গত বছর আইএসএলে তিন বার মুম্বই সিটি-র মুখোমুখি হয়ে, তিন বারই হেরেছে এটিকে মোহনবাগান। এই মরশুমের প্রথম লেগেও মুম্বইয়ের টিমের কাছে ১-৫ গোলে বাজে ভাবে হেরেছিল এটিকে মোহনবাগান। বৃহস্পতিবার তারা আবার সেই মুম্বই সিটি এফসি-রই মুখোমুখি হচ্ছে। তবে অতীতের কথা না ভেবে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে মন দিতে চায় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। বৃহস্পতিবার কি তারা মুম্বই কাঁটা উপড়ে ফেলতে পারবে?
এটিকে মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দোর মতে, প্রতি ম্যাচই এখন নতুন লড়াই। বৃহস্পতিবারের ম্যাচও সে রকমই একটা ম্যাচ। এই ম্যাচে পরিকল্পনা ও দল দু'টিই বদলানোরই ইঙ্গিত দিয়েছেন ফেরান্দো।
বুধবার সাংবাদিকদের সবুজ-মেরুন কোচ যা বললেন:
ডার্বি জয়ের পরে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে কতটা আত্মবিশ্বাসী টিম?
প্রত্যেক ম্যাচই সম্পুর্ণ আলাদা। এখন পরিস্থিতি যে রকম অস্বাভাবিক। একটা ম্যাচ জেতার পরে আমাদের আত্মবিশ্বাসী হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা সে ভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাইনি। খেলোয়াড়দের মধ্যে কয়েকজন কোয়ারেন্টাইনে ছিল, অনেকে সদ্য কোয়ারেন্টাইন থেকে বেরিয়েছে। ওদের মানসিক অবস্থার কথা ভেবে ওদের নিয়ে পুরো অনুশীলন করা কঠিন। তবে এটা ঠিকই যে একটা জয়ের পরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ঠিকই।
মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে কিন্তু বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে এটিকে মোহনবাগান! এ বার কি ঘুরে দাঁড়াবে দল?
এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা গত দু’সপ্তাহ ভাল করে অনুশীলন করতে পারিনি। এখন লিগের অবস্থা, পুরোপুরি অনিশ্চয়তায় ভরা। যে কোনও দল যে কোনও দলকে হারাতে পারে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা এই ম্যাচে সফল হতে পারি।
মুম্বই সিটি এফসি বরাবরই এটিকে মোহনবাগানের কাছে একটা বড় বাধা। এখনও পর্যন্ত আইএসএলে কোনও ম্যাচে মুম্বইকে হারাতে পারেনি সবুজ-মেরুন ব্রিগেড! এ বার পরিকল্পনা কী?
এটা নতুন একটা ম্যাচ। নতুন করে ৯০ মিনিট লড়াই করতে হবে। তাই অতীতে কী হয়েছে, সেটা ভেবে চাপে পড়ার কোনও মানে হয় না। ফুটবলে সব সময় বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবাই ভাল। মাঝে মাঝে অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হয় ঠিকই। কিন্তু সব সময় দু'-তিন সপ্তাহ বা তিন মাস আগে কী হয়েছে, তা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
দলের ছেলেদের উজ্জীবিত করার জন্য কোনও মনোবিদের সাহায্য নিয়েছেন?
আসলে আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। সব ক্লাবেই এখন এই একই আলোচনা চলছে। এই সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। ফলে প্রস্তুতিতেও তার প্রভাব পড়ে। মানসিক ভাবে খেলোয়াড়রা শক্তিশালী থাকে না। মাঠে বা মাঠের বাইরে হাসি-মস্করা করে তাদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা করে তুলতে হয়। সে ভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছি ওদের ঠিক রাখার। শারীরিক ও মানসিক শক্তির মধ্যে যাতে একটা ভারসাম্য থাকে, সেই চেষ্টাই করছি।
আপনারা টানা সাতটা ম্যাচে অপরাজিত এবং মুম্বইয়ের সময় ভাল যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম জয় পাওয়ার সেরা সময়?
