লিগ টেবলের সেকেন্ড লাস্টবয় জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ গোলশূন্য ড্র করার পরেই ফের প্লেয়ারদের চোটকেই অজুহাত হিসেবে তুলে ধরলেন এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়দের চোটের কারণেই নাকি ব্যর্থতা, এমনটাই দাবি করেছেন ফেরান্দো। অসুস্থ অবস্থাতেও এ দিন তিনি মাঠে উপস্থিত ছিলেন দুঃসময়ে দলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। কিন্তু তাঁর উপস্থিতিতেও দল তিন পয়েন্ট পেল না।
পরের তিন ম্যাচে না জিততে পারলে সেরা ছয়ে থাকার দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে পড়বে এটিকে মোহনবাগান। এমন কী নক আউটের দৌড়ে থেকে ছিটকেও যেতে পারে তারা। এর মাঝেই সবুজ-মেরুন শিবিরে একটা নয়, দু-দু’টি দুঃসংবাদ- হুগো বৌমাসের হ্যামস্ট্রিং সমস্যা এবং কার্ল ম্যাকহিউয়ের কুঁচকির চোট। এই দুই নির্ভরযোগ্য তারকা কবে মাঠে ফিরবেন, সেটা কেউ জানে না।
ফেরান্দো এ দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হুগোর হ্যামস্ট্রিং সমস্যা রয়েছে। ওকে খেলানোর অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। ম্যাচের আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু ওর পক্ষে খেলা মোটেই সোজা ছিল না। কার্লেরও কুঁচকিতে চোট লেগেছে। এ সব ফুটবলের অঙ্গ। এগুলো আটকানো আমাদের হাতে নয়। আমরা খুবই হতাশ। দলের সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। মানসিক ভাবেও দলের অনেকে ভেঙে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: পজিটিভ স্ট্রাইকারের অভাব, দিশাহীন ফুটবল, সেকেন্ড লাস্টবয়দের কাছে মুখ পুড়ল বাগানের
এই ড্রয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সমাধানের উপায় বাতলে ফেরান্দো বলেন, ‘গায়েগো, দিমি, কিয়ান— আজ কেউই গোল করতে পারেনি। তাই জেতাও অসম্ভব ছিল। এর একটাই সমাধান, আমাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। আমাদের হাতে তিন দিন সময় আছে। কঠিন সময়ে পরিশ্রম করে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। আমি সব সময়ই সুযোগ তৈরির কথা বলি। আজ আমরা কম সুযোগ পাইনি। গায়েগো, ব্রেন্ডানরা যে সুযোগ হাতছাড়া করেছে, কিছু বলার নেই।’
দলের পারফরম্যান্সে অসন্তুষ্ট হলেও, জামশেদপুরের প্রশংসা করে বলেন, ‘জিততে হলে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে হয়। যা আমরা আজ ঠিকমতো পারিনি। আমাদের ওঠা-নামা ভাল হয়নি আজ। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধেও জামশেদপুর একই রকম খেলেছিল। সেকেন্ড বলে ওরা অনেক এগিয়ে ছিল। চেন্নায়িন, মুম্বই, গোয়ার বিরুদ্ধে ওরা মোটেই খারাপ খেলেনি। তবে কিছু খুঁটিনাটি ব্যাপারে পিছিয়ে থাকায় সাফল্য পায়নি ওরা। ভাগ্য ওদের সহায় হয়নি। এমনিতে ওরা যথেষ্ট ভাল ও লড়াকু দল। শেষ পাঁচ মিনিটে ওরা দুটো সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল। ওরা একই রকমের পরিকল্পনা নিয়ে খেলে। ওরা যে সিস্টেমে খেলে, সেই সিস্টেমে খেলার জন্য ওদের খেলোয়াড়রা তৈরি।’
আরও পড়ুন: সন্তোষ ট্রফিতে বড় চমক, টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল, ফাইনাল হবে সৌদি আরবে
এখন ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় কী? স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘কোনও দল যদি সব সময় জয়ের কথাই ভাবে, বেশির ভাগ সময় প্রেসিং ফুটবল খেলে, তা হলে তাদের রক্ষণে ফোকাস নষ্ট হতে পারে। ম্যাচ ৭৫-৮০ মিনিট হয়ে যাওয়ার পর খেলোয়াড়রা ক্রমশ ক্লান্ত হতে শুরু করে এবং ভুল করতে শুরু করে। তখন আক্রমণে উঠে নিজেদের জায়গায় ফিরে আসতে সময় লেগে যায়। প্রতিপক্ষ এই সুযোগ কাজে লাগায়। এটা একটা বড় ঝুঁকিও। তবে এই ভুলগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। প্রতি ম্যাচে আশা করি এ রকম হবে না। ঘরের মাঠে নিশ্চয়ই এ ভাবে আমরা ভুল শুধরে নিয়ে ভাল ফুটবল উপহার দেব।’
ফুটবলারদের জন্য মনোবিদের প্রয়োজন কি না, জানতে চাওয়ায় ফেরান্দো বলেন, ‘মনোবিদ না এনে ইতিবাচক ভাবনা ভাবা, আত্মবিশ্বাসী থাকা, যে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব, এগুলো অনেক ভালো উপায় মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকার। কিন্তু যদি উপলব্ধি ঠিকঠাক না থাকে, দলে এত চোট, অসুস্থতা থাকে, তার প্রভাব পারফরম্যান্সে পড়তেই পারে। আমার মনে হয় আরও অনুশীলনেই ছন্দে ফেরা যাবে। জুলাইতে আমরা প্রাক মরশুম অনুশীলন শুরু করেছি। ছেলেরা হয়তো সে জন্য কিছুটা ক্লান্ত। তবে এই সময়টা হল নিজেদের চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় দেওয়ার সময়। প্রমাণ করার সময় যে, আমরাও পারি। পরের ম্যাচে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কঠিন ম্যাচ হবে আমাদের। তিন পয়েন্টের জন্য ঝাঁপাতে হলে আমাদের অনেক ভাল খেলতে হবে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।