২০১৩ সালের জুন। সেই শেষবার কোনও আইসিসি টুর্নামেন্টে জয়ী হয়েছিল ভারত। সেবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ধোনির ভারত প্রায় অসম্ভব এক ম্যাচ জিতেছিল। একদিনের টুর্নামেন্ট হলেও বৃষ্টির জেরে ফাইনাল হয়েছিল ২০ ওভারের। তাতে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন বিরাট কোহলি। তাঁর ৩৪ বলে ৪৩ রানের ওপর ভর করেই কিছুটা ভদ্রস্ত রান করেছিল ভারত। পরে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং ইশান্ত শর্মার বোলিংয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারত। ২০ ওভারের ম্যাচে মাত্র ১২৯ রান রক্ষা করেছিল ভারত। ২০২৩ সালের জুন। আরও একটি আইসিসি টুর্নামেন্ট ফাইনাল। আরও একবার দেশের নজর বিরাট কোহলির দিকে। এবারও কি তিনি ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান করতে পারবেন? এবারও কি ভারতকে জয়ের প্ল্যাটফর্ম গড়ে দিতে পারবেন কোহলি? এই প্রশ্নই এখন ঘুরঘুর করছে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের মনে।
সাম্প্রতিককালে টেস্টে রান তাড়া করার কথা উঠলেই ২০২০-২১ সালের ব্রিসবেনে ঋষভ পন্তের কথা মনে পড়ে। তবে ১৯৭৯ সালে ওভালে সুনীল গাভাসকরের সেই ইনিংস আজও ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে স্বর্ণালী অক্ষরে খচিত। নয়া প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীরা অবশ্য সেই ম্যাচ দেখেননি। সেই ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে গাভাসকরের ২২১ রানের ওপর ভর করে ভারত সেবার ৪০০ রান পার করেছিল। ভারত তাড়া করছিল ৪৩৮ রান। শেষমেষ ম্যাচটি ড্র হয়। ভারত ৮ উইকেট হারিয়ে করেছিল ৪২৯ রান। তবে ২০২৩ সালের ভারতীয় দলে না আছেন ঋষভ, না আছেন গাভাসকর। এই দলে আছেন কোহলি, আছেন রাহানে। পঞ্চম দিনে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ২৮০ রান। গাভাসকরকে ছাপিয়ে গিয়ে আজ কোহলি কি ভারতকে জেতাতে পারবেন? চতুর্থ দিনের শেষে বিরাট কোহলি ক্রিজে রয়েছেন অপরাজিত ৪৪ রানে। তাঁর সঙ্গে ২০ রানে অপরাজিত রয়েছেন রাহানে। ৪৪৪ রান তাড়া করতে নেমে ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানে দাঁড়িয়ে। এদিকে শেষ দিনে জেতার জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ২৮০ রান।
নিজের দীর্ঘ ক্রিকেটীয় জীবনে কোহলি দুর্দান্ত কিছু ইনিংস খেলেছেন। ২০১৪-১৫ মরশুমের বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমে ১৪১ রানের সেই ইনিংস আজও অনেকের মনে থাকবে। তবে সেই ইনিংস ঋষভের ৮৯ বা গাভাসকরের ২২১ রানের সমতূল্য কি? কোহলির লড়াইয়ের পরও যে সে ম্যাচ হেরেছিল ভারত। তবে কোহলি যে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও। টেস্টে ২৮টি সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০-এর বেশি শতরান। এতবছরে তাঁর নাম হয়েছে 'চেজ-মাস্টার'। আইপিএল, আন্তর্জাতিক টি২০, একদিনের ম্যাচে বারবার নিজেকে প্রমাণ করেই এই নাম অর্জন করেছেন কোহলি। আজ যেন তাঁর কাছে আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করার পরীক্ষা। দেশের অপেক্ষার অবসান ঘটানোর পরীক্ষা। ওভালের মাঠে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বড় স্কোরের নজির ৭৯-এর ভারতের। তবে সফল ভাবে সবেচেয় বড় রান তাড়া করার নজির ১৯০২ সালে। সেবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২৬৩ রান তাড়া করেছিল ইংল্যান্ড। তাই কোহলির সামনে ১১১ বছরের রেকর্ড ভাঙার হাতছানি। টেস্ট ক্রিকেটে অমরত্ব অর্জনের হাতছানি। ভারতকে আইসিসি ট্রফি জেতানোর সুযোগ। তবে কোহলি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন কি না, তা সময়ই বলবে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।