ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর গোলের খরা কাটল না। তবে তিনি গড়লেন অন্য রেকর্ড। আর পর্তুগালও শনিবার তুরস্ককে ৩-০ উড়িয়ে দিয়ে ইউরো কাপের শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল। গোল করলেন বের্নার্দো সিলভা, সামেত আকায়দিন (আত্মঘাতী) এবং ব্রুনো ফার্নান্দেস।
রোনাল্ডো গোল না পেলেও, তাঁকে ছন্দে দেখা গিয়েছে। দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি সিআরসেভেন নিজেই করতে পারতেন। সামনে একা তুরস্কের গোলকিপারকে পেয়েও, তিনি পাস বাড়ান ব্রুনোকে। ফাঁকায় ৩-০ করে ব্রুনো। যাইহোক এদিনের ম্যাচ পর্তুগালের পারফরম্যান্স দেখে স্বস্তি ফিরবে ভক্তদের।
আরও পড়ুন: গোলের মুখই খুলতে পারল না এমবাপেহীন ফ্রান্স, ডাচেদের গোল বাতিল নিয়ে বিতর্ক,ম্যাচের ফল গোলশূন্য ড্র
স্কোরশিটে হয়তো নাম তুলতে পারেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তবে অন্য একটি রেকর্ড করে ফেলেছেন। ইউরো কাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট করার রেকর্ড করে ফেলেছেন সিআরসেভেন। মোট ৭টি গোলের পাস বাড়ান তিনি। যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসের ১৯৬৮ সাল থেকে রেকর্ড।
আগের ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে নড়বড় করতে করতে জিতেছিল পর্তুগাল। কিন্তু এদিন আনায়াসেই হারাল তুরস্ককে। এদিকে তুরস্ক আবার আগের ম্যাচে জর্জিয়াকে হারিয়ে দিয়েছিল। যে কারণে এদিন অনেক বেশি সতর্ক ছিল পর্তুগাল। ভালো মতো হোমওয়ার্ক সেরেই নেমেছিলেন রোনাল্ডোরা। যার ফলও তারা পায়। শনিবার ডর্টমুন্ডে কার্যত এক তরফা ভাবে খেলেই, পোলিশরা জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল।
আরও পড়ুন: ১-৩ লজ্জার হার, আশা কার্যত শেষ পোল্যান্ডের, শেষ ষোলোর আশা বাঁচিয়ে রাখল অস্ট্রিয়া
পর্তুগাল প্রথমার্ধেই দু'টি গোল করে ফেলে। তার মধ্যে একটি আত্মঘাতী। তবে ম্যাচের ছ'মিনিটেই তুরস্কের কাছে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি কেরেম আকতুরকোগ্লু। দু'গজ দূর থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। পরের মিনিটেই রোনাল্ডোর হেড বারের উপর দিয়ে বের হয়ে যায়। পর্তুগাল এর পর থেরে ক্রমাগত আক্রমণে উঠে চাপ বাড়াচ্ছিল। খেলার রাশও তারাই ধরে ফেলেছিল।
তবে গোলের মুখ খুলতে লেগে যায় ২২ মিনিট। বাঁ-দিক থেকে লিয়াওয়ের ক্রস ধরতে গিয়েও পারেননি রোনাল্ডো। তিনি পিছলে পড়ে যান। তব রোনাল্ডো বল না ধরতে পারলেও, সেটি চলে যায় অরক্ষিত অবস্থায় থাকা বের্নার্দোর কাছে। তিনি সেই বলে ধরে বাঁ-পায়ের শটে জালে জড়ান। বড় প্রতিযোগিতায় এটাই প্রথম গোল বের্নার্দোর। তুরস্কের রক্ষণের ভুলে ছয় মিনিট পরে ২-০ করে ফেলে পর্তুগাল। ক্ষমাহীন ভুল। গোলকিপারকে ব্যাকপাস দিতে গিয়ে নিজেদের গোলেই ঢুকিয়ে দেন আকায়দিন। আসলে পাস দেওয়ার সময় তিনি দেখেনইনি গোলকিপার কোথায় রয়েছেন। তুরস্কের আর এক ডিফেন্ডার ঝাঁপিয়ে সেই বল বার করলেও, তার গোল বাইন টপকে যায়।
আরও পড়ুন: এগিয়ে গিয়ে হার স্লোভাকিয়ার, দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে ২-১ জিতল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন
২-০ এগিয়ে যাওয়ার পরেও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে পর্তুগাল। রোনাল্ডো নিজে দূর থেকে গোটা দুয়েক শট নেন। এর মাঝেই ভুয়ো ডাইভ দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন লিয়াও। যার জেরে পরের ম্যাচে তাঁকে পাওয়া যাবে না। যাইহোক এর পর আর প্রথমার্ধে আর কোনও গোল হয়নি। ২-০ এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পর্তুগাল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে তুরস্ক একটু নড়েচড়ে উঠেছিল। বেশ কয়েকটি সুযোগও তারা তৈরি করেছিল। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি। উল্টে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে ৩-০ করে দেয় পর্তুগাল। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের পাস তুরস্কের এক ফুটবলারের গায়ে লেগে তাঁর সামনে এসে পড়েছিল। রোনাল্ডোর সামনে ছিলেন শুধু তুরস্কের গোলকিপার। গোল না করার কোনও কারণ ছিল না। কিন্তু তিনি নিজে গোল না করে নিঃস্বার্থ ভাবে ব্রুনোকে পাস বাড়ান। ফাঁকা গোলে বল জালে জড়ান ব্রুনো। এর পর দৌড়ে গিয়ে রোনাল্ডোকে জড়িয়ে ধরেন। শেষের আধা ঘণ্টায় আর কোনও গোল না হলেও, শেষ ষোলোর টিকিট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে পর্তুগাল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।