শুভব্রত মুখার্জি: বর্তমানে ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটের 'পাওয়ার হাউস' মুম্বই দলকে হারিয়ে তাদের ইতিহাসে প্রথমবার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মধ্যপ্রদেশ। ২৩ বছর আগে বেঙ্গালুরুর মাঠেই ফাইনালে হারের যেন মধুর প্রতিশোধ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের প্রশিক্ষণাধীন ছেলেরা। ১৯৫৬ সালে পথ চলা শুরু করেছিল মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। অর্থাৎ ৬৬ বছর বাদে এল সাফল্য। তবে মধ্যপ্রদেশ এই প্রথমবার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হলেও তাদের রঞ্জি ইতিহাস কিন্তু দীর্ঘদিনের এবং অবশ্যই সমৃদ্ধ। ১৯৪৪-৪৫ মরশুম থেকে শুরু করে ১৯৫৪-৫৫ মরশুম পর্যন্ত টানা ১০ বার ফাইনাল খেলেছিলেন তৎকালীন হোলকার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ক্রিকেটাররা। আসুন মধ্যপ্রদেশের এই উৎসবের দিনে একনজরে ফিরে দেখা যাক হোলকারদের এক যুগের সেই প্রশ্নাতীত আধিপত্যকে।
১০ বার ফাইনালে পৌঁছে ওই এক যুগ সময়ে হোলকাররা চারবার জিতেছিলেন রঞ্জির শিরোপা। মাঝে একমাত্র ১৯৪৮-৪৯ সালেই তারা রঞ্জির ফাইনালে খেলতে পারেনি। বাকি সব বছরেই হয় তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে না হয় হয়েছে রানার্স আপ। কে ছিলেন না সেই দলে! ভারতের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক সিকে নাইডু থেকে শুরু করে মুস্তাক আলি তারকাখচিত হোলকারদের সাফল্যের নেপথ্য নায়ক ছিলেন তারা।
১৯৩২ সালে প্রথম পথচলা শুরু করে তৎকালীন সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। ১৯৪০-৪১ থেকে পথচলা শুরু হয় হোলকার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের। ১৯৫৪-৫৫ মরশুম পর্যন্ত তা হোলকার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন নামেই খ্যাত ছিল। ১৯৫৫-৫৭ সালে তা নাম বদলে হয় মধ্য ভারত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। ১৯৫৬-৫৭ সাল থেকে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে পথ চলা শুরু হয়। প্রয়াত যশবন্ত রাও হোলকার ক্রিকেট অনুরাগী ছিলেন। ক্রিকেটের প্রতি রাজ পরিবারের সমস্ত সাপোর্ট তিনি দিতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় ক্রিকেটের উন্নতির স্বার্থে তিনি হোলকারদের হয়ে খেলার নিমন্ত্রণ জানান কর্নেল সিকে নাইডু, ভাইসাহেব নিম্বালকার, চান্দু সারাওয়াতে, সিএস নাইডু, হিরালাল গায়রকোয়াড়, খান্দু রঙ্গনেকার, কমল ভান্ডারকারদের। হোলকারদের অধিনায়ক সৈয়দ মুস্তাক আলি, মেজর এম এম জগদালে, জে এন ভায়া ছিলেন আবার স্থানীয় প্রতিভা। ফলে তারকাখচিত হোলকার দল সেই সময় একেবারে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। যার প্রভাব দেখা যায় ওই এক দশকের ফলাফলে।
১৯৪৪-৫৫ টানা ১১ বছরে ১০ বার রঞ্জি ফাইনাল খেলে চারবার চ্যাম্পিয়ন হয় হোলকাররা। ভারতের প্রথম অধিনায়ক সিকে নাইডু, বিদেশের মাটিতে ভারতের প্রথম শতরানকারী সৈয়দ মুস্তাক আলিদের থামানো তখন ছিল এক প্রকার অসম্ভব ব্যাপার।
∆ আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক হোলকারদের আধিপত্যের সেই এক দশকের রঞ্জিতে তাদের পারফরম্যান্সের ইতিহাস:
১) ১৯৪৪-৪৫ ফাইনালে বোম্বের কাছে ৩৭৪ রানে হার।
২) ১৯৪৫-৪৬ বরোদাকে ৫৬ রানে হারিয়ে শিরোপা জয়।
৩) ১৯৪৬-৪৭ ফাইনালে বরোদার কাছে এক ইনিংস ও ৪০৯ রানে হার।
৪) ১৯৪৭-৪৮ ফাইনালে বোম্বেকে ৯ উইকেটে হারানো
৫) ১৯৪৯-৫০ ফাইনালে বরোদার কাছে ৪ উইকেটে হার।
৬) ১৯৫০-৫১ ফাইনালে গুজরাটকে ১৮৯ রানে হারানো।
৭) ১৯৫১-৫২ ফাইনালে বোম্বের কাছে ৫৩১ রানে হার
৮) ১৯৫২-৫৩ ফাইনালে প্রথম ইনিংসে লিডের সুবাদে বাংলাকে হারানো
৯) ১৯৫৩-৫৪ ফাইনালে বোম্বের কাছে ৮ উইকেটে হার।
১০) ১৯৫৪-৫৫ ফাইনালে মাদ্রাসের কাছে ৪৬ রানে হার।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।