ঋদ্ধিমান সাহার দায়বদ্ধতা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন সিএবি-র যুগ্ম-সচিব দেবব্রত দাস। তিনি বলেছিলেন ঋদ্ধি নাকি গায়ে ব্যথা, পায়ে ব্যথার অজুহাত দেন, এবং অজুহাত দেখিয়ে বাংলার হয়ে বহু ম্যাচ খেলতে চান না। এটা নিয়ে খুব একটা কিছু বলতে চাননি ঋদ্ধিমান সাহা নিজে। তিনি শুধু বললেন, ‘আমি সিএবি কর্তার সঙ্গে দেখা করে যা বলার বলব। এতদিন ধরে খেলছি। সবাই জানে আমি কী রকম।’ তবে চুপ করে থাকেননি ঋদ্ধিমান সাহার স্ত্রী। ‘যদি জানতাম ওর গায়ে ব্যথা, পায়ে ব্যথা হয়, তাহলে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে বলতাম। যেটা ও কোনওদিনও নেয়নি। আমার কঠিন সময়ে স্বামীকে আমি পাশে পাইনি। কেন ওকে পাশে পাইনি, তা নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। কেন রঞ্জি খেলছে না, সেই কারণও জানিয়ে এসেছে।’
ঋদ্ধির এক সময়ের সতীর্থ আর বঙ্গ ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার অশোক দিন্দাও রীতিমতো বিস্মিত। বললেন, ‘ঋদ্ধি কীভাবে বাংলার অবনমন বাঁচিয়েছিল, সেটা কী করে সবাই ভুলে গেল? একজন টেস্ট প্লেয়ারের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এটা হাস্যকর ছাড়া আর কী বলব? আমরা যারা দীর্ঘদিন বাংলার হয়ে খেলেছি, তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ওঁরা কে?’ সিএবির প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটে, বাংলা ক্রিকেটে কেউ বলতে পারবে না ঋদ্ধিমান কখনও ১০০ শতাংশ দেয়নি। ঋদ্ধি যে যে ক্লাবে খেলেছে, তারাও বলতে পারবে না যে, ও দায়িত্ব নিয়ে খেলে না। ক্লাব ক্রিকেটের প্রতিও একইরকম যত্নবান। এসব কথা বলে একজন ক্রিকেটারকে ছোট করা হয়।’ সিএবির সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া বলেন, ‘এটা সিএবির কথা নয়।’
ঋদ্ধিমান সাহা ক্লাব ক্রিকেটে দীর্ঘসময় মোহনবাগানের হয়ে খেলেছেন। মোহনবাগানের কোচ পলাশ নন্দীর বক্তব্য, ‘ঋদ্ধির দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে, কখনও মনে হয়নি। ক্লাবের যে ম্যাচে খেলেনি, সেখানেও জলের বোতল নিয়ে মাঠে দৌড়ে যেত।’ মোহনবাগান ক্লাবের ক্রিকেট সচিব সম্রাট ভৌমিক ঋদ্ধি সম্পর্কে এমন অভিযোগ শুনে রীতিমতো অবাক। তিনি বলেন, ‘দায়বদ্ধতা শব্দটা যদি ঋদ্ধির পাশে না বসে, তা হলে আমার মনে হয় না সেটা আর অন্য কারও ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলে আসার পরের দিনই মাঠে চলে আসে। ও সেই ম্যাচটা না খেললেও মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে গোটা দিন পুরো টিমকে উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছে। এমনকী, সতীর্থদের জন্য মাঠে জল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছে।’