SCEB vs MCFC: জমাট রক্ষণে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বইকে রুখে দিয়ে নাগাড়ে তৃতীয় ড্র লাল-হলুদের
Updated: 07 Jan 2022, 08:57 PM IST- এই নিয়ে এ মরশুমে মাত্র দ্বিতীয় ক্লিনশিট রাখতে সক্ষম হল এসসি ইস্টবেঙ্গল, লাগাতার চতুর্থ ম্যাচে পয়েন্ট খোয়াল মুম্বই সিটি।
রাইট ব্যাকে অমরজিৎ সিং কিয়াম এবং মাঝমাঠে সৌরভ দাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ঘাতক আক্রমণকে সম্পূর্ণরূপে নির্বিষ করে দিতে সক্ষম হয় এসসি ইস্টবেঙ্গল। ইগর অ্যাঙ্গুলো, ক্যাসিও গ্যাব্রিয়েলরা গোটা ম্যাচে বলার মতো তেমন বড় সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হন। ম্যাচ শেষ হয় ০-০। এই নিয়ে নাগাড়ে তৃতীয় ম্যাচ ড্র করল লাল-হলুদ। অপরদিকে, লাগাতার চতুর্থ ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করেও দ্বিতীয় স্থানে থাকা হায়দরাবাদের থেকে এক ম্যাচ বেশি খেলে এক পয়েন্টে এগিয়ে গিয়ে পুনরায় শীর্ষস্থান দখল করল আইল্যান্ডাররা।
মাঝমাঠে অক্লান্ত পরিশ্রম করে অ্যাঙ্গুলো, ক্যাসিও, জাহুয়াদের আটকানোর ফল হিসেবে, নিজের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ সেরা হলেন লাল-হলুদের সৌরভ দাস।
কড়া টক্কর দিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসিকে রুখে দিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচ শেষে স্কোর ০-০। এটি এ মরশুমে লাল-হলুদের মাত্র দ্বিতীয় ক্লিনশিট।
মুম্বই পেনাল্টি বক্সের সামনে বল দখলের লড়াইয়ে ইস্টবেঙ্গল বল হারায়। মুম্বইকে ফ্রি-কিক দিলে বেশ ক্ষুব্ধ বলয়ন্ত বল ফ্রি-কিক পজিশন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ায় হলুদ কার্ড দেখেন বলয়ন্ত।
চুকুউ এবং সিডোয়েলের ভাল ওয়ান টুর পরে সিডোয়েল পেনাল্টি বক্সে ভাল ক্রস বাড়ান। তবে এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে দুর্ভাগ্যবশত বলের ধারেকাছেও কেউ ছিল না। মুম্বইয়ের হয়ে জাহুয়া বল ক্লিয়ার করেন।
৯০ মিনিট শেষে পাঁচ মিনিট ইনজুরি টাইমের ঘোষণা চতুর্থ রেফারির।
নামতে ও আঙ্গুসানা ওয়াহেংবামের বদলে জ্যাকিচাঁদ সিং এবং বলয়ন্ত সিং মাঠে নামলেন।
অরিন্দম এগিয়ে গিয়ে সুইপার কিপারের মতো বল দখলে গেলেও বেশিদূর তা ক্লিয়ার করতে পারেন না। বল গোলের সামনে ফলের পায়ে চলে আসলেও জমাট রক্ষণে তা ক্লিয়ার করতে সক্ষম হয় লাল-হলুদ। ফলের বিরুদ্ধে কড়া কিন্তু স্বচ্ছ ট্যাকেল করে দলকে বাঁচান অরিন্দমই। মুম্বই পেনাল্টির দাবি করলেও তা নাকচ করে দেওয়া হয়।
চুকুউয়ের বিরুদ্ধে হাই ফুট চ্যালেঞ্জের জন্য মরশুমের চতুর্থ হলুদ কার্ড দেখলেন জাহুয়া। পরের ম্যাচে তিনি এর জেরে খেলতে পারবেন না।
রাহুল ভেকের থ্রু বল থেকে ইনমান ইস্টবেঙ্গল বক্সের ডান দিকে বল পেয়ে যান। তবে তাঁর ক্রস রুখে দেন আদিল।
অ্যাঙ্গুলোর বদলে মুম্বইয়ের হয়ে মাঠে নামলেন ইনমান।
পায়ে খিঁচ ধরায় কিয়ামকে তুলে নিলেন রেনেডি সিংস। তাঁর ছয় ম্যাচ পরে মাঠে নামলেন ড্যারেন সিডোয়েল।
একেবারেই ছন্দে নেই মুম্বই। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে দুর্ধর্ষ ডিফেন্ড করছেন কিয়াম।
