Durand Cup-এ টানা দ্বিতীয় জয় ইস্টবেঙ্গলের, কাশ্মীরের দলকে ৩-১ হারিয়ে উঠে এল গ্রুপ শীর্ষে

East Bengal FC vs Downtown Heroes, Durand Cup 2024: ডুরান্ডে টানা দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। বুধবার কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে ডাউনটাউন হিরোজ এফসির বিরুদ্ধে ৩-১ জিতে গ্রুপ তালিকার শীর্ষে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। এদিন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করেন মাদিহ তালাল সাউল ক্রেসপো এবং জেসিন টিকে।

ডুরান্ড কাপে পরপর দুই ম্যাচে জয় পেল ইস্টবেঙ্গল এফসি। বুধবার কলকাতার কিশোরভারতী স্টেডিয়ামে তারা কাশ্মীরের ডাউনটাউন হিরোজকে ৩-১ হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে। চোটের জন্য কাশ্মীরের দলের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোসকে শুরু থেকে নামাননি ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। আগামী ১৪ অগস্ট এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ থাকায় ঝুঁকি নিতে চাননি ইস্টবেঙ্গল কোচ। চোটের জন্য এদিন খেলেননি নন্দকুমার, প্রভাত লাকড়াও। তবু সহজ জয় ছিনিয়ে নিল কুয়াদ্রাতের দল।

গত বারের ডুরান্ডে রানার্স আপ ইস্টবেঙ্গল এফসি এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল। ডাউনটাউন হিরোজের রক্ষণকে তারা চাপে রেখেছিল শুরু থেকেই ২৩ মিনিটে ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালাল ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিলেও, তার সাত মিনিট পরেই তাদের রক্ষণের ভুলে সমতা ফেরান ডাউনটাউনের ফরোয়ার্ড আফরিন। তবে ৩৩ মিনিটের মাথাতেই পেনাল্টি আদায় করে নেন পিভি বিষ্ণু এবং সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ফের এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডিও সাউল ক্রেসপো। ম্যাচের একেবারে শেষে অনবদ্য গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন তরুণ ফরোয়ার্ড জেসিন টিকে।

তবে ডাউনটাউন হিরোজ যে একেবারে চুপচাপ হাত গুটিয়ে রক্ষণ সামলে গিয়েছে, তা একেবারেই নয়। তারা কিন্তু প্রতি আক্রমণে উঠে বেশ কয়েক বার চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণকে। তবে ম্যাচের ২৩ মিনিটে প্রথম গোলের মুখ খোলে লাল-হলুদই। ফ্রি কিক থেকে চোখ ধাঁধানো একটি গোল করেন তালাল। কাশ্মীরের দলের পেনাল্টি বক্সের সামনেই তালালকে ফাউল করা হলে, রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান। বিপজ্জনক জায়গা থেকে নেওয়া ফ্রি কিক সরাসরি গোলে ঢোকান ফরাসি মিডফিল্ডার।

২৫ মিনিটের মাথায় ডেভিড লালনসাঙ্গা ছ’গজের বক্সে ঢুকেও গোলে বল ঠেলতে পারেননি। আক্রমণে শক্তিশালী হলেও ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণকে যে আরও শোধরাতে হবে, তা ফের প্রমাণ পাওয়া গেল এই ম্যাচে। গত ম্যাচে তারা শুরুতেই গোল খাওয়ার পর ৩-১-এ জিতেছিল। এ দিন গোল করে এগিয়ে যাওয়ার সাত মিনিটের মধ্যেই গোল খায় রক্ষণের ব্যর্থতায়। ডানদিক থেকে নেওয়া ফ্রি কিক ডিফ্লেকশনের পর আসে দ্বিতীয় পোস্টে, যেখানে সামনে ছিলেন মহম্মদ রকিপ ও তাঁর পিছনে ডাউনটাউনের ফরোয়ার্ড আফরিন। রকিপ উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে না পারায়, আফরিন সেই সুযোগ কাজে লাগান এবং বাঁ-পা বাড়িয়ে দেন। তাঁর পায়ে লেগে বল গোলে ডুকে যায়।

গোল খাওয়ার পর ফের ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। ৩৩ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া পিভি বিষ্ণুকে অবৈধ ভাবে বাধা দেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার ইকলাক ফৈয়াজ। রেফারি পেনাল্টি দিতে দেরী করেননি এবং সেই ২-১ করেন সাউল ক্রেসপো। ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে বিষ্ণুর জায়গায় সিকে আমনকে নামায় কুয়াদ্রাত। তবে ডাউনটাউন হিরোজ সমতা আনার উদ্দেশে ক্রমশ চাপ বাড়াতে থাকে। তবে ৫৬ মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে সুবিধাজনক জায়গায় গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান ইস্টবেঙ্গলের সেন্টার ব্যাক হিজাজি মাহের। কিন্তু তাঁর দুর্বল শট আটকাতে কোনও বেগ পেতে হয়নি গোলকিপারকে।

এদিকে সমতা ফেরাতে কিছুটা গাজোয়ারি ফুটবল খেলতে শুরু করে কাশ্মীরের দলটি। ৮০ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় ডাউনটাউনের জাহিদকে। প্রতিপক্ষ দল ১০ জনে হয়ে যাওয়ায় কিছুটা সুবিধা পায় ইস্টবেঙ্গলের। সেই সুযোগটা তারা কাজে লাগায়। ইনজুরি টাইমে গোল করে কুয়াদ্রাতের দলের ৩-১ জয় নিশ্চিত করেন পরিবর্ত হিসাবে নামা জেসিন টিকে। ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়র দলের হয়ে এটাই তাঁর প্রথম গোল।