যুবভারতীতে নতুন ইতিহাস লেখা হল না ভারতীয় ফুটবল টিমের। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেও গোল এল না। ড্র করে নিজেদের লড়াইকে কঠিন করে তুলল ভারত। যার জেরে মন ভাঙল সুনীল ছেত্রীর। যা তাঁর অবসর যন্ত্রণাকে আরও বাড়িয়ে দিল। ম্যাচের পর মাথা নীচু করে মাঠ প্রদক্ষিণ করলেন ভারত অধিনায়ক। দু'দিকে সার বেঁধে দাঁড়িয়েছিলেন ভারতের প্লেয়ার এবং সাপোর্ট স্টাফেরা। সুনীলকে গার্ড অফ অনার দেওয়ার জন্য। এসব দেখার পরেই সুনীল আর চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না। পেশাদারিত্বের মোড়কে নিজেকে আটকে রাখতে পারলেন না। ছেলেমানুষের মতোই কেঁদে ফেললেন তিনি। চোখের জলে ভেসে শেষ বার দেশের জার্সিতে মাঠ ছাড়লেন সুনীল ছেত্রী।
দেশের জার্সিতে শেষ বার মাঠ ছাড়লেন সুনীল
খেলা শেষ, ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল ভারতকে
খেলা শেষ। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল ভারতকে। গোলের মুখই খুলতে পারল না টিম ইন্ডিয়া। একাধিক সুযোগ পেয়েও, গোল হাতছাড়া করার খেসারত দিতে হল ভারতকে। এতে কঠিন হল ভারতের লড়াই। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের পরের রাউন্ডে যাওয়া মরাত্মক কঠিন হয়ে পড়ল টিম ইন্ডিয়ার।
ফুটবলারদের মারামারি
৯০+৩ মিনিট- গোলের দেখা নেই। তার মাঝেই ফুটবলারদের মধ্যে হাতাহাতি। বল কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে ঝামেলা বাধে লালরান্ডিকা এবং সামি আলসানেয়ার মধ্যে। পরে এসে সুলতান অ্যালনেজি ধাক্কা মারেন ডিকাকে। অ্যালনেজি এবং লালরিন্ডিরা দু'জনেই লালকার্ড দেখেন।
৭ মিনিট ইনজুরি টাইম
দ্বিতীয়ার্ধের নির্দিষ্ট সময়ের খেলা শেষ। কোনও গোল হয়নি। ভারত গোলের মুখই খুলতে পারেনি। ৭ মিনিট ইনজুরি টাইম দেওয়া হয়েছে। তাতে গোলের মুখ আদ খুলবে?
আরও একটি পরিবর্তন করলেন স্টিম্য়াচ
৮৩ মিনিট- আরও একটি পরিবর্তন করল ভারত। জয় গুপ্তর জায়গায় নামলেন লালরিন্ডিকা।
ভারতীয় দলে ফের পরিবর্তন
৭০ মিনিট- লিস্টনের জায়গায় নামলেন মনবীর। কিন্তু ভারতের গোলের দেখা নেই। এই ম্যাচ তারা জিততে পারবে না?
ভারতের চেষ্টা
৬০ মিনিট- ব্র্যেন্ডনের কর্নার প্রথমে সুনীল ছেত্রীর কাছে যায়। তিনি বলটি আয়ত্তে নিতে পারেননি। তার পরে ভেকে গোলে হেডার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আব্দুলগফুর সেই বল ধরে ফেলেন।
হলুদকার্ড
৫৫ মিনিট- ভারত পাল্টা আক্রমণে উঠছিল যখন, তখন রহিম আলিকে ফাউল করেন অ্যালানেজি। রেফারি তাঁকে হলুদকার্ড দেখান।
রহিম আলি ফের মিস করলেন
৫১ মিনিট- ফের রহিম আলি মিস করেন। রাহুল ভেকে একটি মাপা-থ্রু বল বাড়িয়েছিলেন। রহিম বক্সের ভিতর ঢুকে পড়েন। তবে বল বাইরে মারেন। লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হয় রহিম।
সুযোগ নষ্ট করলেন রহিম
৪৮ মিনিট- কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠে ভারত। রহিম গোলের কাছে পৌঁছে যান। বক্সের ভিতরে ঢুকে কুয়েত কিপার আব্দুল গফুরকে ওয়ান অন ওয়ান পেয়ে যান। কিন্তু তাও গোলের মুখ খুলতে পারেননি। নীচু শট নেন রহিমা। তবে সেই শট সহজে বাঁচিয়ে দেন কুয়েত কিপার।
ভালো সেভ গুরপ্রীতের
৪৭ মিনিট- আলহারবি বাঁ-দিক থেকে একটি ক্রস বাড়ান। তবে সেই শট গুরপ্রীত ভালো সেভ করেন। তিনি ডান দিকে লাফিয়ে বলটি সেভ করে দেন।
জোড়া পরিবর্তন ভারতের
