শনিবার ইউরোপিয়ান ফুটবলের এক ব্যস্ত দিনে বড় ক্লাবগুলির মধ্যে প্রিমিয়র লিগে লিভারপুল এবং চেলসি গুরুত্বপূর্ণ জয় পেল। লা লিগার লিগ লিডার রিয়াল মাদ্রিদ পিছিয়ে পড়েও রিয়াল সোসিয়াদাদকে পরাস্ত করল। তবে লিগ ওয়ান লিডার পিএসজি হেরে গেল নিসের বিরুদ্ধে।
চেলসির ৪-০ ব্যবধানে জয়
টার্ফ মুরে বার্নলের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে বেশ চাপেই ছিল টমাস টুচেলের দল। অবনমনের আওতায় থাকা বার্নলে প্রথমার্ধে বেশি ভাল সুযোগ তৈরি করে। এমনকী থিয়াগো সিলভা গোল লাইনে দুর্ধর্ষ ক্লিয়ারেন্স না করলে ওয়েট ওয়েগর্স্টের গোলে বার্নলে লিডও নিয়ে নিতে পারত। তবে দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করে চেলসি। এক, দুই নয়, চার চারটি গোল করে ব্লুজরা। ৪৭ মিনিটে রিস জেমস চেলসিকে প্রথমে লিড এনে দেন। তার আট মিনিটের মধ্যেই কাই হ্যাভাটর্স দুই গোল করে চেলসির জয় সুনিশ্চিত করেন। ৬৯ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিক ম্যাচের শেষ গোলটি করে চেলসিকে ৪-০ জয় এনে দেন।

ওয়েস্ট হ্যামের কড়া চ্যালেঞ্জ উতরাল লিভারপুল
লিগ লিডার ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সঙ্গে জমজমাট খেতাবি দৌড়ে সামিল লিভারপুলকে কিন্তু ঘরের মাঠে ওয়েস্ট হ্যামের বিরুদ্ধে জিততে বেশ ঘাম ঝড়াতে হল। ম্যাচের ২৭ মিনিটে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডের পাস থেকে সাদিও মানে গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেও মহম্মদ সালাহ এদিন একদমই ফ্যাকাশে ছিলেন। বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করেন সালাহ। দ্বিতীয়ার্ধে ওয়েস্ট হ্যাম তেড়েফুড়ে লিভারপুলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায়। ট্রেন্ট পাবলো ফোর্নাল্সের শট গোলের মুখ থেকে ক্লিয়ার করেন। তবে ম্যাচে ওয়েস্ট হ্যামের তরফে ৭১ মিনিটে সবথেকে বড় সুযোগ পান ম্যানুয়েল ল্যানজিনি।

তিনি গোটা লিভারপুল রক্ষণকে পরাস্ত করে একেবারে গোলের সামনে পায়ে বল পেয়ে গেলেও অভূতপূর্বভাবে গোলের অনেক ওপর দিয়ে তাঁর শট বেরিয়ে যায়। হ্যামার্সরা চেষ্টা চরিত্র করলেও গোল করতে পারেনি। ১-০ ব্যবধানে জিতে সিটির ওপর চাপ বজায় রাখল লিভারপুল। সিটির থেকে মাত্র তিন পয়েন্ট কম, ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় দুইয়ে রয়েছে তারা। এক ম্য়াচ কম খেলে ৫৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে চেলসি।
শীর্ষে দখল মজবুত করল রিয়াল
রিয়াল সোসিয়াদাদের বিরুদ্ধে ৪-১ ব্যবধানে দুরন্ত জয় পেয়ে লা লিগা শীর্ষে আট পয়েন্টে এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। অবশ্য শুরুটা কিন্তু একেবারেই ভাল করেনি রিয়াল। ডেভিড সিলভার জাদুতে নাজেহাল ড্যানি কার্ভাহাল তাঁকে ফাউল করে বসলে পেনাল্টি থেকে ১০ মিনিটেই সোসিয়াদাদকে এগিয়ে দেন মিকেল ওয়ার্জাবাল। তবে আহত টনি ক্রুসের জায়গায় এদিন মাঠে নামা এডুয়ার্ডো ক্যামাভিঙ্গার দূরপাল্লার এক শট, ৪০ মিনিটে রিয়ালকে ম্যাচে ফেরায়। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই লুকা মদ্রিচের ওয়ান্ডার গোলে এগিয়ে যায় লস ব্ল্যাঙ্কোস। দ্বিতীয়ার্ধে করিম বেঞ্জেমার পেনাল্টি এবং তার তিন মিনিট পরে ৭৯ মিনিটের মাথায় মার্কো অ্যাসেনসিওর ট্যাপ ইন, রিয়ালের ৪-১ জয় নিশ্চিত করে।
শেষ মুহূর্তের গোলে হার পিএসজির
রিয়াল মাদ্রিদ জিতলেও, মাঝ সপ্তাহে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্রতিপক্ষ প্যারিস সাঁ-জাঁ কিন্তু নিসের বিরুদ্ধে ০-১ গোলে হেরে বসল। পিএসজির হয়ে এ মরশুমের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার কিলিয়াম এমবাপে নির্বাসনের জেরে এই ম্যাচে না খেললও লিওনেল মেসি এবং নেইমার ম্যাচে উপস্থিত ছিলেন। তবে দুইজনেই এই দিনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। নিসের জমাট রক্ষণের বিরুদ্ধে অ্যাঞ্জেল ডি'মারিয়া কতগুলি কঠিন সুযোগ পেলেও, তা থেকে গোল হয়নি।

ম্যাচের একেবারে শেষে, ৮৮ মিনিটের মাথায় নেইমার নিসের অর্ধে বল হারালে ক্যালভিন স্টেঙ্গসের সুবাদে প্রতিআক্রমণে উঠে আসে নিস। তাঁর ক্রস থেকে দ্বিতীয় পোস্টে হাফ ভলিতে দুরন্ত শট নিয়ে নিসের হয়ে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন অ্যান্ডি ডেলোর্ট। এই জয়ের ফলে নিস লিগ ওয়ান তালিকায় দুইয়ে উঠে আসল। পিএসজি হারলেও নিসের থেকে ১৩ পয়েন্ট বেশি, ৬২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শীর্ষে বেশ ভাল জায়গাতেই রয়েছে।