মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে পিকে-চুনী-বলরামরা চলে গেলেন চিরঘুমের দেশে। এই খবরের পরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফুটবল মহলে। তুলসীদাস বলরামের প্রয়াণের খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছেন তুলসীদাস বলরামের প্রাক্তন সতীর্থ সুকুমার সমাজপতি। বিগত কয়েকদিন সুকুমার পাটুলিতে নিজের বাসভবনে আসতেন শুধু স্নান-খাওয়ার জন্য়। বাকি সময়টা তিনি বন্ধু বলরামের জন্য থাকতেন হাসপাতালে। কুমার বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তাঁর বন্ধু আর নেই।
আরও পড়ুন… উইকেটের সামনে স্মিথ, পিছনে ল্যাবুশেন! এ কেমন অনুশীলন? রহস্য থেকে পর্দা তুললেন অজি ব্যাটার
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুলসীদাস বলরামের প্রসঙ্গে নানা কথা তুলে ধরেছেন সুকুমার সমাজপতি। বলরামের মৃত্যুর খবরে ভেঙে গিয়েছেন তিনি। সুকুমার সমাজপতি বলেন, ‘আজ বুক ভেঙে যাচ্ছে আমার, একটি ছেলে কানাডায় চাকরি করত, ও বলরামকে কাকা বলত। মাসদুয়েক আগে ও চলে আসে কলকাতায়। ছেলেটি রোজ হাসপাতালে যেত। ছেলেটির সঙ্গে রোজ কথা হত। গতকালও সন্ধেবেলা কথা হয়েছিল। আজও রাতে ছেলেটিকে ফোন করব ভেবেছিলাম। তার মধ্যেই ও দুপুরে খবর দিল যে, আমার কাকা চলে গেল। হায়দরাবাদে বলরামে বাবা-মা-ভাই ছিল। তবে ওরা বহুকাল আগে চলে যায়। ওর হায়দরাবাদের সঙ্গে কোনও টাচই ছিল না সেভাবে। বলরাম বিয়ে করেনি। সংসার করেনি। আমি ওর উত্তরপাড়ার বাড়িতে যেতাম। নানা রকম কথা হত, পুরনো দিনের কথা ফিরে আসত, বন্ধু হিসাবে, দাদা হিসেবে যা পেয়েছি আমি, তার কোনও তুলনা হয় না। শেষে বলব বলরাম ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে এক নম্বর ফুটবলার হয়েই থাকবে।’
আরও পড়ুন… IND vs AUS: বিয়ের মরশুম, দিল্লিতে হোটেল বদলাতে হল রোহিত, ল্যাবুশেনদের, কোহলি কী করলেন?
ইস্টবেঙ্গলের প্রতি তুলসীদাস বলরামের অভিমানের কথা বলতে গিয়ে সুকুমার সমাজপতি বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে বলরামের যে সম্পর্ক ভালো ছিল না, সে কথা ও নিজেই বলেছে। ও জানিয়ে দিয়েছিল মৃত্যুর পর ওর দেহ যেন ওই ক্লাবে না যায়। ইস্টবেঙ্গলে একটা ঘটনার জন্য ও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিল। সে কথায় আমি আজ আর যেতে চাই না। ও কলকাতায় ইস্টবেঙ্গলের বাইরে কখনও অন্য কোনও ক্লাবে খেলেনি। যা কিছু সব এই ক্লাবেই। তাই ওর ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক।’
বলরামের সঙ্গে নিজের ফুটবল খেলা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সুকুমার সমাজপতি বলেছেন, ‘সেভাবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে কখনও আমার ওর সঙ্গে বলরামের খেলার সৌভাগ্য হয়নি। মারডেকায় যখন আমি সুযোগ পেয়েছিলাম, তখন বলরামের সঙ্গেই গিয়েছিলাম মালয়েশিয়ায়। কিন্তু ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই ওর হাঁটুতে চোট লেগে যায় প্রতিপক্ষের ফুটবলারের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে। ও মাঠ ছেড়ে উঠে এল। আমি মাঠে নামলাম। বলতে গেলে ওই একটিই আন্তর্জাতিক ম্যাচ, যেখানে এক সঙ্গে ওর-আমার খেলা। টিম ম্যান থেকে হোক বা ইনডিভিজুয়াল। সব দিক থেকেই ও পরিপূর্ণ ফুটবলার। এত বড় ফুটবলার ভারতের ইতিহাসে আসেনি।’
বলরামকে অন্য নজরে দেখতেন সুকুমার সমাজপতি। তাঁর বক্তব্য ‘পিকে-চুনী-বলরাম নিঃসন্দেহে ভারতীয় ফুটবলের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। তবে আমি একটা কথা আজ বলবই, বলরামের মতো এত বড় খেলোয়াড় ভারতীয় ফুটবলে কখনও আসেনি। ওর সমকক্ষ কোনও খেলোয়াড় ছিল না ভারতে। সাধারণত অন্য ফুটবলারদের দু'টো পা সমান চলে না, তবে বলরামের দু'টি পা সমান ছিল। যেমন ডজ, তেমন শট-ভলি। ডান পা, বাঁ-পা বলে আলাদা কোনও ব্যাপার ছিল না। খেলার মধ্যে প্রতিটি মুহূর্তে থাকত বুদ্ধির ছাপ। মাথা ঠান্ডা করে খেলত। কখনও মাথা গরম করেনি।’
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।