‘ওম শান্তি ওম’ সিনেমায় শাহরুখ খানের এক বিখ্যাত সংলাপ ছিল, যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় – ‘আমি এতটাই মন থেকে তোমাকে চেয়েছি, যে বিশ্বের সবকিছুই যেন এই মিলনের জন্য ষড়যন্ত্র করেছে’। গতকাল লিওনেল মেসির বিশ্বকাপ জয়ের পর বলিউড পাগল ফুটবলপ্রেমীর মনে এই সংলাপটি ঘুরঘুর করতেই পারে। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে গিয়েও জেতা হয়। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালেও বারবার এগিয়ে গিয়েও কিলিয়ান এমবাপের অদম্য প্রচেষ্টার কাছে আটকে যাচ্ছিলেন। তবে এই বিশ্বকাপটা যেন তাঁরই ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটাই হল। নির্ধারিত সময়, অতিরিক্ত সময়ের পর শুটআউটে জিতে ‘বিশ্বকাপজয়ী’র তকমা পেলেন মেসি। আর এরপরই বাঁধ ভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন মেসি। ড্রেসিংরুমে গিয়ে তো টেবিলে উঠে পড়ে কাপ হাতে নাচতে থাকেন তিনি। সেই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল।
ফাইনালে দু’টি গোল করা মেসি এই বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল (শ্রেষ্ঠ ফুটবলার) পেয়েছেন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এই ট্রফি উঠল তাঁর হাতে। এর আগে কোনও ফুটবলারই এই ট্রফি দু’বার জিততে পারেননি। ৩৫ বছর বয়সেও বিশ্বকাপে দলের হয়ে প্রতিটি সেকেন্ড খেলেন মেসি। তবে বিশ্বকাপ জয় তাঁর সব ক্লান্তি দূর করে দেয়। হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বকাপ ওঠার আগেই সেটিকে চুম্বন করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে পেয়েও বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস দেখা যায় মেসির মধ্যে। এরপর ড্রেসিংরুমে গিয়ে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে নাচতে দেখা গিয়েছে মেসিকে।
বিশ্বকাপ জয়ের পর সতীর্থদের সঙ্গে মেসির উল্লাসে যেন গতরাতে গা ভাসিয়েছিল গোটা বিশ্ব। সেই মেসির উদ্দাম নাচের ভিডিয়ো তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। মেসির সতীর্থ নিকোলাস ওটামেন্ডির পোস্ট করা ভিডিয়োতে দেখা যায়, এলএম ১০ বুট পরেই ড্রেসিংরুমের টেবিলে উঠে দাঁড়ান কাপ হাতে। সেখানেই লাফাতে থাকেন তিনি। মেসির এই উল্লাস যেন যথার্থ। ২০১৪ সালের ফাইনালে শেষ মুহূর্তে মারিও গোটজের গোলে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল মেসির। ২০২২ সালেও এমবাপের শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে আটকে গিয়েছিল তাঁর দল। এরপর শেষ মুহূর্তে ফ্রান্স ম্যাচ জেতারও সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল। ওয়ান-অন-ওয়ানে অবিশ্বস্য এক গোল বাঁচান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তখনই হয়ত মেসিভক্তরা ভরসা পান। ফুটবল ঈশ্বরেরও হয়ত মেসির হাতেই কাপ তুলে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। সেটাই হল শুটআউট শেষে। এরপরই এত বছরের চাপ, অপেক্ষা, দুঃখ... সব উপে গেল কর্পূরের মতো। নেচে উঠলেন মেসি। তাঁর সঙ্গে আনন্দে গা ভাসালেন কয়েক কোটি ফুটবলপ্রেমী।