এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টুয়ের ম্যাচে রাভশান কুলোবের সঙ্গে গোলশুন্য ড্র করেছে মোহনবাগান। সল্টলেক স্টেডিয়ামে জিততে পারেনি সবুজ মেরুন শিবির। ফলে এই গ্রুপে এই মূহূর্তে মোহনবাগানের স্থান তিন নম্বরে। ইরানের ট্র্যাক্টর এফসি, কাতারের ক্লাব আল ওয়াকরা এফসিও রয়েছে এই গ্রুপে। ফলে তাজিকিস্তানের দলের বিরুদ্ধে জয় প্রয়োজনীয় ছিল মোহনবাগানের কাছে, কিন্তু সেটা তুলে আনতে পারেননি দিমিত্রি পেত্রাতোস, জ্যাসন কামিন্সরা।
চলতি মরসুমের শুরুতে তারকাখচিত দল গড়েছিল মোহনবাগান টিম ম্যানেজমেন্ট। জনি কাউকোকে ছেড়ে এনেছিল গ্রেগ স্টুয়ার্টকে। আইএসএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা তারকা হিসেবে আনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপার জেমি ম্যাকলারেনকেও, লক্ষ্য ছিল এসিএল ২। কিন্তু কাজের কাজটি প্রথম ম্যাচে করতে পারেননি বাগান কোচ হোসে মোলিনা।
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের কোচের হাতে এই মূহূর্তে যে পরিমাণ আর যে মানের ফুটবলাররা রয়েছে, তা দিয়ে যদি বিচার করা যায় সেই তুলনায় মোলিনার পারফরমেন্সই প্রশ্নের মুখে পড়বে, যদিও তিনি এসিএলের ম্যাচে রাভশানের সঙ্গে ড্রয়ের পরেও খুশি ছেলেদের খেলায়। তবে সমর্থকরা যে মোটেই তাঁর রক্ষণাত্মক মানসিকতায় খুশি নন, সেকথা বলাই বাহুল্য।
ম্যাচের ৭৭ মিনিট পর্যন্ত রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রেখে দেওয়া হয় দলের মাঝমাঠের মুল চালিকাশক্তি গ্রেগ স্টুয়ার্টকে। মাত্র তিন বিদেশিকে রেখে দল মাঠে নামান মোলিনা। যেখানে মোহনবাগানের মাঝামাঠে তেমন কোনও ফুটবলার নেই যে খেলা তৈরি করতে পারে, সেখানে একাধিক ডিফেন্সিভ ব্লকার খেলিয়ে গত কয়েক বছরে মোহনবাগানের খেলায় যে আগ্রাসী মেজাজ ছিল,সেটাই যেন নষ্ট করে দিচ্ছেন মোলিনা। ডুরান্ড ফাইনালেও এগিয়ে গিয়ে ম্যাচ হেরেছিলেন, আইএসএলের প্রথম ম্যাচেও এগিয়ে গিয়ে ড্র করেছিলেন।
আরও পড়ুন-কুঁকড়ে ছিলেন ব্যাটাররা! অশ্বিন-জাদেজা এসেই শুরু পাল্টা মার! পেটালেন শাকিবকে…
এসিএলের ম্যাচ ড্রয়ের পর মোহনবাগান কোচ বলছেন, ‘আমি দলের খেলায় খুশি, কারণ যাদের বিরুদ্ধে আমরা ড্র করেছি তাঁরাও যথেষ্ট শক্তিশালী দল। আমাদের কাছে অনেকগুলো সুযোগ এসেছিল গোল করার, সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি বটে। তবে দলের সামগ্রিক খেলায় আমি সন্তুষ্ট। আরমা সেরা দলই নামিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম হাতে অস্ত্র রেখে দেব। যাতে ওরা ক্লান্ত হয়ে গেলে দ্বিতীয়ার্ধে কাজে লাগাবো, কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। তবে দিমি, মনবীররাও ভালোই খেলেছে। তবে ওদের কিছু খামতি রয়েছে। শারীরিকভাবে দিমি, কামিনসদের আরও শক্তিশালী হতে হবে। কারণ ওদের দিকেই আমরা গোলের জন্য তাকিয়ে থাকি, সেটা ওরা করতে পারেনি ’।
সমর্থকদের গো ব্য়াক স্লোগান শুনতে হলেও মোলিনা বলছেন, ‘ফুটবলে এটা স্বাভাবিক বিষয়, সমর্থকদের মনে হলে তাঁঁরা এমন বলতেই পারে। তবে আমি ক্লাবকে ট্রফি জেতাতেই এসেছি, যতক্ষণ না সেটা হচ্ছে আমার কাজ চলবে। তবে আমি সমর্থকদের ওপর মোটেই অসন্তুষ্ট নই, ওদের জন্য কিছু করে দেখাতে চাই’।
ম্যাচের পর মোহনবাগানের তারকা বিদেশি দিমিত্রি পেত্রাসোতস সরাসরি রেফারির দিকে আঙুল না তুললেও তিনি প্রশ্ন তুলে দিলেন রেফারিংয়ের মান নিয়ে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বললেন, ‘আমার পা থেকে রক্ত ঝড়ল, আমি সেটা দেখালাম কিন্তু কোনও লাভ হল না। রেফারিং নিয়ে আমি কিছু বলব না,মাঠে কি হয়েছে সেটা সবাই দেখতে পেয়েছে। এই ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা এগোতে চাই ’।
ফুটবলে বলে অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স। যেখানে এত ভালো আক্রমণভাগের ফুটবলার থাকার পরেও তাঁদের বসিয়ে রেখে অনিরুদ্ধ থাপা, দীপক টাংরি, বা আপুইয়া-অভিষেক সুর্যবংশীদের নিয়ে রক্ষণ আঁটোসাটো করার ছক নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। দলের দরকারে যদি ম্যাকলারেনকে নামানো নাই হবে, তাহলে রিজার্ভ বেঞ্চ আলো করে তাঁকে বসিয়ে রাখারই বা মানে কি, প্রশ্ন কিন্তু উঠছে মোলিনার স্ট্র্যাটেজি নিয়েই।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।