ভারতীয় সময়ে রবিবার বেশি রাতে আরও একটি ধুন্ধুমার লড়াইয়ের অপেক্ষা করেছিল ফুটবল বিশ্ব। কিন্তু সে আশায় কার্যত জল ঢেলে দিল রিয়াল মাদ্রিদ। কার্যত এক তরফা ভাবেই তারা কোপা দেল রে-র সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনাকে উড়িয়ে দিল। করিম বেঞ্জেমার চোখ ধাঁধানো হ্য়াটট্রিকের হাত ধরে ৪-০ জয় ছিনিয়ে নিল রিয়াল। সেই সঙ্গে তারা টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গেস। আগামী ৬ মে ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ ওসাসুনা।
বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের এটি ছিল মরশুমের পঞ্চম এল ক্লাসিকো। আগের ৪টির মধ্যে ৩টিতেই জিতেছিল বার্সা। তাও আবার শেষ তিন বারই জয় পায় লিওলেন মেসির প্রাক্তন ক্লাব। রবিবার কোপা দেল রে-র সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সব মিলিয়ে ফেভারিট ভাবা হচ্ছিল বার্সাকেই। প্রথম লেগে নিজেদের ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হেরেছিল রিয়াল। সেই প্রতিশোধটা এ বার সুদে-আসলে মিটিয়ে নিল কার্লো আনসেলোত্তির টিম।
নিজেদের ঘরের মাঠ ক্য়াম্প ন্য়ুতে ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিট রিয়ালকে চাপে রেখে দাপট দেখায় বার্সাই। থিবো কুর্তোয়া দারুণ কিছু গোল না বাঁচালে, এগিয়েও যেতে পারত বার্সেলোনা। কিন্তু নাটকীয় চিত্রনাট্যে পরের গল্পটা লেখা হলো ভিন্ন ভাবে। প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে ইনজুরি টাইমে খেলা চলার সময়ে বার্সারই দুর্দান্ত এক আক্রমণ নষ্ট করে পাল্টা আক্রমণে প্রথম গোলের মুখ খোলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র।
আরও পড়ুন: হাবাস নন, মুম্বইকে ISL জেতানো স্প্যানিশ কোচের উপরই ভরসা রাখল ইস্টবেঙ্গল
ভিনির গোলেই ম্যাচে লিড নেয় রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচ তখন ১-১ সমতায়। তবে ভিনির বুদ্ধিদীপ্ত শট গোললাইনের কাছাকাছি জায়গা থেকে প্রায় ফিরিয়েই দিয়েছিলেন জুলেস কুন্দে। তবে বেঞ্জেমা এগিয়ে এসে বল জালে ঠেলে দিয়ে নিশ্চিত করেন গোল। যদিও পরে রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে বেঞ্জেমা বল স্পর্শ করার আগেই সেটি লাইন অতিক্রম করে। অর্থ্যাৎ ভিনির গোলেই এগিয়ে যায় রিয়াল।
বিরতির পর অবশ্য পুরো দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে শুধুই করিম বেঞ্জেমার দাপট। দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে দু'টি এবং পেনাল্টি থেকে আরও একটি গোল করে নিজের টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক আদায় করে নেন রিয়াল স্ট্রাইকার। এর আগে লা লিগায় রিয়াল-ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন বেঞ্জেমা। আর ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকার আগুনে রিয়াল ছিনিয়ে নেয় ৪-০ গোলের চমকপ্রদ এক জয়।
আরও পড়ুন: বাড়তি ২ কোটির জরিমানা এড়াতে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নিল কেরালা ব্লাস্টার্স
প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকার সুবাদে দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল শুরুটা করেছিল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। বার্সা রক্ষণের আশপাশে গিয়ে তারা চেষ্টা করে সুযোগ তৈরির। ৫০ মিনিটে রিয়াল পেয়ে যায় নিজেদের দ্বিতীয় গোলটিও। ডান প্রান্ত থেকে লুকা মদ্রিচ বার্সার তিন ডিফেন্ডারের ফাঁদ এড়িয়ে এগিয়ে গিয়ে অসাধারণ ভাবে বল বাড়ান বেঞ্জেনার দিকে। ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে গড়ানো শটে বার্সা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে দলের হয়ে ব্যবধান ২-০ করেন ফরাসি স্ট্রাইকার।
ম্যাচের ৫৮ মিনিটে তৃতীয় গোল রিয়ালের। ফ্রাঙ্ক কেসি ডি-বক্সের ভেতর ভিনিকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় রিয়াল। স্পট কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি বেঞ্জেমা। ৩-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর বার্সা একেবারেই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেঞ্জেমা হ্যাটট্রিক করেন।
ম্যাচের ৮০ মিনিটে ভিনির দৃষ্টিনন্দন এক পাসে নিজের হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি বার্সার কফিনে চতুর্থ পেরেকটি পোঁতেন বেঞ্জেমা। এর মাঝে আবার দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও তা রিয়ালের বড় জয় ঠেকাতে পারেনি বার্সা। শেষ পর্যন্ত ৪-০ (দুই লেগে মিলিয়ে ৪-১) জিতে ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে রোনাল্ডোর প্রাক্তন ক্লাব।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।