লিওনেল মেসি যেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। তাঁর ম্যাজিক। তাঁর সেই বাঁ-পায়ের মুগ্ধতা। এমন মেসি ম্যাজিক দেখার জন্য রাতের পর রাত জাগা যায়। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে নিজে গোল করলেন, গোল করানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত গোটা মাঠ জুড়ে দৌড়ে বেড়ালেন মেসি। তৈরি করলেন সুযোগ। সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে, নিঃসন্দেহে আর্জেন্তিনার ব্যবধান বাড়ত।
এ দিন প্রথমে তাঁর গোলেই ভাঙে অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্স। আর সেই সঙ্গে নিজের হাজারতম ম্যাচে মেসি করে ফেললেন নজির। মারাদোনাকে ছাপিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে আর্জেন্তিনার হয়ে মোট ৯টি গোল করলেন তিনি। মারাদোনা করেছিলেন ৮টি গোল। আর আর্জেন্তিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন বাতিস্তুতা। তাঁর গোলসংখ্যা ১০। এ বার বাতিস্তুতাকে টপকানোর অপেক্ষা।
আরও পড়ুন: কোয়ার্টারে মুুখোমুখি হবে আর্জেন্তিনা-নেদারল্যান্ডস,জানুন পুরো সূচি
বিশ্বকাপের নকআউটে এটাই মেসির প্রথম গোল। এর আগের ৮ গোল তিনি গ্রুপ লিগ পর্বে করেছেন। আসলে জীবনের শেষ বিশ্বকাপকে স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখতে চাইছেন লিওনেল মেসি। মেসি ছাড়াও এ দিন আর্জেন্তিনার হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেছেন জুলিয়ান আলভারেজ। তবে আর্জেন্তিনার এনজো ফার্নান্ডেজের আত্মঘাতী গোলে ১-২ করে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেনি অজিরা। ২-১ ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল আর্জেন্তিনাই।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ছ'গজ বক্সের মধ্যে মেসির ফ্রিকিক বাঁচিয়ে দেন সৌত্তার। কিন্তু বল আর্জেন্তাইনদের পায়েই থাকে। বক্সের মধ্যে ওটামেন্ডিকে বল বাড়ান ম্যাক অ্যালিস্টার। তাঁর পাস ধরে প্রায় ১৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শট মেসির। যেটা অজি ডিফেন্ডারের দু'পায়ের ফাঁক গলে সোজা জালে গিয়ে জড়ায়।
আরও পড়ুন: মেসি ম্যাজিকে পরাস্ত অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্তিনা ৩ গোল করেও, জিতল ২-১-এ
ম্যাচের প্রথম আধ ঘণ্টা খুব একটা সুবিধে করতে পারেননি মেসি। চোটের জন্য ডি'মারিয়া ছিলেন না। তাঁর বদলে আলেজান্দ্রো গোমেজকে খেলান লিওনেল স্কালোনি। দলে একটাই পরিবর্তন করেন আর্জেন্তিনার কোচ। কিন্তু প্রথম ৩০ মিনিটে সেই আগ্রাসী ফুটবল দেখা যায়নি। মেসির গোলের পর কিছুটা ছন্দ ফেরে। তবে আর্জেন্তিনা যে দুরন্ত কিছু করেছে এ দিন, এমনটা বলা যাবে না। মেসি অবশ্য জ্বলে ওঠেন গোলের পর। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে অনবদ্য কিছু সুযোগও তৈরি করে দিয়েছিলেন। যা কাজে লাগাতে পারেননি বাকি ফুটবলাররা।
বিরতির পর ম্যাচের ৫৭ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার গোলকিপারের ভুলে ২-০ করেন জুলিয়ান আলভারেজ। রায়ানকে ব্যাক পাস করেন অজি ডিফেন্ডার। অস্ট্রেলিয়ান কিপার চাপে পড়ে বল বিপক্ষের পায়েই তুলে দেন। ছ'গজের দূরত্ব থেকে গোল করতে ভুল করেননি আলভারেজ। এর পর অবশ্য চাপে পড়ে আর্জেন্তিনা। যখন ম্যাচের ৭৭মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট মারেন অস্ট্রেলিয়ার গুডউইন, আর বক্সের মধ্যে আর্জেন্তিনার এনজো ফার্নান্ডেজের মাথায় লেগে বল গোলে চলে যায়। আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এর পর অবশ্য বড় কোনও অঘটন ঘটেনি। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে সেলিব্রেশনে মাতেন মেসি-আলভারেজরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।