হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করে এমনিতেই চাপে পড়ে গিয়েছে এটিকে মোহনবাগান। তার উপর চোট সমস্যায় জেরবার সবুজ-মেরুন কোচ জুয়ান ফেরান্দো। তবে এই ম্যাচে খুব সতর্ক ভাবে এগোতে চান তিনি। গত ম্যাচের পরে প্রস্তুতির সময় পাননি সে রকম। তার ওপর দলের চোট-আঘাত দিন দিন বাড়ছে। এই অবস্থায় ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচটাকে কঠিন বলেই মনে হচ্ছে তাঁর।
ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে নামার আগে সাংবাদিকদের ফেরান্দো যা বললেন:
কার্ল ম্যাকহিউ এখন কেমন আছেন?
ডাক্তারদের সঙ্গে ওর ব্যাপারে কথা বলব। দুর্ঘটনার পর ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা না কাটলে শরীরের সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে আসে না। আমরা অপেক্ষা করছি। এটুকু জানি, ও এখন ভাল বোধ করছে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ওকে নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক আছি।
কবে তিনি মাঠে ফিরতে পারেন?
সেটা জানি না। এই পরিস্থিতিটা বলে বোঝানে কঠিন। প্রথমত, শারীরিক ভাবে ওর যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনই ঘটনাটাতে ও যে মানসিক ধাক্কা খেয়েছে, সেটা কাটতে কারও দু’দিন সময় লাগে, কারও সাত দিন লাগে। আসলে দুর্ঘটনার পরের পরিস্থিতি যতক্ষণ না স্বাভাবিক হচ্ছে, ততক্ষণ ফিরে আসা কঠিন। আমরা ওকে কাছে থেকে সেই কাজে সাহায্য করছি।
ওড়িশার বিরুদ্ধে পরের ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন?
ম্যাচটা কঠিন হবে। ওড়িশা শুরুটা ভাল করেছে। আক্রমণ ও রক্ষণ দু'টোই ওদের ভালো। আমাদের ৯০ মিনিটই তৈরি থাকতে হবে। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ওদের ফল মাথায় রাখতে হবে। ১-২ পিছিয়ে থাকার পরেও ওদের পরিকল্পনায় তেমন কোনও পরিবর্তন আনেনি। অথচ ওরা স্কোর পুরো পাল্টে দেয় (৪-১)। আমরা এখনও ৯০ মিনিট ফোকাস বজায় রাখতে পারছি না। একশো শতাংশ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এগুলো শোধরাতে হবে।
রক্ষণে বারবার ভুল হচ্ছে। এটা নিয়ে কী বলবেন?
না না, ধারণাটা ভুল। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল দলের প্রত্যেকেই দলকে সাহায্য করার জন্য তৈরি।
আপনার কি মনে হয় দীপকের জায়গায় লেনিকে রাখলে রক্ষণ ও আক্রমণের মধ্যে ভারসাম্য আরও ভালো হবে?
আমি খুশি যে বিভিন্ন জায়গায় আমার হাতে বিভিন্ন অপশন আছে। আমাদের দল যথেষ্ট ভাল। প্রত্যেকের ওপরই আস্থা আছে আমার। তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা। পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করছে লেনি না সাহিল কে বেশি তাতে মানানসই। তবে সবার তৈরি থাকাটাই দলের পক্ষে সবচেয়ে জরুরি বিষয়।
শুভাশিস কি ওড়িশার বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন? আর কোনও চোট-আঘাতের সমস্যা আছে?
চোট-আঘাতের জন্য ম্যাচের আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অভিলাষের চোট আছে, অমরিন্দরেরও সমস্যা আছে। টাঙরিরও সমস্যা আছে। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। কারণ, মেডিক্যাল স্টাফ কাজ করে চলেছে। আশা করি ম্যাচ শুরুর আগের মুহূর্তে আমাদের দল তৈরি হয়ে যাবে। তবে হুগো কার্ড সমস্যার জন্য ও কার্ল কাল একশো শতাংশ খেলতে পারবে না, এটুকু বলতে পারি।
রয় কৃষ্ণ ও ডেভিড উইলিয়ামস জুটিকে কি প্রথম এগারোয় একসঙ্গে দেখা যেতে পারে?
দেখা যাক কী হয়। আমরা একটা প্ল্যান তৈরি করেছি। এ বার সেই পরিকল্পনা অনুসারে যেটা সেরা এগারো জনের লাইন আপ হয়, সেটাই খেলবে।
হুগো বৌমাস কাল খেলতে পারছেন না। এই অভাবটা কী ভাবে পূরণ করবেন?
পরিকল্পনা বিভিন্ন ম্যাচে পাল্টায়। হুগো নেই বলেই এই ম্যাচের পরিকল্পনা কিছু বদলেছে। আমাদের ডিফেন্সের খেলোয়াড়রাও আক্রমণে উঠতে পারে। কিছু কিছু জায়গা ঠিক করতে হবে। আশা করি দলের ছেলেরা এই পরিকল্পনা ঠিক বুঝে নেবে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়। তবে তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে।
দল অনেক গোলের সুযোগ নষ্ট করছে। এর ফলে কি দলের ওপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে?
আমার তা মনে হয় না। বরং গোলের সুযোগ না তৈরি করতে পারলেই সমস্যা বাড়ে। আমরা কিন্তু সুযোগ পাচ্ছি। হয়তো কুড়িটা সুযোগ পেলে তার মধ্যে দু-তিনটে গোল পাচ্ছি। কিন্তু সুযোগ পাওয়াটাই তো ভাল।
গত ম্যাচে জিততে না পেরে আপনি কতটা হতাশ?
হতাশ ঠিকই। কিন্তু লিগ টেবলের ওপর দিকে থাকাটা বেশি জরুরি। ফেব্রুয়ারি, এক নম্বরে থাকাটা খুবই জরুরি হয়ে যাবে। এখন সমর্থকেরা সবাই চাইছেন, তাঁদের প্রিয় ক্লাব এটিকে মোহনবাগান এক নম্বরে থাকুক। তবে আমরা তো ভালই এগোচ্ছি।
চোট, সাসপেনশন, প্রস্তুতির জন্য মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময়— সব মিলিয়ে কালকের ম্যাচ কতটা কঠিন?
হ্যাঁ, খুবই কঠিন। সত্যি বলতে, ২৪ ঘণ্টায় একটা ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া মুশকিল। কারণ, আমি পরিকল্পনা করে ভাল ভাবে দলকে প্রস্তুত করতে পছন্দ করি। তবে আমাদের দলে খুব ভাল ভাল পেশাদার খেলোয়াড় রয়েছে। কোচিং স্টাফও খুব ভাল। ড্রেসিং রুমের পরিবেশও ভাল। তবে দলের ভাল ভাবে এগিয়ে যাওয়া এবং সমস্যার মোকাবিলা করাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।