ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে কেরলের যুবক-যুবতীদের উত্তেজনায় অসন্তোষ প্রকাশ করল মুসলিম সংগঠন। ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, যেভাবে মাত্রাতিরিক্তভাবে ফুটবল তারকাদের 'পুজো' করা হচ্ছে, তা ইসলাম-বিরোধী। সেইসঙ্গে অতীতের ঔপনিবেশিক শক্তি পর্তুগালের পতাকা ওড়াতেও নিষেধ করেছে ওই মুসলিম সংগঠন।
সমস্ত কেরল জামাইতুল্লা উলামার ছাতার তলায় থাকা কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসের ফৈজি কুডাথায়ি আক্ষেপ, আর্জেন্তিনার লিওনেল মেসি, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, ব্রাজিলের নেইমারের মতো তারকাদের যে বড়-বড় কাট-আউট লাগানো হয়েছে, তার জেরে অকারণে কেরলের যুবক-যুবতীর টাকা-পয়সা খরচ হচ্ছে। তাঁর মতে, কাতারে যে ফুটবল বিশ্বকাপ চলছে, তার জেরে কেরলের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেন কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
এবার বিশ্বকাপের আগে থেকেই সেজে উঠেছে কেরল। রাস্তার মোড়ে-মোড়ে নিজেদের প্রিয় তারকাদের কাট-আউট, পোস্টার লাগিয়েছেন কেরলের মানুষ। যা ফিফারও প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে তাতে আপত্তি আছে কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের। তাঁর মতে, 'আমাদের দেশকে ভালোবাসার পরিবর্তে ফুটবল তারকাদের পুজো করতে মেতে আছেন সমর্থকরা। ইসলামে ব্যক্তি পুজোর ক্ষেত্রে একটা সীমা আছে।' সেইসঙ্গে তাঁর দাবি, কাট-আউট লাগানোর ফলে গরিব মানুষের টাকা খরচ হচ্ছে।
সেইসঙ্গে কেরলের রাস্তার মোড়ে-মোড়ে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগালের মতো দেশের যে পতাকা লাগানো হয়েছে, তাতেও আপত্তি জানিয়েছেন কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তাঁর মতে, নিজেদের জাতীয় পতাকার (তেরঙা) পরিবর্তে অন্য দেশের পতাকা ওড়ানো ভারতীয় নাগরিকদের পক্ষে ঠিক নয়। তিনি বলেন, 'পর্তুগালের পতাকা ওড়ানো ঠিক নয়। কারণ (অতীতে) অনেক দেশে ঔপনিবেশিক শাসন ছিল পর্তুগালের।'
তবে ওই মুসলিম সংগঠনের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে ফুটবলের বিরোধিতা করা হচ্ছে না। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার ভিত্তিতে ফুটবল দেখা উচিত। কিন্তু মানুষ ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। যা মোটেও ভালো দিক নয় বলে দাবি করেছেন কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বক্তব্য, শুধুমাত্র শারীরিক চর্চার অঙ্গ হিসেবে ফুটবলের প্রচার করা উচিত। কিন্তু এখন যা চলছে, তাতে পড়ুয়াদের মনঃসংযোগ ব্যাহত হচ্ছে। পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেন কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদক।