উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় গেমস ২০২৫। এবার সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের বিষয় নিয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করে বসলেন জ্যোতি ইয়াররাজি। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি চলতি জাতীয় গেমসে অংশ নিয়েছি আর্থিক লাভের কথা ভেবে। উত্তরাখণ্ড সরকার মেডেল জয়ীদের জন্য যে নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছে তার জন্যই আমি আজ এই প্রতিযোগিতায়। এটাই আমার একমাত্র প্রেরণা।’ অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সময় ১০০ এবং ২০০ মিটার হার্ডেলে সোনার মেডেল যেতেন জ্যোতি। এই ২৫ বছর বয়সী অ্যাথলিট প্রতিটি সোনার মেডেলের জন্য ৫ লাখ টাকা করে পাবে, যা রাজ্য সরকার আগেই ঘোষণা করে রেখেছে। জ্যোতি জাতীয় গেমসের ৪০০ মিটার হার্ডেলেও নেমেছিলেন। তবে মেডেল জিততে ব্যর্থ হন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জ্যোতি জানিয়েছেন যে এই অর্থ তাঁর পরিবারের দারিদ্রতা দূর করতে বড় ভূমিকা নেবে। একই সঙ্গে আসন্ন এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স মিট এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ট্রেনিং নেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। তিনি বলেন, ‘আমি মিথ্যে কথা বলব না। জাতীয় গেমসে অংশ নেওয়ার আমার একমাত্র কারণ অর্থ। এই ইভেন্ট আমার অ্যাথলেটিক ক্যালেন্ডারের অংশ নয়। আপনি দেখতেও পাচ্ছেন যে অনেক প্রথম সারির ক্রীড়াবিদরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়নি। তারা বিদেশে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি যখন শুনলাম উত্তরাখণ্ড সরকার মেডেল জয়ীদের আর্থিক পুরস্কার দেবে তখনই আমি অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিই। আমি জানতাম যে ১০০ এবং ২০০ মিটারে সোনা জেতা সম্ভব। আমি হয়তো আরও ভালো করতে পারতাম। তবে আমি দুঃখিত এটা জানিয়ে যে আমার অংশগ্রহণের একমাত্র প্রেরণা ছিল অর্থ। এরকম ভাবে বলার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী তবে এটাই ভারতের নন-ক্রিকেট ক্রীড়াবিদদের অবস্থা।’
জ্যোতি এই মুহূর্তে ভারতের অন্যতম সেরা ট্র্যাক অ্যাথলিট। ২০২৩ এশিয়ান গেমসে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে ১০০ মিটার হার্ডেলে মেডেল (রুপো) জিতেছিলেন তিনি। ওই একই বছর এশিয়ান অ্যাথলিট মিটে সোনা জিতেছিলেন জ্যোতি। জ্যোতি অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারের তরফে যথাযথ আর্থিক সাহায্য প্রদান না করার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। খুব বেশি হলে ৮ হাজার টাকা মাসে আয় করেন। আমার দাদা কাজ করে ১৫ হাজার টাকার মতো উপার্জন করেন। আমার মা আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করতেন কিন্তু এখন তিনি অসুস্থতার কারণে কাজ করতে পারেন না। আমাদের মোট ২৩ হাজার টাকা আয়, এতে করে ঘর চালানোর পাশাপাশি আমার ট্রেনিং চালানো খুবই কঠিন। কিন্তু রাজ্য সরকার আমার সাফল্যের উপর নজর রেখে কোনও সাহায্য করেনি। আমার পরিবার কাঁচা বাড়িতে থাকে। আমার বাড়ির তৈরির জন্য টাকার প্রয়োজন। সরকারের তরফে না আমায় জমি দেওয়া হয়েছে না আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। আমি ভারতীয় রেলের জুনিয়র ক্লার্ক হিসাবে কাজ করি। ২০ হাজার টাকা মাইনে পাই। আমি আরও ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি যা পাই তা আমার ব্যক্তিগত খরচ হিসাবেই বেরিয়ে যায়। আমার সতীর্থরা, যারা অন্য রাজ্যে রয়েছে তারা তাদের রাজ্য সরকারের থেকে আর্থিক সহায়তা পায়।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।