আমি এ সব নিয়ে ভাবছিই না। আমি তিন পয়েন্ট নিয়ে ভাবছি। কারণ, আমাদের সেরা চারে ফেরাটা জরুরি। ওরে সম্প্রতি কেমন খেলছি, আমরা কেমন খেলছি। এ সব নিয়ে ভাবছি ই না। এটা আমাদের কাছে একটা নতুন ম্যাচ। তিন পয়েন্ট যাতে পাই, সে জ্ন্য যে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা দরকার, সেটা নিয়েই ভাবব। এই দলটার খেলার স্টাইল আমি জানি। সেই অনুযায়ী খেলতে হবে আমাদের।
ওরা কোন কোন জায়গায় শক্তিশালী?
ওরা খুব ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। ওদের গোলকিপার খুব ভালো। আক্রমণে ওঠে ভালো। ওদের সেন্টার ব্যাকরা খুব ভাল। ওদের জায়গা দিলেই তা কাজে লাগিয়ে আক্রমণে ওঠে ওরা। ট্রানজিশনেও ওরা বেশ দ্রুত। ওদের দুর্দান্ত একজন নাম্বার নাইন আছে ইগর আঙ্গুলো, যে যথেষ্ট কার্যকরী। গত মরশুমে গোল্ডেন বল জিতেছিল। একাই জায়গা তৈরি করে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ওদের উইঙ্গাররাও বেশ ভাল। ওদের যে দশ নম্বর, সেও দুর্দান্ত। সুতরাং অনেক জায়গাতেই ওরা শক্তিশালী।
ডার্বির দলে কোনও পরিবর্তন বা কৌশলে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছেন?
অবশ্যই। কারণ, এটা একেবারে অন্য একটা ম্যাচ। এই প্রতিপক্ষের খেলার স্টাইল সম্পুর্ণ আলাদা। গত ম্যাচে দুই দলের মধ্যে পয়েন্টের অনেক তফাৎ ছিল। এখানে সেটা নয়। প্রত্যেক ম্যাচেই আমাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা করে রাখতে হয়। আমরা তৈরি আছি।
দলের নতুন তারকা কিয়ান নাসিরিকে নিয়ে আপনার কী পরিকল্পনা?
ও খুব পরিশ্রমী ছেলে। ওর জন্য আমি খুব খুশি। জায়গা নিয়ন্ত্রণ ও ফিনিশিং- দুটো ব্যাপারেই ও খুব ভাল। ওর পাসের টাইমিংও খুব ভাল। এটাই হওয়া উচিত। প্রতি ম্যাচে ও উন্নতি করবে। যে কোনও দলের পক্ষে ও কোচের পক্ষে এ রকম খেলোয়াড় খুবই ভাল। তবে ওকে সময় দিতে হবে আরও উন্নতি করার।
গত কয়েক ম্যাচে মনবীরের পারফরম্যান্স নিয়ে কি খুশি?
ওর পারফরম্যান্সে আমি খুশি। তবে চাপের মুখে ওকে আরও ভাল খেলতে হবে। এটা করতে পারলে আক্রমণে ওর ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আমাদের স্টাইলে ও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে ওকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। ওর ওপর আমার আস্থা আছে। আশা করি দিনে দিনে অনুশীলনে ও ওর ভুলগুলো শুধরে নিয়ে দলকে আক্রমণ ও রক্ষণে সাহায্য করার জায়গায় চলে আসবে।
এখন প্রথম চারে পৌঁছানোর লড়াইটা যেহেতু শেষ দিকে চলে এসেছে, সেখান থেকে কালকের ম্যাচটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
পরের ন’টা ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় সব দলের কাছেই এখন সেরা চারে থাকার সুযোগ আছে, যেটা আইএসএলের সমর্থকেরা নিশ্চয়ই খুব উপভোগ করছেন। এখন প্রতিটি ম্যাচেই তিন পয়েন্ট পাওয়া খুবই জরুরি। প্রতিটি ক্লাবই শক্তিতে প্রায় সমান সমান। ফলে লড়াইটা বেশ কঠিন। এখন প্রতি ম্যাচেরই তীব্রতা বাড়বে। পরিস্থিতি যে রকমই থাকুক আমাদের এখন শুধুই জেতার কথা ভাবতে হবে জেতার জন্য মাঠে নামতে হবে।
-
EPL ২০২৩-২৪
পয়েন্টস টেবিল, লাইভ স্কোর, সূচি, দলে কে এল, কোন প্লেয়ারের ওপর সবার নজর, জানুন সব খবর
Explore Now -
ISL ২০২৩-২৪
পয়েন্টস টেবিল, লাইভ স্কোর, সূচি, দলে কে এল, কোন প্লেয়ারের ওপর সবার নজর, জানুন সব খবর
Explore Now
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।