একটা টেস্ট ইনিংস কতটা আত্মবিশ্বাস জোগাতে পারে, তা সম্ভবত হনুমা বিহারীকে দেখলে উপলব্ধি করা যাচ্ছে। যে মানুষটা গ্রেড-২ হ্যামস্ট্রিং চোট নিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা লড়াই করে দলের হার বাঁচিয়েছিলেন, তাঁকে ক্রিকেটের ‘খুনি’ বলেছিলেন 'ক্রিকেটের কিচ্ছু না জানা' বাবুল সুপ্রিয়। সেই সমালোচনার কোনও প্রত্যুত্তর দিলেন না বিহারী। শুধু ছোট্ট একটা টুইট করলেন। তাতেই বুঝিয়ে দিলেন, কোন ধাতুতে তৈরি তিনি।
গত সোমবার দুপুরের দিকে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) যখন সিডনির মাঠে হ্যামস্ট্রিংয়ের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে লড়াই করছিলেন বিহারী, তখন ভেসে এসেছিল বিজেপি সাংসদের টুইট। ঐতিহাসিক জয়ের জন্য না ঝাঁপানোয় বিহারীকে ‘ক্রিকেটের খুনি’ বলেছিলেন বাবুল। লিখেছিলেন, '১০৯ বল খেলে সাত রান করেছেন! এটা খুব খারাপ বললেও কম বলা হবে। ঐতিহাসিক জয়ের ক্ষেত্রে ভারতের সম্ভাবনা শুধুমাত্র শেষ করে দেননি বিহারী, বরং তিনি ক্রিকেটকেও হত্যা করেছেন। সম্ভাবনা খুব কম হলেও জয়ের জন্য চেষ্টা না করার কাজ অপরাধের।’ সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘আমি ক্রিকেটের বিষয়ে কিছু জানি না।’
সেই ‘কিছু জানি না’ মন্তব্যের জন্য অবশ্য রেয়াত পাননি বাবুল। তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন। কেউ কেউ তো বলতে থাকেন, অস্ট্রেলিয়ার পেসত্রয়ীর বিরুদ্ধে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়ে ব্যাকফুট খেলা যে কতটা যন্ত্রণার, সেটা কি 'ক্রিকেটের কিচ্ছু না জানা' বাবুল অনুভব করতে পারছেন? তাতে অবশ্য টলেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বরং ম্যাচ শেষের পর আরও একটি টুইটে বলেন, ‘দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই যদি বাজে বলগুলিকে বাউন্ডারিতে পাঠানোর উদ্যম দেখাতেন হনুমা, তাহলে হয়ত এই ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নিতে পারত ভারত। বিশেষত পন্ত যা করেছেন, তা কেউ ভাবতেও পারেননি। আমি আবারও বলছি যে হনুমা শুধুমাত্র বাজে বল মারতে পারতেন। কারণ তিনি ততক্ষণে সেট হয়ে গিয়েছিলেন।’
বাবুল সেই কথা বললেও ম্যাচের শেষে রীতিমতো বীরের সম্মান পাচ্ছেন বিহারী। তাঁর হ্যামস্ট্রিংয়ের অবস্থা যে কতটা খারাপ ছিল, তা ড্রেসিংরুমের সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় আরও ভালোভাবে বোঝা যায়। এক সিঁড়ি থেকে অপর সিঁড়িতে ঠিকভাবে পা'ও ফেলতে পারছিলেন না। সেই তিনিই স্রেফ অদম্য জেদ, মানসিক দৃঢ়তার মাধ্যমে ক্রিজে ১৬১ বল টিকেছিলেন। করেছিলেন অপরাজিত ২৩ রান। আর সেই ইনিংসের পর ক্রিকেট মহলে তুমুল প্রশংসিতও হয়। সেই ইনিংসকে তাঁর শতরানের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে। তার জেরে যে আত্মবিশ্বাস কতটা বেড়েছে বিহারীর, তা স্পষ্ট হয়েছে বুধবারের সংক্ষিপ্ত টুইটে।
বাবুলের একটি টুইটের প্রত্যুত্তরে শুধু তিনি লিখেছেন, ‘*হনুমা বিহারী (*Hanuma Vihari)’। বাবুল আসলে ইংরেজিতে বিহারীর বানান লিখেছিলেন, 'Hanuma Bihari'। মুহূর্তের সেই টুইট ভাইরাল হয়ে যায়। কেউ কেউ তো বলতে থাকেন, ‘এটা ২০২১ সালের সেরা টুইট।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।