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া পরিবর্তন করল ভারত। অনিরুদ্ধ থাপার জায়গায় নামলেন ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ। সাহালের জায়গায় নামলেন রহিম আলি। পুরোপুরি আক্রমণে চলে গেলেন স্টিম্যাচ। গোল পেতে ভারত যে কতটা মরিয়া, তা এই পরিবর্তনেই পরিষ্কার।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু। ভারত কি পারবে গোল করে ইতিহাস লিখতে? প্রথমার্ধে তো গোলের মুখই খোলেনি। বিরতির পর গোলের আশায় গোটা যুবভাবরতী।
বিরতি ফল গোলশূন্য
প্রথমার্ধের খেলা শেষ। কিন্তু গোলের দেখা মেলেনি। ভারত বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও, কাজে লাগাতে পারেনি। কুয়েতের হাল এক। যার নিটফল, বিরতিতে ম্যাচের ফল গোলশূন্য
চার মিনিট ইনজুরি টাইম
নির্দিষ্ট ৪৫ মিনিটের খেলা শেষ। দুই দলই গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ। গোল করার লোকের অভাবটা দুই দলেই সমান ভাবে লক্ষ্য করা গিয়েছে। সুনীলের শেষ ম্যাচে স্টিম্যাচ ব্রিগেডের কাছ থেকে আরও একটু চনমনে ভাব আশা করা হয়েছিল, কিন্তু সেগুড়ে বালি!
হতাশা বাড়াচ্ছে টিম ইন্ডিয়া
৪০ মিনিট- সাহাল মাপা শটে পূজারির কাছে বল বাড়ান। কিন্তু কিছুটা ভুল যোগাযোগের কারণে ছাংতে সেই বল পেয়ে যান। কিন্তু তিনি বল ধরে রাখতে পারেননি। এই ম্যাচে ব্লু টাইগারদের লক্ষ্যে এখনও কোনও শট নেই।
গোলের দেখা নেই
৩০ মিনিট- ফ্রিকিক থেকে বক্সের ভিতর আরও একটি চমৎকার ক্রস অনিরুদ্ধ থাপার। বলটি প্রথমে ক্লিয়ার হয়ে গেলেও, সাহালের কাছে যায়। তবে তাঁর শট আটকে যায়। ফিরতি বলটি কোলাসোর কাছে এসে পড়ে, তবে তিনি জালে সাইডে মারেন।
ভালো গোল বাঁচালেন কুয়েত কিপার
২৫ মিনিট- কুয়েত একটি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু আলরাশিদি সেটা মিস করলে, পালটা ভারত কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠে। জয় গুপ্তা বাঁ-দিকের ফ্ল্যাঙ্ক দিয়ে বল নিয়ে উপরে ওঠেন। এবং সাহালকে বলটি দেন। তিনি একটি লো ক্রস বাড়ান। কিন্তু আলেনেজি ক্রস অনুমান করে বলটি ধরে ফেলেন। আলেনেজি এখনও পর্যন্ত দু'টি ভালো গোল বাঁচালেন
কুয়েতের শক্তিশালী রক্ষণ
১৭ মিনিট- কুয়েত রক্ষণে মারাত্মক জোর দিয়েছে। ভারতকে গোলের মুখ খুলতে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত আল কুয়েত ব্লু টাইগারদের বিপরীতে কোনও ভুল করেনি। তারা কিন্তু কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে বিপদে ফেলছে টিম ইন্ডিয়াকে।
ফের সুযোগ নষ্ট স্টিম্যাচ ব্রিগেডের
১২ মিনিট- কর্নার থেকে বক্সের ভেতর চমৎকার ক্রস বাড়ান থাপা। আনোয়ার আলি হেড করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ্যে বল রাখতে পারেননি। ব্লু টাইগারদের জন্য আর একটি দুর্দান্ত সুযোগ ছিল।
সুযোগ নষ্ট করলেন সুনীল
১১ মিনিট- কোলাসো বাঁদিকের ফ্ল্যাঙ্কে বল পেয়ে চোরা গতিতে উপরে ওঠে। তিনি কুয়েতের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বলটি স্কোয়ার করেন। বল পান সুনীল ছেত্রী। গোলের ভালো সুযোগ ছিল। কিন্তু হাসান আলানেজির পায়ে লেগে বল চলে যায় মাঠের বাইরে। কর্নার পায় ভারত।
শুরুতেই কুয়েতের আক্রমণ
৪ মিনিট- ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের মেজাজে রয়েছে কুয়েত। ম্যাচের চার মিনিটের মাথায় দুরন্ত জায়গায় পৌঁছেও গিয়েছিলেন কুয়েতের মহম্মদ আবদুল্লাহ। কিন্তু সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। বল চলে যায় মাঠের বাইরে।
খেলা শুরু
ভারত বনাম কুয়েত ম্যাচে কি ইতিহাস লিখতে পারবেন সুনীলরা? কেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। পারবে জিততে ভারত? লেখা হবে ইতিহাস?
