প্রথম ভারতীয় হিসাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন দীপা কর্মকার। গত রবিবার উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্তে ইতিহাস লিখেছেন দীপা কর্মকার। জিমন্য়াস্টিক্সের ভল্ট ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে সেরা পারফর্ম করে দীপা পদক ছিনিয়ে এনেছেন। সব মিলিয়ে ১৩.৫৬৬ স্কোর করেছিলেন তিনি। উত্তর কোরিয়ার কিম সন হ্যাং (১৩.৪৬৬ স্কোর করে রুপো) ও জো কিয়ং বিয়লকে (১২.৯৬৬ স্কোর করে ব্রোঞ্জ) হারিয়ে সোনা জিতেছিলেন দীপা কর্মকার।
ইতিহাস গড়লেন দীপা কর্মকার
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পদক পেলেন দীপা। ২০১৫ সালে হিরোশিমায় তিনি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ৯ বছর পর নিজেকেই ছাপিয়ে গেলেন দীপা। দীপা ছাড়াও ভারতীয়দের মধ্য়ে আশিস কুমার (ফ্লোর এক্সরাসাইজের ব্রোঞ্জ, সুরাত ২০০৬), প্রণতি নায়েক ( ভল্টে জোড়া ব্রোঞ্জ, উলানবাটার ২০১৯, দোহা ২০২২) এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছেন।
আরও পড়ুন… IPL 2024: মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তুমি কী চাও… ছেলের কাছে কী আবদার করেছিলেন গুরবাজের অসুস্থ মা
তবে দীপার আগে পর্যন্ত কোনও ভারতীয় সোনা জেতেননি। দীপাই দেশের প্রথম অ্যাথলিট হিসেবে সেই নজির গড়লেন। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। মহিলাদের ভল্ট ইভেন্টে প্রোদুনোভা ভোল্টে সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন দীপা। যদিও অল্পের জন্য় পোডিয়াম ফিনিশ করতে পারেননি। দীপা শেষ করেছিলেন চতুর্থ স্থানে।
রিও অলিম্পিক্সের পর টোকিও অলিম্পিক্স আসতে চলল। মাঝখানে দীপা কোথাও যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন। ডোপ টেস্টে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ২১ মাস নির্বাসনের আঁধারে ছিলেন তিনি। নির্বাসন ও ঠিক সময়ে নাম না পাঠানোর কারণে দীপার প্য়ারিসে যাওয়া হবে না। এই দুঃখের মধ্য়েও দীপার কাছে এশীয় পদক নিঃসন্দেহে অক্সিজেনের মতো।
আরও পড়ুন… এই একটা জিনিস যেটা ভারতীয় দল T20 WC 2024-এ মিস করবে: রোহিত শর্মাদের সতর্ক করলেন সাইমন ডুল
কী বললেন দীপা কর্মকার?
ইতিহাস তৈরি করে দীপা কর্মকার বলছেন, ‘আমি বোঝাতে পারব না যে, কতটা খুশি হয়েছি। অস্ত্রোপচার ও নির্বাসন কাটিয়ে এই পারফরম্য়ান্স। ভারতের আর কোনও জিমন্য়াস্ট অতীতে করতে পারেনি। এই পদক অবশ্য়ই স্পেশ্য়াল। আমি অবশ্য়ই ধন্য়বাদ জানাব আমার কোচ বিশ্বেস্বর নন্দী স্য়রকে। কঠিন সময়ে তিনি আমার সঙ্গে ছিলেন।’
‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দীপা বলেছেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। আসলে আমি অনেকদিন জিমন্যাস্টিক্স থেকে দূরে ছিলাম। মূলত চোটের জন্য। আবার একটা লম্বা সময় বাইরে থাকতে হয়েছে এমন একটা কাজের শাস্তির জন্য, যে কাজটা আমি করিনি। ফলে এই পদকটা আমার খুব দরকার ছিল। এতদিন ধরে যে সমালোচনা শুনেছি, তার জবাব দেওয়ার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাসনের পর্বটা আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল। সেটা আমি কাটিয়ে এসেছি ঠিকই। তবে আমার একটা জেদ ছিল নিজেকে প্রমাণ করার। আজকের সোনাটা সেই জেদেরই ফল। আমি পেরেছি এশিয়ান চ্যম্পিয়নশিপে আমার দেশ এবং কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর মাথা উঁচু করতে। সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি তৃপ্তির, সবচেয়ে বেশি আনন্দের।’
নিজের ভবিষ্যত নিয়ে দীপা বলেন, ‘কোনও পরিকল্পনা নেই। ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও কিছু ভাবিনি। সবে সোনা জিতলাম। এখন কয়েকটা দিন আনন্দে কাটাতে চাই। তারপর না হয় ভবিষ্যতের কথা ভাবব।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।