আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বিরল প্রতিবাদ দেখল রবিবারের শহর কলকাতা। রবিবার ছিল বাঙালির প্রিয় বড় ম্যাচ। রবিবাসরিয় মরশুমের প্রথম বড় ম্যাচের জন্য কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে সমর্থকরা তৈরি হলেও তাল কাটে দিন দশেক আগে। অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা, আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুমে ঢুকে এক কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। অবিশ্বাস্য এই ঘটনার পরই প্রশ্ন উঠে যায় রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে। কারণ হাসপাতালে পুলিশ, চিকিৎসদের নাকের দগায় এই কাজ এক সিভিক পুলিশ কর্মি করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এরপরই জুনিয়র চিকিৎসকরা এবং মৃতার পরিবার দাবি করেছিল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গত বুধবার স্বাধীনতা দিবসের রাতে মহিলাদের শহর দখলের দিন আরজি কর হাসপাতালে ফের একবার তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতিরা। ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয় জরুরি বিভাগ ও ইএনটি রুম, এরপরই প্রশ্ন ওঠে ফের পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে। সেদিনের পরিস্থিতি দেখে রবিবারের ডার্বি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নিরাপত্তাজনিত কারণে। রবিবার পাল্টা দুই প্রধানের সমর্থকরাই মিলিত হয়ে আরজি করের মৃত চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানান সল্টলেক স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়।
আরও পড়ুন-১৯ জানুয়ারি অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা T20 বিশ্বকাপে অভিযান শুরু ভারতের!প্রতিপক্ষ উইন্ডিজ
আগেই সল্টলেক স্টেডিয়ামের বাইরে বেআইনি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবু সমর্থকদের প্রতি এবং সমাজের মহিলাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সেই প্রতিবাদে এসে উপস্থিত হন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক শুভাশিস বোস। ইস্টবেঙ্গল হোক বা নিজের দলের মোহনবাগান, মহিলা সমর্থকরা যে তাঁরও বোনের মতো, সেটা বোঝাতেই প্রতিবাদে সামিল হন তিনি। যদিও সমর্থক ফুটবলাররা এক হয়ে প্রতিবাদ জানালেও দুই প্রধানের কোনও কর্তাকেই মৃত চিকিৎসকের জন্য প্রতিবাদ জানাতে বা ন্যয় বিচার চাইতে এদিন দেখা গেল না সল্টলেক স্টেডিয়ামের বাইরে।
আরও পড়ুন-১৯ জানুয়ারি অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলা T20 বিশ্বকাপে অভিযান শুরু ভারতের!প্রতিপক্ষ উইন্ডিজ
উল্লেখ্য এই বিষয় যে তিন প্রধানের কর্তারাই কিছুটা সাবধানী অবস্থান নিলেন তা বলাই বাহুল্য। কারণ সাম্প্রতিককালে বারবার যখন ইস্টবেঙ্গল স্পন্সর নিয়ে সমস্যায় পড়েছে তখন তাঁদের ত্রাতা রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোহনবাগানের আইএসএল খেলার ব্যাপারেও নিয়েছিলেন পদক্ষেপ। মহমেডান ক্লাবকেও করেছেন সাহায্য। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ করতে গেলে রাজনৈতিক রং গায়ে লেগে যেতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই প্রতিবাদ এড়িয়ে গেলেন তিন প্রধানের কর্তারা, মত ওয়াকিবহল মহলের। যদিও কর্তাদের কেউই প্রতিবাদ বিরোধী কোনও মন্তব্য করেননি। অর্থাৎ সাধারণ সমর্থকদের ন্যয্য অরাজনৈতিক প্রতিবাদের যে তাঁরা বিরোধী, তেমনটাও নয়।
রবিবারের প্রতিবাদে ছিল না কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা, বরং পুরোটাই ঢাকা ছিল লালহলুদ এবং সবুজ মেরুন রংয়ে। ছিল সাদা কালো পতাকাও। এদিনের প্রতিবাদ থেকেই তিন প্রধানের সমর্থকরা যেন বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করলেন, যতই দশকের পর দশক ধরে তাঁদের ক্লাবে বামফ্রন্টের নেতা মন্ত্রী বা তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা আশা যাওয়া করুক না কেন, ক্লাবের সমর্থকরা কিন্তু নিজেদের ফুটবল দলেই একমাত্র বিশ্বাসী, কোনও রাজনৈতিক দলে নয়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।