প্রথমার্ধেই তিন গোলে এগিয়ে যেতে পারত ফ্রান্স। কিন্তু সেটা তারা করতে পারেনি। কারণ একাধিক গোলের সুযোগ হেলার হারান আঁতোয়া গ্রিজম্যানরা। যার নিট ফল, শেষ পর্যন্ত কোনও গোলই করতে পারল না ফরাসিরা।
দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে যেতে পারত নেদারল্যান্ডসও। দুর্ভাগ্য তাদেরও। জাভি সিমন্স গোল করেও ফেলেছিলেন। কিন্তু সেটা বাতিল হয়ে যায় অফসাইডের কারণে। সিদ্ধান্তটি অবশ্যই বিতর্কিত বলে মনে হয়েছে।
এই গোল নষ্টের মহড়া আর বিতর্কিত অফসাইডের সিদ্ধান্তে কারণে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার ভারতীয় সময়ে গভীর রাতে ফ্রান্স-নেদারল্যান্ডস ম্যাচটি শেষ হল গোলশূন্য ড্রয়ে। এবারের ইউরোতে এটাই প্রথম ম্যাচ, যেখানে কোনও গোল হল না। যার নিট ফল, শেষ ষোলোতে জায়গা নিশ্চিত করার অপেক্ষা বাড়ল দুই দলেরই।
আরও পড়ুন: ১-৩ লজ্জার হার, আশা কার্যত শেষ পোল্যান্ডের, শেষ ষোলোর আশা বাঁচিয়ে রাখল অস্ট্রিয়া
নাকের চোটের কারণে এদিন প্রথম একাদশে ছিলেন না কিলিয়ান এমবাপে। আঠারো জনের দলে তাঁকে রাখা হলেও, শেষ পর্যন্ত দিদিয়ের দেশঁ কোনও রকম ঝুঁকি নিয়ে নামাননি এমবাপেকে। তারকা ফুটবলারের অনুপস্থিতি প্রতি মুহূর্তে টের পাচ্ছিল ফ্রান্স, যখন একের পর এক গোল মিসের ধারা চলছিল।
এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন আঁতোয়া গ্রিজম্যান। কিন্তু তিনি এদিন রীতিমতো হতাশ করেন। ফাঁকা গোল পেয়েও, দলকে লিড এনে দিতে পারেননি। স্বাভাবিক ভাবেই ফ্রান্সের প্রাপ্তির ভাঁড়ার এদিন শূন্যই থেকে যায়।
ম্যাচের প্রথম দিকে অবশ্য আগ্রাসী ফুটবল খেলছিল দুই দলই। ম্যাচের একেবারে শুরুতেই নেদারল্যান্ডস একটি সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল। বল পেয়ে মেমফিস দেপাই পাস বাড়িয়ে ছিলেন জেরেমি ফ্রিমপংকে। তবে তাঁর শট বাঁচিয়ে দেন ফ্রান্স গোলকিপার মাইক মাইগনান।
আরও পড়ুন: এগিয়ে গিয়ে হার স্লোভাকিয়ার, দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে ২-১ জিতল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন
এর পর ১৪ মিনিটের মাথায় খুবই সহজ সুযোগ নষ্ট করে ফ্রান্স। বক্সে বল পেয়েছিলেন আদ্রিয়েন হাবিয়ঁ। তাঁর সামনে একা গোলকিপার থাকলেও তিনি বাঁ-দিকে থাকা গ্রিজম্যানকে পাস বাড়ান। বল রিসিভ করতে গিয়ে পড়ে যান ফ্রান্সের অধিনায়ক। নিশ্চিত সিটার মিস। তার কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার সুযোগ পান গ্রিজম্যান। কন্তের থেকে বল পেয়ে বাইরে মারেন। এর দু'মিনিট পরেই সুযোগ পান ডাচেরা। কোডি গাকপোর শট বাঁচান ফরাসি গোলকিপার।
তবে শুরুটা দুই দল যতটা আক্রমণাত্মক ছন্দে করেছিল, খেলা যত গড়ায়, সেই আক্রমণের ঝাঁজ কমতে থাকে। দুই দলের ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ে মাঝমাঠেই আটকে থাকে খেলা। ফ্রান্সের ফুটবলাররা এদিন হতাশাজনক ফুটবল খেলেন। প্রচুর মিস পাস করতে থাকেন। ফিনিশিংয়ের অভাব বার বার প্রকট হয়ে উঠেছিল। নেদারল্যান্ডসের হালও তথৈবচ ছিল। প্রথমার্ধে গোলের মুখ খুলতে পারেনি কোনও দলই।
আরও পড়ুন: হ্যারি কেনের গোলে এগিয়ে গিয়েও হতাশার ড্র, ইংল্যান্ডকে রুখে দিল ডেনমার্ক
দ্বিতীয়ার্ধেও সেই একই ছবি। তবে ম্যাচের ৬৫ মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। ৬৫ মিনিটের মাথায় চুয়ামেনি বল বাড়িয়েছিলেন থুরামকে। থুরাম ব্যাক হিল করে বল দেন ওসমানে দেম্বেলেকে। এর পর এনগোলো কন্তে ঘুরে বল যায় গ্রিজম্যানের কাছে। গোলের থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে থাকা গ্রিজম্যান বল বাঁ-পায়ে রিসিভ করে বাঁ-পায়েই শট মারতে যান। গোলের একহাত দূরে কন্তের থেকে বল পেয়েও দুর্বল শট গ্রিজম্যানের। ডাচ কিপার বার্ট ভারব্রুগেনের পায়ে লেগে তা কর্নার হয়ে যায়। এর মিনিট দুয়েক আগে থুরামের শট পোস্টে ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
তবে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে গোল করে ফেলেছিল নেদারল্যান্ডস। ফ্রান্সের বক্সের মধ্যে বল নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছিল। সেখান থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট মেরেছিলেন জাভি সিমন্স। ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায় ফ্রান্স। অফসাইডের জন্য গোল বাতিল করে দেন রেফারি। ডাচ ফুটবলারদের প্রতিবাদ জানালে ‘ভার’-এর সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত বদলায়নি। সাইমন্স শট নেওয়ার সময়ে ডেনজিল ডামফ্রাইস অফসাইডে ছিল। রেফারির দাবি, তিনি সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় ফ্রান্সের কিপার মাইগনান ঝাঁপিয়ে পড়ে বল বাঁচাতে পারেনি। যদিও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এর পর কোনও দলই আর গোলের মুখ খুলতে পারেনি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।