ক্যাসিও গ্যাব্রিয়েলের বদলে মাঠে নামছেন ইয়োগার কাতাতাউ এবং রেনিয়েরের বদলে সুযোগ পেলেন ভিনিত রাই।
ক্যাসিও ভাল জায়গায় ফাউল জিতে নিলেও জাহুয়ার ফ্রি-কিক সোজা এসসি ইস্টবেঙ্গলের ওয়ালে লেগে বল বাইরে বেরিয়ে যায়। কর্ণার কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় মুম্বই।
মাঝমাঠে চুকুউ বল জিতে নিয়ে হাওকিপকে পাস দেন। গোলের দিকে দ্রুত গতিতে ছোটা হাওকিপকে দারুণ ট্যাকেল করে রুখে দেন ফল।
ইস্টবেঙ্গল পেনাল্টি বক্সের একটু বাইরে, ডান দিক থেকে ক্যাসিও অসাধারণ এক ডিপিং শট মারেন। তবে অরিন্দম তৎপর থাকায় বল গোলে জড়ায়নি। কর্ণার থেকেও মুম্বই কোনো সুবিধা করতে পারেননি।
পেনাল্টি বক্সের মধ্যে আদিল খানের চ্যালেঞ্জে রানাওয়াতে পেনাল্টি বক্সে পড়ে যাওয়ায় মুম্বই পেনাল্টির আবেদন করলেও তা নাকচ করে দেন রেফারি।
প্রথমার্ধে বিকাশ জাইরুর হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর তাঁর বদলে দ্বিতীয়ার্ধে লাল-হলুদের হয়ে মাঠে নেমেছেন মহম্মদ রফিক।
এক অদ্ভুত প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হল। মুম্বইকে একেবারেই নিজেদের চেনা ছন্দে দেখায়নি। এসসি ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ বেশ জমাট। তবে দুই দলের কেউই মনে করার মতো একটাও বড় সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ডান দিকে কিয়াম যতটাই ভাল খেলছেন, বাঁ-দিকে বিকাশ জাইরু ততটাই হতাশাজনক। মুম্বইয়ের হয়ে অ্যাঙ্গুলো, গ্যাব্রিয়েল, আহমেদ জাহুয়াদের বেশ নির্বিষ দেখিয়েছে।
প্রথম ৪৫ মিনিটের ওপর দুই মিনিট ইনজুরি টাইম যোগ করার ইশারা চতুর্থ আম্পায়ারের।
বল দখলের লড়াইয়ে চুকুউকে ফাউল করে বসেন মুর্তাদা ফল। সংঘর্ষের জেরে চুকুউয়ের কোমরে বেশ জোরে লেগেছে।
বিপিন সিংয়ের পাস থেকে ইস্টবেঙ্গল পেনাল্টি বক্সে দারুণ স্কিল দেখিয়ে প্রায় একাই গোল করার প্রচেষ্টা করছিলেন ক্যাসিও গ্যাব্রিয়েল। তবে অঙ্কিত ডিফেন্সে বল ক্লিয়ার করেন।
ডান দিকে পেনাল্টি বক্সের কাছে হীরা মন্ডল বল মিসজাজ করায় রানাওয়াতে সেই সুযোগে হু হু করে গোলের দিকে ঢুকছিলেন। তবে হীরা ভাল রিকোভারি করে রানাওয়াতের ক্রস ব্লক করে দেন। পরিবর্তে পাওয়া কর্ণার থেকে ইস্টবেঙ্গল খেলোয়াড়কে ফাউল করায় কর্ণারের কোনো লাভই তুলতে পারেনি মুম্বই।
পেনাল্টি বক্সে লাল-হলুদ ফুটবলারের হাতে বল লাগলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি। মুম্বই সিটির ফুটবলারদের স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছে।
বাঁ-দিকের উইং ধরে ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সিভ অর্ধ থেকে থঙখোসিম সেম্বয় হাওকিপ একাই দুর্ধর্ষভাবে মুম্বইয়ে বক্সের দিকে রান নেন। তবে বিকাশ জাইরু হাওকিপের পাস থেকে যে ক্রস দেওয়ার চেষ্টা করেন, তার থেকে আরেকটু হলেই বল প্রায় মাঠের বাইরে চলে যাচ্ছিল।
হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পাওয়ায় ম্যাচে আর স্বভাবতই খেলা চালিয়ে যাওয়া জয়নারের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাঁর জায়গায় মাঠে নামলেন অঙ্কিত মুখার্জি।
