জনি বেয়ারস্টোর নাটকীয় রানআউট নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। তিনি মনের ভুলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে সতীর্থ ব্যাটার বেন স্টোকসের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রানআউট হন। আর সেই নিয়ে ক্রিকেট মহলে একেবারে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের ঘটনা এটি। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের ৫১.৬ ওভারের ক্যামেরন গ্রিনের বাউন্সার থেকে মাথা বাঁচিয়ে নেওয়ার পর বেয়ারস্টো বল কোথায়, সেটা ভুলেই গিয়েছিলেন। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। অজি উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি সঙ্গে সঙ্গে বল ছুড়ে উইকেট ভেঙে দেন। রান আউট হয়ে যান বেয়ারস্টো।
যদিও অনেকের মতে এটাকে স্টাম্পও বলা যায়। নিয়ম অনুযায়ী, এটা পরিষ্কার আউট ছিল। তবে অনেকেই মনে করছেন, এটি ক্রিকেটের নীতি বিরোধী। বিশেষ করে সরব হয়েছেন ব্রিটিশরা। কিন্তু পঞ্চম দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে স্পিরিট অফ ক্রিকেটকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স আর বেয়ারস্টোকে ক্রিজে ফেরানোর মতো সাহস দেখাতে পারেননি। যে সাহস ১২ বছর আগে দেখিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।
২০১১ সালে ট্রেন্ট ব্রিজের নটিংহ্যামে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে একটি টেস্টের ঘটনা এই প্রেক্ষিতে সবার আগে মনে আসে। যে টেস্ট ইয়ান বেল কিছুটা একই ভাবে রানআউট হয়েছিলেন। সেই সময়ে ১৩৭ রানে ব্যাট করছিলেন বেল। কিন্তু ছন্দে থাকা ব্যাটারকে ক্রিজে পুনরায় ফিরিয়ে এনে সকলকে অভিভূত করেছিলেন ধোনি। মন জয় করেছিলেন ক্রিকেট মহলের। যে কারণে বোধহয় সকলের থেকেই আলাদা হয়ে এক বিশেষ সম্মানের জায়গায় নিজেকে নিয়ে যেতে পেরেছেন মাহি। সেই সঙ্গে আইসিসি-র স্পিরিট অফ ক্রিকেট পুরস্কারও পান ধোনি।
সেই টেস্টে ইশান্ত শর্মার একটি ডেলিভারিতে বেল জোরালো শট খেলেন। তিনি ধরে নিয়েছিলেম, শটটি বাউন্ডারি হয়ে গিয়েছে। যে কারণে ক্রিজ থেকে বের হয়ে ননস্ট্রাইকে থাকা ইয়ন মরগ্যানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন বেল। কিন্তু সেটি চার হয়নি। এবং প্রবীণ কুমার বলটি বাঁচিয়ে ছুঁড়ে দেন। এবং অভিনব মুকুন্দ সেই বল পেয়ে উইকেট ভেঙে দেন। রানআউট হয়ে যান বেল। ত্রিকেটের নিয়মানুযায়ী আম্পায়ার আউট দিতে ভুল করেননি।
আরও পড়ুন: শূন্যে শরীর ভাসিয়ে এক হাতে দুরন্ত ক্যাচ, ব্যাটে-বলেও ধামাকা, কিংসকে জেতালেন PBKS তারকা
এর ঠিক পরেই চা-বিরতি হয়ে যায়। সেই সময়ে ভারতীয় দলকে বহু কটু কথা শুনতে হয়েছিল। কিন্তু সকলকে অবাক করে বেল চা-বিরতির পর আবার ব্যাট করতে নামেন। পরে জানা যায়, ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি চা-বিরতির সময়ে রানআউটের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। এর পর বেল আরও ২২ রান যোগ করেছিলেন বেল।
তবে বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে নিজেদের বিপদ বাড়াতে চাননি কামিন্স। কারণ জনি বেয়ারস্টো উইকেটটা ম্যাচের বড় টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়। বেয়ারস্টো আউট হওয়ার পরেও বেন স্টোকস লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর দুর্দান্ত ১৫৫ রানের পরেও, ম্যাচ হেরে যায় ইংল্যান্ড। ৩৭১ রান তাড়া করতে নেমে ৩২৭ রানে অলআউট হয়ে যায় ব্রিটিশরা। বেয়ারস্টো উইকেটে টিকে থাকলে হয়তো অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটা হেরে যেতেও পারত।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।