ছিল না জৌলুস। ছিল না স্পনসর, টাকা-পয়সা। পুরুষদের ক্রিকেটে যখন স্পনসরদের লম্বা লাইন ছিল, তখন নিভৃতে-অন্তরালে কোনওক্রমে 'শ্বাস-প্রশ্বাস' নিচ্ছিল ভারতের মহিলা ক্রিকেট। সেইসময় ভারতের মহিলা ক্রিকেটকে ‘অক্সিজেন’ জুগিয়েছিলেন মন্দিরা বেদী। নিজে স্পনসরশিপের টাকা নেননি। মহিলা ক্রিকেটের জন্য তা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওই সংস্থাকে মহিলা ক্রিকেট দলের জন্য স্পনসর নিয়ে এসেছিলেন। তাতে ভর করে ভারতের মহিলা ক্রিকেট ছোট্ট-ছোট্ট পা ফেলতে শুরু করেছিল। যা শনিবার উইমেন্স প্রিমিয়র লিগে হিসেবে একটা বিশাল পা ফেলল। আর সেই উদ্বোধনী লিগে হাজির থাকলেন সেই মন্দিরা। যে দৃশ্য দেখে নেটিজেনরা বলছেন, একটা যেন বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।
শনিবার আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে উইমেন্স প্রিমিয়র লিগের উদ্বোধন হয়। সেই মঞ্চ থেকে সঞ্চালক হিসেবে মাতিয়ে তোলেন মন্দিরা। যিনি ভারতের পুরুষ এবং মহিলা ক্রিকেটে ‘বিপ্লব’ আনলেও শেষ কয়েক বছর ক্রিকেটের মঞ্চ থেকে অনেকটাই দূরে ছিল। সেই মন্দিরা উদ্বোধনী উইমেন্স প্রিমিয়র লিগের উপস্থাপনা করায় আবেগে ভেসে যাচ্ছে নেটদুনিয়া। তাঁদের বক্তব্য, যে মানুষটা ভারতে মহিলা ক্রিকেটের জন্য এত কিছু করেছেন, তাঁর এটার থেকে ভালোভাবে ‘ট্রিবিউট’ দেওয়া যায় না। মন্দিরা মহিলা ক্রিকেটের জন্য যা করেছেন, তা সম্ভবত কেউ করেননি।
সত্যিই তো! ক্রিকেটে ভারতীয় মেয়েরাও যে বিশ্ব কাঁপাতে পারেন, তা ২০০৩-০৪ সালে দাঁড়িয়ে কতজন ভেবেছিলেন? ক্ষুদ্র সংখ্যাটা অজানা হলেও সেই তালিকায় যে একটা নাম মন্দিরা ছিল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ক্রিকেটের 'ফ্যাশন কুইন' মন্দিরা সেইসময় একটি গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন। সেই ব্র্যান্ডের প্রচারের যে টাকাটা পেতেন, সেটা মহিলা ক্রিকেটের জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজের জন্য যাতে ভারতের মহিলা দল স্পনসর পায়, তা নিশ্চিত করেছিলেন। ভারতীয় দলের টাইটেল ও টিম স্পনসর হয়েছিল ওই সংস্থা।
আরও পড়ুন: Mandira Bedi: স্বামী রাজ কৌশলের মৃত্যুবার্ষিকীতে লঙ্গরের আয়োজন, মেঝেতে বসে খেলেন মন্দিরাও
আরও পড়ুন: ‘তোমাকে ছাড়া ৩৬৫ দিন’, স্বামী রাজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আবেগপ্রবণ মন্দিরা
দ্য টেলিগ্রাফে একটি সাক্ষাৎকারে মন্দিরা বলেছিলেন, 'ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য আমি যে টাকাটা নিতাম, সেটা সরাসরি ক্রিকেটের স্পনসরশিপের জন্য যাবে।' আর সেই স্পনসরশিপের টাকা ভারতের মহিলা ক্রিকেটকে অক্সিজেন জুগিয়েছিল। যে অক্সিজেন থেকে নিজেকে চাঙ্গা করে নিয়েছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট। আর মন্দিরা যে কাজটা ভুল করেননি, তার প্রমাণ বছরদুয়েক পরেই দিয়েছিলেন মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামীরা। ২০০৫ সালের ৫০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। বিশ্বকাপটা আসেনি। কিন্তু এসেছিল বিশ্বাস। যে বিশ্বাসে ভর করে বিশ্ব ক্রিকেটে আরও সাফল্য পেয়েছে ভারত। পুরুষদের সঙ্গে বেতনসাম্য এসেছে। এবার শুরু হল উইমেন্স প্রিমিয়র লিগ।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।