আর মাত্র সাতটি ম্যাচ হাতে আছে তাদের। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে এবং সেরা ছয়ে আসতে গেলে প্রায় সব ম্যাচেই জিততে হবে ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে। এমন কঠিন সময়ে শুক্রবার ঘরের মাঠে তাদের সামনে গত বারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ এফসি, যারা আপাতত লিগ টেবলের দুই নম্বরে রয়েছে।
এই কঠিন ম্যাচে জিতে ঘুরে দাঁড়াতে চান ঠিকই, কিন্তু তার রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছেন না লাল-হলুদ শিবিরের ব্রিটিশ কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। দলের খেলোয়াড়দের মানসিকতা, তাঁদের চাপ সামলানোর ক্ষমতা এবং দলের ফুটবলারদের গড় উচ্চতা নিয়ে যে মোটেই খুশি নন, তা আরও এক বার জানিয়ে দিয়েছেন বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠকে। তবে লিগ টেবলের ন’নম্বরে রয়েছে বলে নিজের দলকে হেলাফেলা করার মতো দল বলেও মানতে রাজি নন তিনি।
কনস্ট্যান্টাইন বলেছেন, ‘আমাদের এখনও সাতটা ম্যাচ বাকি। গত কয়েকটা ম্যাচে আমরা অল্পের জন্য নিজেদের ভুলে হেরেছি। পরের ম্যাচগুলোতে আমাদের যথাসম্ভব বেশি পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। লড়াই করতে হবে। আগেই বলেছিলাম, দলটাকে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। আমরা টানা ১৫টি ম্যাচ অপরাজিতও থাকতে পারব না, আর প্রথম তিন বা চারের মধ্যে থাকাও কঠিন হবে। যে দল প্রথম দু'টি মরশুমে একটা করে ম্যাচ জিতেছে, সেই দল তৃতীয় মরশুমে ১৫টি ম্যাচ জিতবে, এটা আশা করাই অন্যায়।’
আরও পড়ুন: আনোয়ার আলিকে বিশাল বড় অঙ্কের প্রস্তাব, পরের মরশুমের দল গোছানো শুরু ATK MB-র
দলের রক্ষণকে আরও সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দিয়ে কোচ বলেছেন, ‘প্রতি ম্যাচেই আমরা উন্নতি করছি। গত দু'টি ম্যাচেই আমরা দেখেছি গোল দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরও গোল খেয়ে হেরেছি। আমাদের রক্ষণে আরও ভালো খেলতে হবে। আরও সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে আমাদের এবং গোল খেলেই আমরা আগোছালো হয়ে যাচ্ছি। এই ব্যাপারটা পাল্টাতে হবে। গোল করার পরে সেটা ধরে রাখতে জানতে হয়। আমাদের সেটাই করতে হবে।’
রক্ষণকে উন্নতি করার পরামর্শ দিলেও জানিয়ে দিলেন অঙ্কিত মুখার্জিকে চোটের জন্য এই ম্যাচের জন্য পাওয়া যাবে না। তবে সমর্থকদের পক্ষে স্বস্তির খবর, ইভান গঞ্জালেস মাঠে নামার জন্য তৈরি। ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে থাকার সময়ের কথা টেনে এনে কনস্ট্যান্টাইন বলেছেন, ‘যখন জাতীয় দলের কোচ ছিলাম, তখন দল আগে গোল দিলে সবাই প্যানিক করত। গোল খেলে বরং সবাই স্বস্তি পেত। এটা প্রায় বছর দেড়েক ধরে দেখেছি আমি। কারণ, সবাই আগে থেকে ধরে নিত, আমরা জিততে পারব না এবং গোল খাওয়ার পর ভাবত, এ বার আমরা চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারি। এক গোলে এগিয়ে থাকলে ছেলেরা ঘাবড়ে যেত। তারা গোল খেয়ে পিছিয়ে যেতে চাইত না। তবে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলার চাপ অনেক বেশি। আমাদের এখন শিখতে হবে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, কী ভাবে চাপ কাটিয়ে ম্যাচ জিততে হবে।’
আরও পড়ুন: ম্যাচ হারলেই চোট অজুহাত খাড়া করেন ATKMB কোচ,ঘরের মাঠে হারের পরেও তুষ্ট ফেরান্দো
নয়ে নেমে গেলেও দলের পারফরম্যান্স যে ততটা খারাপ নয়, তেমনই দাবি করেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ। তাঁর মতে, ‘আমরা যে সব ম্যাচে খুব বাজে খেলেছি, তা নয়। আমাদের চার গোল-পাঁচ গোলে কেউ হারাতে পারেনি। দুটো ম্যাচে আমরা খুবই ভাল খেলে জিতেছি। কিন্তু বাকিগুলোতে জঘন্য খেলিনি। সে রকম হলে হয়তো আমি থাকতামই না এখানে। অনেকবারই আমরা জেতার জায়গায় গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। লিগে সবচেয়ে খারাপ খেলেছি আমরা, এ কথা কেউ বলতে পারবে না।’
দলের ফুটবলারদের গড় উচ্চতাকেও ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলেন, ‘আমাদের দলের গড় উচ্চতা কম। তাই যখন মুম্বই, বেঙ্গালুরু, জামশেদপুরের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে খেলছি, তখন এটা একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠছে। ওদের ১৮৫-১৮৬র (সেন্টিমিটার) চার-পাঁচজন খেলোয়াড় রয়েছে। আমি তো আর আমার দলের ছেলেদের আরও লম্বা করে তুলতে পারব না। যে সব খেলোয়াড়রা সাড়ে পাঁচ ফুটের মতো, যেমন জেরি, তাদের অনেকের মধ্যে থেকে অনেকটা লাফিয়ে হেড করতে অসুবিধা হয়। সেট পিসে একই সমস্যা হয়। এগুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। হায়দরাবাদও নিশ্চয়ই কাল আমাদের এই সমস্যাটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।