিনি ১১ বলে ১৮ রান করেন। ইরফান পাঠান ৯ বলে ১১ করে অপরাজিত থাকেন। নির্দিষ্ট ১৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭০ রান করে সচিনের ভারত। ইংল্যান্ডের স্টিফেন পেরি নেন ৩ উইকেট।
আরও পড়ুন: স্রেফ উড়ে গেল ইংল্যান্ড, সচিন-যুবির বিধ্বংসী ব্যাটিং ও স্পিনের জালে জয় ইন্ডিয়ার
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেননি ব্রিটিশ কিংবদন্তিরা। তবে ভারতের স্পিনের জালে কুপোকাত হয় ইংল্যান্ড। ভারতের রাজেশ পাওয়ার নিয়েছেন ৩ উইকেট। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান (১৯ বলে) করেন ফিল মাস্টার্ড। ক্রিস স্কোফিল্ড ১৩ বলে ১৯ করে অপরাজিত থাকেন। ক্রিস ট্রেমলেট ১৬ বলে ২৪ করে অপরাজিত থাকেন। তবে নির্দিষ্ট ১৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান করে ইংল্যান্ড। ভারতের কিংবদন্তিদের দল ৪০ রানে ম্যাচ জিতে যায়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।