শুভব্রত মুখার্জি: ২০০৫ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান দলের বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল ভারতীয় কিংবদন্তি ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর। এর পর দীর্ঘ ১৯ বছর ভারতীয় জার্সি গায়ে সামলেছেন গুরু দায়িত্ব। ভারতকে একাধিক ম্যাচে এনে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ জয়। বৃহস্পতিবার রাতে দীর্ঘ দুই দশক পথ চলার পরে তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে দাঁড়ি টেনেছেন তিনি। তাঁর শেষ ম্যাচে যদিও ভারতের জয় অধরা থেকে গিয়েছে। কুয়েতের বিরুদ্ধে ০-০ ড্র করেছে তারা। তবে এই হতাশাকে দূরে সরিয়ে রেখে কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সুনীলকে নিয়ে যে আবেগ দেখিয়েছেন কলকাতার ফুটবল সমর্থকরা, তা ছিল অভূতপূর্ব। ম্যাচ দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন সুনীল ছেত্রীর বাবা, মা, স্ত্রী সহ গোটা পরিবার। এমন আবহে ম্যাচ শেষে ছেলেকে নিয়ে বলতে গিয়ে বাবা খর্গ ছেত্রী জানিয়েছেন, সুনীল আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিলেও তাঁর মধ্যে এখনও খেলার খিদে রয়েছে এবং তিনি আগামী দিনেও খেলা চালিয়ে যাবেন।
টাইমস নাও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খর্গ ছেত্রী বলেছেন, ‘সুনীল আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্লাব ফুটবলের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। এখনও ওর মধ্যে মাঠে নেমে খেলার খিদে রয়েছে। সেই আগুনটা রয়েছে। ও খেলাটা এখনও চালিয়ে যাবে। আমি মনে করি, অন্ততপক্ষে আরও দু'টো বছর ও ক্লাব পর্যায়ে খেলাটা চালিয়ে যাবে। এখনও ওর পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের বাড়িতে কোনও ধরনের কোনও আলোচনা হয়নি। তবে আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, ও এখনই পুরোপুরি ভাবে ফুটবলটা ছেড়ে দিচ্ছে না। অন্ততপক্ষে এক থেকে দু'টো বছর তো ও খেলা চালাবেই চালাবে।’
৩৯ বছর বয়সী তারকা ফুটবলার আগেই জানিয়েছিলেন, কলকাতাতে কুয়েতের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে আলবিদা জানাবেন তিনি। এই ম্যাচের আগে দলের সঙ্গে ভুবনেশ্বরে অনুশীলন ক্যাম্প করেছেন তিনি। তার পর দলের সঙ্গেই কলকাতাতে আসেন। সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আবেগঘন বার্তা দেন তিনি। সুনীলকে নিয়ে বলতে গিয়ে বাবা খর্গ ছেত্রী আরও দাবি করেছেন, ‘এই ম্যাচের আগে সুনীল বেশ আবেগপ্রবণ ছিল। হয়তো এটা যে ওর শেষ ম্যাচ, তা নিয়ে ভাবছিল। আমি ওকে তখন বলেছিলাম এই ম্যাচটাকে যাতে ও ওর অভিষেক ম্যাচ হিসেবেই ট্রিট করে। আমি ওকে স্বাধীন ভাবে খেলার পরামর্শ দিই। নিজেকে মাঠে সম্পূর্ণ ভাবে মেলে ধরতে বলি।’ এর পর সুনীলের কেরিয়ার নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘ যখন ২০০২ সালে প্রথম বার মোহনবাগানের সঙ্গে ও চুক্তিবদ্ধ হয়, তখন ওর মুখে যে আনন্দ ছিল তা দেখার মতো। আমি ওর হয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলাম। কারণ তখন ওর ১৮ বছর বয়স হয়নি। এই স্মৃতিটা আমি চিরজীবন উপভোগ করব। আমার মনে পড়ে, যখন ও আমাকে প্রথম বলেছিল যে, ওকে মোহনবাগান ট্রায়ালে ডেকেছে, আমি ভেবেছিলাম, ও হয়তো মজা করছে। পরে অনুভব করি, ও মজা করছে না। তখন আমি ওকে নিয়ে দিল্লি যাই। সেখান থেকে ট্রেন ধরে কলকাতা এসেছিলাম।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।