বাংলা নিউজ > ময়দান > ফুটবলের মহারণ > পুরনো টুর্নামেন্ট চালু,মহিলা ফুটবলে জোর, স্কুলের সিলেবাসে ফুটবল-বহু ভাবনা কল্যাণের

পুরনো টুর্নামেন্ট চালু,মহিলা ফুটবলে জোর, স্কুলের সিলেবাসে ফুটবল-বহু ভাবনা কল্যাণের

এআইএফএফ-এর নতুন প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে।

কয়েক দিন পরই ভারতে শুরু মেয়েদের অনূর্ধ্ব -১৭ বিশ্বকাপ। সেটা সুষ্ঠুভাবে করার পাশাপাশি মহিলা ফুটবলের উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকটা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভেবেছেন কল্যাণ চৌবে। এরই সঙ্গে কলকাতার দুই প্রধানের ব্যাপারে আলাদা করে পরিকল্পনা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

কল্যাণ চৌবে সবে প্রেসিডেন্ট হয়ে ভারতীয় ফুটবলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা যে ভাবে কালিমালিপ্ত হয়েছে, তা কাটিয়ে দ্রুত সংস্থার পুরনো গরিমা ফিরিয়ে আনতে মরিয়া সভাপতি কল্যাণ চৌবে। পাশাপাশি দায়িত্ব নেওয়ার দিনই জানিয়েছিলেন, ১০০ দিনের মধ্যে ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ প্রকাশ করবেন। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে ক্লাব ফুটবল থেকে যুব দল, জাতীয় দল, মহিলা ফুটবল, ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট, সব কিছু নিয়েই খোলামেলা উত্তর দিলেন ফেডারেশনের নতুন সভাপতি। 

কয়েক দিন পরই ভারতে শুরু মেয়েদের অনূর্ধ্ব -১৭ বিশ্বকাপ। সেটা সুষ্ঠুভাবে করার পাশাপাশি মহিলা ফুটবলের উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকটা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভেবেছেন কল্যাণ চৌবে। এরই সঙ্গে কলকাতার দুই প্রধানের ব্যাপারে আলাদা করে পরিকল্পনা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর যেমন অতীতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে, তেমনই কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে চান টেকনিক্যাল কমিটির বাইরে থাকা প্রাক্তন ফুটবলারদেরও।

আরও পড়ুন: ছন্নছাড়া ফুটবল, ১-৩ হেরে AFC Cup থেকে ছিটকে গেল বাগান

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ বলেছেন, ‘দুই প্রধানের বিরাট জন সমর্থন রয়েছে। ওদের যত জন সমর্থক, তত জনসংখ্যা বোধ হয় অনেক দেশেই থাকে না। আমি নিজেও দুই প্রধানে খেলেছি। এটা বলাই যায়, দুই প্রধানের জন্য আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। তবে আমরা দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। আমাদের কাছে দুই প্রধানের যেমন গুরুত্ব, তেমনই এরিয়ান বা ভ্রাতৃ সঙ্ঘেরও গুরুত্ব রয়েছে। সবার দিকটাই আমাদের ভেবে চলতে হবে।’

ঐতিহ্যশালী ফেডারেশন কাপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও রোভার্স কাপ-সহ একাধিক প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফেডারেশন কাপ নতুন করে সুপার কাপ হিসাবে চালু করা হলেও ফেডারেশন কাপের সেই গরিমা আর নেই। কল্যাণ বলেন, প্রাচীন প্রতিযোগিতাগুলি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন তাঁরা। কল্যাণের কথায়, ‘অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে যেগুলি বিশ্বের যে কোনও ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতার থেকে কোনও অংশে কম নয়। তাই শুধু পুরনো প্রতিযোগিতা ফেরানোই নয়, অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাও ভাল করে করব। সন্তোষ ট্রফি আরও ভাল ভাবে আয়োজন করতে চাই।’

আরও পড়ুন: প্রচারে রোহিতদের ধারেকাছে নেই, তবে পাকিস্তানকে হারিয়ে আসল কাজ করল মহিলা ফুটবল দল

স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (সাই) সঙ্গে যৌথ ভাবে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলাদের লিগ চালু করতে চলেছে ফেডারেশন। পাশাপাশি ফুটবলে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে ছেলেদের সঙ্গে মহিলা ফুটবলারের বেতনে একটি সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন কল্যাণ চৌবে। তিনি বলেন, ‘সাইয়ের সঙ্গে মিলে আমরা ভারতে অনূর্ধ্ব -১৭ মেয়েদের লিগ চালু করতে চলেছি। মহিলাদের লিগে খেলা ফুটবলারদের জন্য একটা ন্যূনতম স্যালারি ক্যাপ নির্দিষ্ট করা হবে। পুরুষ এবং মহিলাদের ফুটবলে বেতনের খুব বেশি পার্থক্য থাকা উচিত নয়। একটা সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করা হবে।’

মহিলাদের ফুটবলের পাশাপাশি তৃণমূল স্তরে জোর দিতে চান ফেডারেশনের নতুন সচিব। এ বার থেকে স্কুলের সিলেবাসে জায়গা পাবে ফুটবল। এই নিয়ে একটি প্রাথমিক পরিকল্পনাও ছকে ফেলেছেন। কল্যাণ চৌবে বলেন, ‘তৃণমূল স্তর থেকে ফুটবলার তুলে আনতে কেন্দ্রীয় স্কুলগুলোকে কাজে লাগানোর ভাবনা ফেডারেশনের। আমরা ভারত সরকারের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের ১৬ লক্ষ স্কুল আছে। তার মধ্যে প্রধান ক্রাইটেরিয়া একটা ফুল সাইজ ফুটবল মাঠ। ২৫ কোটি ছাত্রছাত্রী এই স্কুলে পড়ে। গ্রাসরুট থেকে ফুটবলার তুলে আনতে আলাদা অ্যাকাডেমি করার প্রয়োজন নেই। এই স্কুলগুলোকেই কাজে লাগানো যায়। স্কুলের ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষকের সঙ্গে ফেডারেশনের একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোচকে জুড়ে দিতে হবে। তা হলে ৬ বছর বয়স থেকেই ফুটবলে হাতেখড়ি হয়ে যাবে। ফিফা এবং এএফসির ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টের জন্য নির্ধারিত বয়স ৬-১২ বছর। সেখানে আমাদের এখানে শুরুই হয় ১২-১৩ বছর থেকে। স্কুলে আমরা ফুটবল চালু করতে পারলে এখানেও ৬ বছর বয়স থেকে ফুটবলের পাঠ শুরু হয়ে যাবে। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে যদি ১৬টা স্কুলেও এই প্রক্রিয়া চালু করা যায়, তা হলেও ভারতীয় ফুটবল অনেকটাই এগোবে।’

বন্ধ করুন