এমনিতেই ইস্টবেঙ্গল একাধিক চোট সমস্যায় জর্জরিত। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত এবার ডিফেন্ড করতে গিয়ে চোট পেলেন জয়নার লরেন্সো। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়েছেন জয়নার।
হীরা মন্ডলের লং থ্রো থেকে পেনাল্টি বক্সে বল পেয়েগিয়েছিলেন ড্যানিয়েল চিমা চুকুউ। তবে একেবারেই ভাল সংযোগ না হওয়ায় একদম অল্পের জন্য বল মুম্বইয়ের গোলের বাইরে বেরিয়ে যায়। একটু ভাল সংযোগ হলেই এসসি ইস্টবেঙ্গল ১-০ এগিয়ে যেতে পারত।
বাঁ-দিক থেকে ক্রসে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বল পেয়ে বেশ জোরাল হেডার মেরেছিলেন ইগর অ্যাঙ্গুলো। তবে সৌভাগ্যবশত বল সোজা অরিন্দম ভট্টাচার্য্যের দস্তানায় চলে যায়।
থ্রো-ইন থেকে মুম্বই পেনাল্টি বক্সের বাইরে সৌরভ দাসের পায়ের বল চলে আসে। সৌরভের দূরপাল্লার শট গোলের খুব উপরে ছিল না।
বাঁ-দিক থেকে বিপিন সিং গতির পরিচয় দিয়ে ভাল রান নিলেও আদিল প্রাচীরে বাঁধা পান। দারুণ ট্যাকেল করে ইস্টবেঙ্গলকে বিপদের থেকে রক্ষা করেন আদিল খান।
বেশ কয়েকটা ফাউল হলেও বড় সুযোগ কোনো দলই এখনও তৈরি করতে পারেনি। তবে লাল-হলুদ সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চলাচ্ছে।
পরিচিত লাল-হলুদ জার্সিতে ডান দিক থেকে বাঁ-দিকে আক্রমণ করছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। পরিবর্তিত জার্সিতে বাঁ-দিক থেকে ডান দিকে আক্রমণ করছে মুম্বই সিটি।
ইস্টবেঙ্গল দলে দুই পরিবর্তন, প্রথম এগারোয় জায়গা পেলেন বিকাশ জাইরু ও অমরজিৎ সিং কিয়াম। মুম্বই সিটির মাত্র একটি বদল ঘটিয়েছে। বারের তলায় শেষ প্রহরী হিসেবে নিজের পূর্ণ অভিষেক ঘটাচ্ছেন পূর্বা লাচেনপা।
গত মরশুমে এই দুই দলের সাক্ষাৎকারে, ফলের ২৭ মিনিটের গোলে ০-১ ব্যবধানে পরাজিত হতে হয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি লিগ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বলেই তারা ফর্মে আছে, এমনটা কিন্তু ভাবার কোনো কারণ নেই। বরং, আইল্যান্ডারদের সাম্প্রতিক ফর্ম বেশ চিন্তার বিষয়। গত তিন ম্যাচের একটিও জিততে পারেনি তারা। এখনও অবধি নয় ম্যাচ খেলে পাঁচটি জয়, একটি ড্র এবং তিনটি হারের জেরে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে গোলপার্থক্যে হায়দরাবাদের থেকে পিছিয়ে থাকায় লিগ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইল্যান্ডাররা।
হায়দরাবাদ এবং বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে গত দুই ম্যাচে লিড নিয়েও, এক পয়েন্ট সঙ্গে করেই ৯০ মিনিট শেষে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। তবে দুই ম্যাচেই এসসি ইস্টবেঙ্গলের জমাট রক্ষণ বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু এখনও প্রথম জয় অধরাই। নয় ম্যাচ খেলে, লিগ সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ ড্র করেছে লাল-হলুদ, হেরেছে বাকি চারটি। আদিল খানদের দখলে মোট পাঁচ পয়েন্ট রয়েছে।