৩৩ বছরের অপেক্ষার অবসান হল। নাপোলি শেষ বার সিরি-এ জিতেছিল ১৯৯০ সালে। সেই সময়ে দিয়েগো মারাদোনা ছিলেন সেই দলের প্রধান ফুটবলার। তার পর থেকেই চলছিল খরা। অবশেষে সেই খরা কাটিয়ে ৩৩ বছর পরে ইতালির লিগ ঘরে তুলল নাপোলি।
মারাদোনা প্রয়াত। তবে তিনি নাপোলির সঙ্গে প্রতিটা মুহূর্ত ছিলেন। আবেগে উচ্ছ্বাসে, উন্মাদনায় প্রতিটি পরদে তিনি নাপোলির প্রতিটি সদস্য এবং ভক্তদের সঙ্গেই অদৃশ্য ছায়ার মতো ছিলেন। তিনি নেই, তবে তাঁর ছবি, কাটআউট নিয়েই উৎসবে মেতেছিল দলের সমর্থকেরা।
দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা স্টেডিয়ামে আগের ম্যাচেই শিরোপা জয়ের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন সমর্থকরা। তিন দশকেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান হবে বলে নাপোলির সমর্থকেরা আয়োজনেরও কমতি রাখেনি। তবে সেই ম্যাচে সালেরনিতানার বিপক্ষে ড্র করেছিল দল। আর সমর্থকদের ফিরতে হয়েছিল ব্যর্থ মনোরথে।
তবে বৃস্পতিবার (৪ মে) রাতে সেই উৎসবই হল। উডিনেসের বিপক্ষে ম্যাচে ১-১ ড্র করে একটি পয়েন্ট আদায় করে নেয় নাপোলি। এতে পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে ক্লাবটি। ৩৩ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট এখন ৮০। নাপোলির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাজিওর পয়েন্ট ৩৩ ম্যাচে ৬৪। স্বভাবতই বৃহস্পতিবারই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উৎসবে মাতে নাপোলি।
আরও পড়ুন: লোবেরা ডজ দিয়েছেন, পালটা সুনীলদের ISL জেতানো কোচের সঙ্গে চুক্তি ইস্টবেঙ্গলের
৩৩ বছর আগে নাপোলির খেতাব জয়ের প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন মারাদোনা। তবে এ বার নাপোলির খেতাব জয়ের নায়ক কোনও বিশ্ববন্দিত তারকা নন, বরং এক মরশুম আগে তাঁকে কেউ তেমন ভাবে চিনতেনও না। তিনি জর্জিয়ার তারকা উইঙ্গার খিভিচা ক্যাভার্টস্খেলিয়া বা নেপলসের লোকেদের প্রিয় 'ক্যাভারাডোনা'। সেই সঙ্গে চলতি মরশুমে দলের প্রাণভোমরা হয়ে উঠা ভিক্টর ওসিমহেনও রয়েছেন।
তবে এ দিনের ম্যাচ ড্র করতেই বেশ কসরত করতে হয় নাপোলিকে। শুরুতেই ধাক্কা খায় তারা। ম্যাচের ১৩ মিনিটের মাথায় গোল হজম করে বসে তারা। স্যান্ডি লভরিচের গোলে এগিয়ে যায় উডিনেস। তবে এই ম্যাচের জন্য উডিনেসের মাঠে উপস্থিত হওয়া ১০ হাজারের মতো নাপোলি সমর্থক কিংবা মারাদোনা স্টেডিয়ামে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখতে জমায়েত হওয়া ৫০ হাজারেরও বেশি সমর্থককে শেষ পর্যন্ত হতাশ করেনি ওসিমহেনরা।
আরও পড়ুন: কোচ ঠিক হতেই, ওড়িশা আর চেন্নাইয়িন এফসি-র দুই তারকাকে সই করিয়ে চমক ইস্টবেঙ্গলের
দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে ওসিমহেনই এনে দেন কাঙ্ক্ষিত গোল। উডিনেসের গোলরক্ষক মার্কো সিলভেস্ত্রি কর্নার ফেরালেও বল গিয়ে পড়ে ওসিমহেনের পায়ে। জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। এই গোলের হাত ধরেই সিরি-এ-তে চলতি মরশুমে গোল স্কোরারের তালিকায় শীর্ষে থাকা নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ডের গোল সংখ্যা এখন ২২। ওসিমহেনের গোলে সমতায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই সমর্থকেরা আনন্দে মেতে ওঠে।
৭১ মিনিটে নাপোলি এগিয়ে যাওয়ারও সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু গোলের মুখ খোলেনি। শেষ পর্যন্ত সমতা ধরে রেখে সমর্থকদের শিরোপা উদযাপনের স্বাদ মেটায় নাপোলির ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই সমর্থকরা মাঠে নেমে এসে কোচ-খেলোয়াড়দের সঙ্গে মেতে ওঠে বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে।
এ দিন ম্যাচের আগে থেকেই ইতালির বন্দর শহরে উৎসবের আমেজ ছিল। প্রচুর লোক নিজের প্রিয় ক্লাবের খেতাব জয়ের সাক্ষী থাকতে ক্লাবে মাঠ, মারাদোনা স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। জায়ান্টস্ক্রিনে তাঁরা এই ম্যাচের সাক্ষী থাকেন। ওসিমহেনের গোলে নাপোলি সমতায় ফিরতে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসেন হাজার হাজার সমর্থক। ক্লাবের ঐতিহাসিক খেতাব জয়ে গোটা শহরই আনন্দে ভাসে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।