ভারতীয় একাদশ
গুরপ্রীত সিং সান্ধু (গোলকিপার), রাহুল ভেকে, আনোয়ার আলি, জয় গুপ্তা, অনিরুদ্ধ থাপা, সুরেশ সিং, সুনীল ছেত্রী (অধিনায়ক), লিস্টন কোলাসো, লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে, সাহাল আব্দুল সামাদ, নিখিল চন্দ্রশেখর পূজারি।
স্টিম্যাচও আবেগপ্রবণ
ইগর স্টিম্যাচ বলে দেন, ‘আমি বিদেশি হলেও, নিজেকে ভারতীয় মনে হচ্ছে। দায়িত্ব নেওয়ার সময় পেশার সঙ্গে আবেগ মেলাতে চাইনি। কিন্তু নিজেকে আটকে রাখতে পারিনি। আমার ফুটবলার এবং কোচিং জীবনের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এক শতাংশ মানুষকে খুশি করতে পারলেই আনন্দ হয়। সেখানে এবার ১.৫ মিলিয়নকে খুশি করার সুযোগ রয়েছে।’
ম্যাচের আগের দিন কী বলেছেন সুনীল?
সুনীলের কাছে নিজের বিদায়ী ম্যাচের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল, কুয়েতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতে ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডের ছাড়পত্র সংগ্রহ করা। সুনীল বলেও দিলেন, ‘আবেগ থাকবেই। তবে এখন শুধুই কুয়েত ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। ড্রেসিংরুমে আমার অবসর নিয়ে আর কোনও কথা বলি না। আমার শেষ ম্যাচ নিয়ে চর্চা এখন অতীত। শুধুমাত্র আপনারাই আবেগের প্রসঙ্গ টানেন। আমাদের সামনে এখন শুধুই কুয়েত ম্যাচ। যা আমাদের ভালো খেলে জিততে হবে। আমি বেশ কয়েক বার এখানে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। এমন অনেক জন এখানে রয়েছে, যাদের আমি গত ২০ বছর ধরে দেখছি। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। তবে এবার ম্যাচে ফোকাস করতে হবে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এর থেকে ভালো অবসরের মঞ্চ হতেই পারত না। আমি মানসিক ভাবে শান্তিতে আছি। নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছি। আমরা কাল ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারব কিনা, সেটা সময়ই বলবে। তবে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।’
আবেগে ভাসছে যুবভারতী
ম্যাচের আগে সুনীল ওয়ার্মআপ করতে নামলে যুবভারতীতে উপস্থিত গুটি কয়েক দর্শকের শব্দব্রহ্মেই কান পাতা দায়! তখন সবে অল্প অল্প করে ভরতে শুরু করেছে স্টেডিয়াম। বাইরে বিশাল লাইন। হইহই ব্যাপার। ঢেলে বিক্রি হচ্ছে দেশের জার্সি, পতাকা। সেগুলি কেনার ধুম। সুনীল ওয়ার্মআপ করতে মাঠে নেমেই চারদিকে একবার ঘুরে হাত নাড়ে উপস্থিত দর্শকদের দিকে। এই যুবভারতীতে তো তাঁর অসংখ্য স্মৃতি। আবেগে ভাসলেও, পেশাদারি মানসিকতায় নিজেকে আটকে রেখেছেন। কিন্তু মন যে পাগলপাড়া।
এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চায় স্টিম্যাচ ব্রিগেড
মে মাসের শুরুতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ২০২৩-২৪ শেষ হওয়ার পর তিন সপ্তাহের প্রস্তুতি শিবিরে নিজেদের তরতাজা ও প্রস্তুত করে নিয়েছেন ভারতীয় দলের ২৭জন ফুটবলার। এ বার মাঠে নেমে কুয়েতকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস তৈরির সুযোগ তাঁদের সামনে। শুধু মাইলফলক প্রতিষ্ঠা করাটাই তাদের প্রেরণা নয়, দেশের ফুটবলের সেরা কিংবদন্তি এবং এই প্রজন্মের ফুটবলারদের আদর্শ সুনীল ছেত্রীর বিদায়ী ম্যাচকে স্মরণীয় করাও তাঁদের লক্ষ্য। ফলে একসঙ্গে দু’টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে আজ যুবভারতীতে নামছেন ইগর স্টিম্যাচের ছেলেরা। জয় আসবে তো?
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।