হাউমাউ করে কাঁদছে বাচ্চারা। বড়দের অনেকেও চোখের জল সামলে রাখতে পারছেন না। কারও দমবন্ধ হয়ে আসছে। কেউ আবার জল চাইছেন। কেউ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। কারও-কারও চিকিৎসা চলছে। কোপা আমেরিকার ফাইনালের আগে ফ্লোরিডার হার্ডরক স্টেডিয়ামে এমনই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটল। মাঠের বাইরে এমনই অবস্থা হয় যে নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ২২ মিনিট (৮২ মিনিট) পরে কোপা আমেরিকার ফাইনালের মতো ম্যাচের কিক-অফ হল। আর তার জেরে প্রশ্ন উঠে গেল যে আদৌও ২০২৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারবে তো ফ্লোরিডা (সার্বিকভাবে আমেরিকা, সেমিফাইনালেও গণ্ডগোল হয়েছিল)? কেউ-কেউ ক্ষোভের সুরে বলেছেন যে বিশ্বকাপের আয়োজনের দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হোক।
'বিশ্বকাপ করতে পারবে না এরা'
আর্জেন্তিনার মেন্দোজা থেকে আসা ক্লদিও নামে এক ব্যক্তি ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, ‘ওরা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারে না। অসম্ভব।’ হাঁফাতে-হাঁফাতে স্প্যানিশে তিনি আরও বলেন, ‘ঘণ্টার পরে ঘণ্টা ধরে গেটে আটকে ছিলেন মানুষ। দমবন্ধ হয়ে আসছিল। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছিলেন না। ওখানে একজন বয়স্ক ব্যক্তি ছিলেন, ওঁকে দেখুন, (কী অবস্থা)। ওকে দেখুন (ছেলের দিকে আঙুল দেখিয়ে), কোনও জল পায়নি কেউ। কোনও জল ছিল না। কিচ্ছু ছিল না।’
‘এর থেকে খারাপ পরিস্থিতির কখনও সম্মুখীন হতে হয়নি’
শুধু তিনি নন, ক্ষোভে ফেটে পড়েন অসংখ্য মানুষ। একাধিক ছবিতে দেখা গিয়েছে যে ভিড়ের চাপে কয়েকজন কলম্বিয়ার ফ্যানের উপর আরও কয়েকজন পড়ে গিয়েছেন। একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিক বলেন, ‘আমার জীবনে এর থেকে খারাপ পরিস্থিতির কখনও সম্মুখীন হতে হয়নি। সেটা ফুটবল ম্যাচ হোক বা অন্য কোনও ম্যাচ। সত্যিই ভয়াবহ পরিস্থিতি। বাচ্চা-বাচ্চা ফ্যানেরা কাঁদছে। বড়রাও নিজেদের ধৈর্যের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন। ফ্যানেরা যে হিংসাত্মক হয়ে ওঠেননি, সেটার জন্য তাঁদের বাহবা দেওয়া উচিত।’
আর্জেন্তিনার খেলোয়াড়দের পরিবারও বিশৃঙ্খলায় আটকে যায়
ফ্যানরা তো বটেই, আর্জেন্তিনার খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যরাও সেই ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাননি। টিওয়াইসি স্পোর্টসে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের মা বলেন, 'ও (অ্যালিস্টার) উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। আমরা কী করছি, সেটা জানতে ফোন করেছিল। ও বলছিল যে যতক্ষণ না আমরা ঢুকতে পারব, ততক্ষণ ও গেটের কাছে থাকবে।' একইসুরে আলেজান্দ্রো গারাঞ্চোর ভাই রবার্টো বলেন, 'লজ্জাজনক! খেলোয়াড়দেরও পরিবারের সদস্যদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।'
স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের সাফাই
যদিও যাবতীয় দায় টিকিট না থাকা ফ্যানদের উপর দায় চাপিয়ে দিয়েছে হার্ডরক স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। যে স্টেডিয়ামে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ হবে। ওই স্টেডিয়ামের এক মুখপাত্র দাবি করেন, বিনা টিকিটের হাজার-হাজার ফ্যানরা মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেন। তার ফলে বৈধ টিকিট থাকা ফ্যান, নিরাপত্তারক্ষীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা গেল না, সেটার সদুত্তর দিতে পারেননি মুখপাত্র।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।