জালিয়াতি-দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অবশেষে মুক্তি, বিশ্বকাপের আগে নেইমারের স্বস্তি

স্পেনের আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল যে, নেইমারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি এবং জালিয়াতির অভিযোগ তুলে নেওয়া হল। আসলে স্যান্টোস থেকে ব্রাজিলিয়ান তারকার বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলেন স্পেনের প্রসিকিউটররা।

স্পেনের আদালতে নেইমার (ছবি-এএফপি)

অবশেষে স্বস্তির খবর পেলেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার নেইমার। ব্রাজিলের ফুটবলারের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ তুলে নেওয়া হল। শেষ পর্যন্ত ফুটবল বিশ্বকাপের আগে স্বস্তি পেলেন নেইমার। স্পেনের আদালতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল যে, নেইমারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি এবং জালিয়াতির অভিযোগ তুলে নেওয়া হল। আসলে স্যান্টোস থেকে ব্রাজিলিয়ান তারকার বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলেন স্পেনের প্রসিকিউটররা।

প্রসিকিউটররা প্রাথমিকভাবে নেইমারের দুই বছরের জেল ও ১ কোটি ইউরো জরিমানা চেয়েছিলেন। তবে নেইমারসহ সকলের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করার কথা শুক্রবার স্পেনের একটি আদালতকে জানান পাবলিক প্রসিকিউটর। প্রসিকিউটর লুইস গার্সিয়া আলাদতে বিচারকের কাছে সকল আসামীদের খালাস চেয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার পর বলেন, ‘অপরাধের সামান্যতম লক্ষণ নেই।’ শুক্রবার স্পেনের আদালত ঘোষণা করে, ‘নেইমারের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা তুলে নেওয়া হল।’ ৩০ বছরের নেইমার জানিয়েছেন যে, ২০১৩ সালে কী ঘটেছিল তা এখন আর মনে নেই তাঁর।

আসলে ২০১৩ সালে ব্রাজিলের স্যান্টোস ক্লাব ছেড়ে নেইমার যোগ দেন বার্সেলোনায়। সেই চুক্তি নিয়েই তৈরি হয়েছিল সমস্যা। সংবাদমাধ্যমের দাবি, দুই ক্লাবের মধ্যে চুক্তিতে অসঙ্গতি ছিল। নেইমারকে সেই সময় প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা দিয়েছিল বার্সা। ব্রাজিলীয় সংস্থার অভিযোগ, সেই ট্রান্সফার ফি নাকি প্রায় ৬৪২ কোটি টাকারও বেশি ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে চুক্তিতে গরমিল করার অভিযোগ উঠে ছিল। 

এই মামলায় নেইমারের বাবা, মা ও তাঁদের পারিবারিক কোম্পানি এনঅ্যান্ডএনকেও অভিযুক্ত করা হয়েছিল। পাশাপাশি অভিযুক্ত করা হয়েছিল স্যান্টোসের প্রাক্তন ম্যানেজার ওদিলিও রদ্রিগেস, বার্সেলোনার তৎকালীন সভাপতি সান্দ্রো রোসেল ও সহ-সভাপতি জোজেপ মারিয়া বার্তোমেউকে।

২০১৩ সালে স্যান্টোস থেকে নেইমারকে কিনতে ৫ কোটি ৭১ লাখ ইউরো খরচ হওয়ার কথা প্রথমে জানিয়েছিলেন রোসেল। কিন্তু পরে বার্সেলোনা স্বীকার করে, খেলোয়াড় ও তার বাবার সঙ্গে অন্যান্য চুক্তির কারণে ট্রান্সফার ফি বেড়ে ১০ কোটি ইউরোর কাছাকাছি হয়ে যায়। নেইমার আর বার্সেলোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে ব্রাজিলের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিআইএস। যাদের কাছে নেইমারের ক্রীড়া স্বত্বের ৪০ শতাংশ ছিল। নেইমারের বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার মূল ট্রান্সফার ফি গোপন করায় তাদেরকে ঠকানো হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছিল।

নেইমারের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার। স্পেনের হাই কোর্টে সেই মামলা খারিজ করে দেওয়ার জন্য আবেদনও করেছিলেন তিনি। আদালত যদিও তা মানেনি। ব্রাজিলের সেই লগ্নিকারী সংস্থার তরফে নেইমারের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আর্জি জানানো হয়েছে আদালতে। সেই সঙ্গে প্রায় ১২০৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছিল। কাতার বিশ্বকাপে নামার আগে এই সব কিছু থেকেই স্বস্তি পেলেন নেইমার।