দুরন্ত লড়াই দিয়েও শেষরক্ষা হল না। ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে যাওয়া হল না ভারতীয় ফুটবল দলের। কাতারের বিপক্ষে তাঁদের ঘরের মাঠে জিততেই হত ভারতকে, সেই সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হত কুয়েত বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে। কিন্তু কাতারের বিপক্ষে এগিয়ে গিয়েও জিততে ব্যর্থ ইগর স্টিম্যাচের ছেলেরা। অবশ্য ভারতীয় দল খারাপ ফুটবল খেলেনি এদিন। বুক চিতিয়েই প্রবল শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়ে গেছিলেন ছাংতে, আনোয়ার আলি, রাহুল ভেকেরা। কিন্তু রেফারির ভুল সিদ্ধান্তই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। রেফারির ভুলে প্রথম গোলের দেখা পায় কাতার, সেই সঙ্গেই মনোবল ভেঙে যায় ভারতের। এরপর ২-১ গোলে ম্যাচ হেরে যায় ব্লু টাইগার্সরা।
আরও পড়ুন-খারাপ পারফরমেন্স,পোড়া কপাল! মিরাকেল ছাড়া টি২০ বিশ্বকাপে থাকা হচ্ছে না শ্রীলঙ্কার
কাতারের বিরুদ্ধে ৩৭ মিনিটেই ভারতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। ৩০ মিনিটে ওয়ান ইজ টু ওয়ান সিচুয়েশন থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন মনবীর সিং, কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেই আক্ষেপ মিটিয়ে দেন ছাংতে। ব্র্যান্ডন ফার্নান্দেজের গোলমুখী শট ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে গোলের সামনে আসতেই, শরীর ছুঁড়ে দিয়ে পা লাগিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন ছাংতে, এগিয়ে যায় ইগর স্টিম্যাচের ভারত। গোল পেয়ে আরও সঙ্ঘবদ্ধ দেখায় ভারতীয় দলকে, গোটা ম্যাচে বল পজিশনও ভারতের খুব খারাপ ছিল না, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জঘন্য রেফারিংয়ের খেসারত দিতে হল ভারতকে। সেই সঙ্গেই প্রথমবার ফিফা বিশ্বকাপের তৃতীয় পর্বে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল শুভাশিস, মনবীরদের।
আরও পড়ুন-কানাডার বিপক্ষে ধীর গতিতে রান, বাড়ানো গেল না নেট রান রেট,পাল্টা সাফাই বাবর আজমের
৭৩ মিনিটে মেহতাব সিংয়ের পাশ থেকে ইউসুফ আইমেনের হেডার যায় গুরপ্রিত সিং সান্ধুর কাছে। এরপর গোলরক্ষকের গায়ে বল লেগে বল লাইন পেরিয়ে যায়, অর্থাৎ কর্নার হয়। কিন্তু রেফারি সেই বল কর্নার দেয়নি। সেই সুযোগে লাইনের বাইরে থেকে বল ফের মাঠে টেনে আনেন কাতার ফুটবলাররা, এরপর সেই বলে পা ছুঁইয়ে গোল করে যান ইউসুফ আইমেন। শুরুর দিকে লজ্জায় নিজেরাও দ্বিধাগ্রস্থ ছিলেন কাতার ফুটবলাররা, কারণ তাঁরাও জানতেন এটি গোল নয়। কিন্তু রেফারি গোল হিসেবে তার বৈধতা দিতেই খেলায় ফেরে কাতার। অন্যয্যভাবে গোল দিয়ে কাতারকে ম্যাচে ফেরানোর জন্য ভারতীয় ফুটবলাররা বারবার রেফারি এবং লাইনসম্যানের কাছে আবেদন জানান, কিন্তু নিজেদের ভুল শুধরে নেননি তাঁরা। ঘরের মাঠে কাতারকেই সুযোগ করে দিলেন রেফারি। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে আহমেদ আল রাওয়ি গোল করে কাতারের পক্ষে ফল ২-১ করেন।
আরও পড়ুন-'ওদের হারানোর জন্য তৈরি আছি', পাকিস্তানকে হারানোর পর এবার ভারতকে হুঙ্কার জোনসের
ম্যাচ শেষে ক্ষোভ উগরে দিয়ে স্টিম্যাচ বলেন, ‘এরকমভাবে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়া অত্যন্ত লজ্জার। আমাদের দল ওদের মত অভিজ্ঞ নয়, সেটা ভুলে গেলে চলবে না। গোটা ম্যাচেই আমরা দাপটে ফুটবল খেলেছি, ছেলেরা ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে রেখেছিল। আমাদের দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি আমরা সব রকমের ফর্মেশনে খেলতে পারি, ৩-৪-৩, ৩-২-৩-২। কিন্তু ফিফার উচিত বিষয়গুলো দেখা। ওদের দায়িত্ব খেলাকে রক্ষা করা। আমি ফিফাকে দোষ দিচ্ছি না, কিন্তু এত ভালো খেলার পরে যদি এভাবে ছিটকে যেতে হয়, তাহলে সেটা অত্যন্ত যন্ত্রণার ’।
কাতারের বিপক্ষে প্রথম লেগের ম্যাচে ভারতের মাটিতে লজ্জার হারের মুখ দেখতে হয়েছিল সুনীল-সান্ধুদের। কিন্তু আওয়ে ম্যাচে স্টিম্যাচের ছেলেরা কলার তুলেই খেলেছেন। কিন্তু রেফারির সৌজন্যেই হারা ম্যাচ থেকে পয়েন্ট নিয়ে গেল কাতার। ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় কিভাবে এত বড় ভুল করেও ছাড় পেয়ে গেলেন রেফারি, কেন চতুর্থ রেফারিরা হস্তক্ষেপ করলেন না, প্রশ্ন উঠছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।