গত মরশুমে আইএসএলে ফের ব্যর্থ হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। তা নিয়ে সমালোচনা চলছে। তবে লাল-হলুদ ব্রিগেড কিন্তু ডুরান্ড কাপে রানার্স হয়েছে। সুপার কাপ জিতেছে। নতুন মরশুমে এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই তারা লড়াই শুরু করতে চায়। আর নতুন মরশুম শুরুর অনেক আগেই দলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত হুঙ্কার দিয়েছেন, গর্ব করার মতো দল গড়ছে তারা। ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
কুয়াদ্রাত বলেন, ‘সমর্থকদের চোখের দিকে তাকিয়ে আমি বুঝতে পেরেছিলাম একটা টুর্নামেন্টে (সুপার কাপ) চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওরা কত গর্বিত হয়েছে। ওরা বিশ্বাস করে, ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু হতে চলেছে। আমরা এশীয় স্তরের টুর্নামেন্টে খেলতে চলেছি। আমাদের হাতে ভালো দল রয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৭ ও ২১-এ আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি এবং রানার্স হয়েছি। বছর দুয়েকের প্রচেষ্টায় অবশ্যই ভালো কিছু হবে। যে ভাবে গত মরশুমে চেষ্টা করেছি আমরা, একই ভাবে যদি আগামী মরশুমেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি, তা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। আমরা এই মরশুমে গর্ব করার মতো দল গড়ছি।’
আরও পড়ুন: রেকর্ড আমার পিছনে ছোটে… সৌদি প্রো লিগে নতুন রেকর্ড গড়ে চাঞ্চল্যকর দাবি রোনাল্ডোর
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সমর্থকদের আশাবাদী হওয়া উচিত। একটা আকর্ষণীয় মরশুম রয়েছে আমাদের সামনে, যেখানে দেশের নামও উজ্জ্বল করার চ্যালেঞ্জ থাকবে আমাদের সামনে। আমরা আবার এশীয় মঞ্চে ফিরে আসছি এবং এমন একটা ভালো দল গড়তে চলেছি, যা নিয়ে সমর্থকেরা গর্বিত হতে পারেন। তাদের বলব আমাদের উপর আস্থা রাখুন। নতুন ইস্টবেঙ্গলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে। আমরা ঠিক দিকেই এগোচ্ছি।’
২০২৩-২৪ মরশুমে ১২ বছর পর কোনও জাতীয় স্তরের খেতাব (কলিঙ্গ সুপার কাপ) জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। যার ফলে আসন্ন এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলতে পারবে তারা। সেই প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাত বলেন, ‘আমরা মরশুমের তিনটি টুর্নামেন্টের মধ্যে দু'টির ফাইনালে উঠেছি। একটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। অর্থাৎ, ফল পেতে শুরু করেছি, যা আগের মরশুমগুলিতে পাইনি। ১২ বছর বাদে খেতাব জিতেছি আমরা। যে কোনও দলের কাছেই আমরা কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পেরেছি। শেষ বাঁশি বাজার মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করার ক্ষমতা আছে আমাদের দলের। সারা মরশুমে যত ম্যাচ খেলেছি আমরা, তার মধ্যে অর্ধেক জিতেছি (৩৩টি ম্যাচে ১৪টি জয়)। সবচেয়ে বড় কথা গোল খাওয়ার চেয়ে বেশি গোল করেছি আমরা। যা গত কয়েক বছরে হয়নি। আমরা একটা ভালো ও ধারাবাহিক দল গঠন করা শুরু করেছি, যারা যে কোনও দলকে হারাতে পারে।’
আরও পড়ুন: সুনীলের শেষ ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখতে ছক কষে ফেলেছেন স্টিম্যাচ
গত মরশুমের আগে বিপন্ন ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল সেটি। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়াই তাঁর কোচিং জীবনের সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন কুয়াদ্রাত। তিনি বলেছেন, ‘বার্সেলোনায় থাকতে চাপ সামলাতে শিখেছি আমি। বরং চাপের মুখে আরও মোটিভেশন পাই আর চাপই চরম সঙ্কটে আমার কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনতে পারে। তাই ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নেওয়াটা আমার কাছে খুবই উচিত সিদ্ধান্ত ছিল। আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত ছিল ওটা।’
আরও পড়ুন: শেষ পর্যন্ত জাভিকে বরখাস্তই করল বার্সেলোনা, জাভির পরিবর্ত সম্ভবত হ্যান্সি ফ্লিক
দলের কয়েক জন সেরা খেলোয়াড়কে সঙ্গে নিয়েই যে আগামী মরশুম শুরু করবেন, এমনই আশা কার্লেস কুয়াদ্রাতের। তিনি বলেছেন, ‘দলের উপর খেলোয়াড়দের আস্থা বজায় থাকাটা খুবই জরুরি। ফুটবলারদের অনেকেই আমাদের ক্লাবে খেলে খুশি। তারা আমাদের পরিকল্পনা, আমাদের প্রয়োজন, সেট-পিস প্ল্যান, ট্রেনিং পদ্ধতি সবই জানে। সে জন্যই দলের দায়িত্ব পেয়ে এমন কয়েক জন খেলোয়াড়কে দলে এনেছিলাম, যারা আমাকে সেই বেঙ্গালুরু এফসি-র সময় থেকে চেনে। ওদের নিয়েই কাজ শুরু করে আমরা মরশুমের শুরুতে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠি। এখন আমার হাতে যখন একটা কোর টিম আছে, তখন নতুন মরশুমের শুরু থেকেই আমরা একটা সুবিধা পাব এবং সেই সুবিধা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’
আইএসএল ১০-এর প্লে অফে পৌঁছতে না পারা কারণ ব্যাখ্যা করে ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ বলেছেন, ‘ওটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কেরালা ব্লাস্টার্স ও বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারানোর পরে দলের ছেলেরা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সাত দিনে তিনটি ম্যাচ খেলতে হয় আমাদের। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ওদের সব কিছু উজাড় করে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু ওরা ৭০ মিনিটের বেশি তা দিতে পারেনি। অজুহাত দিতে চাই না। তবে আসল সময়ে যদি দলের মধ্যে চোট-আঘাত ও কার্ড সমস্যা থাকে, তা হলে আর কী-ই বা করার থাকতে পারে? আশা করি ভারতীয় ফুটবলের ক্যালেন্ডার আরও উন্নত হবে। মরশুমের ৩৩টি ম্যাচের মধ্যে ১৭টিই আমরা খেলেছি তিন মাসের মধ্যে। এটা যুক্তিপূর্ণ নয়। আমাদের এর মাশুল গুনতে হয়েছে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।