পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ চার বছর পর নিজের দেশের টেস্ট দলে ফিরেছেন। এমন প্রত্যাবর্তন যে দুই টেস্টের মাত্র চার ইনিংসে তিনি হয়ে ওঠেন পাকিস্তানের সবচেয়ে শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য এবং শীর্ষ ব্যাটসম্যান। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তিনি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৬ ডিসেম্বর ২০২২-এ দলে ফিরে আসেন এবং একের পর এক বড় ইনিংস খেলে রানের বর্ষণ করেন। তিনি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে উভয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন।
আরও পড়ুন… ছত্তিশগড়কে ৭ উইকেটে হারাল কর্ণাটক, মোহিত রেডকারের দুরন্ত বোলিং-এ জিতল গোয়া
দ্বিতীয় টেস্টে অনেক চেষ্টা করেও সরফরাজ পাকিস্তানকে জেতাতে পারেননি। তবে ক্রিজে তাঁর উপস্থিতি পাকিস্তানকে হারের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। চলতি মরশুমে প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে সিরিজ হার এড়াল পাকিস্তান। এই পরাজয়ের পরও পাকিস্তান ক্রিকেটে নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন অভিজ্ঞ সরফরাজ আহমেদ। তিনি কিউয়িদের বিরুদ্ধে সিরিজে চার ইনিংসে ৮৩.৭৫ গড়ে এবং ৬৫.১৭ স্ট্রাইক রেটে ৩৩৫ রান করেন। স্কোরিংয়ের এই গতি দেখায় যে সরফরাজ আহমেদ কতটা ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছেন।
আরও পড়ুন… সূর্য ভাই-এর এই টিপসেই কি এমন ইনিংস! ম্যাচের পরে কী বলেছিলেন অক্ষর প্যাটেল?
পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড সিরিজে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ এবং প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হয়েছেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদ। বিশ্ব ক্রিকেটে এটি তাঁর অসাধারণ একটি প্রত্যাবর্তন। ম্যাচের পরে সরফরাজ আহমেদ বলেন, ‘আমি চার বছর দলের অংশ ছিলাম এবং এখানে সুযোগ না পাওয়া সত্ত্বেও আমি অন্য জায়গায় নিজের ভালো খেলা চালিয়ে গিয়েছিলাম। আল্লাহর কাছে একটি সুযোগ চেয়েছিলাম এবং এটি পেয়েছি। প্রথম টেস্টে আমি খুব টেনশনে ছিলাম, কিন্তু ছেলেরা এবং অধিনায়ক আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এই দুটি উইকেট না পড়লে ফলাফল অন্য কিছু হতে পারত।’ নিজের সেঞ্চুরি প্রসঙ্গে সরফরাজ বলেন, ‘এটা চতুর্থ ইনিংসের সেঞ্চুরি তাই এটা বিশেষ, সম্ভবত আমার সেরা।’ করাচির সমর্থকদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সরফরাজ বলেন, ‘করাচি জনতা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছে। এবং সবসময় দলকে সমর্থন করেছেন। ওদেরও ওয়ানডেতে আসার জন্য অনুরোধ করছি।’
বহুদিন পর প্রত্যাবর্তন করা সরফরাজ আহমেদের ব্যাটিং দেখে কখনও মনে হয়নি যে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন। ক্রিজে ফেরার পর, তিনি প্রথম ইনিংসে ১৫৩ বলে ৮৬ রান করেন এবং একই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৬ বলে ৫৩ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছে। নতুন বছরের শুরুটাও দারুণ ছিল সরফরাজ আহমেদের। কিউয়িদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৯ বলে ৭৮ রান করেন তিনি। সেই সঙ্গে ফিরে এসে হাফ সেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক করেন তিনি।
পাকিস্তান দলে ফিরে আসা সরফরাজের সবচেয়ে বড় ইনিংসটি এখনও বাকি ছিল। পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ডের টেস্ট সিরিজের শেষ ইনিংসে জয়ের জন্য পাকিস্তানকে ৩১৯ রানের টার্গেট দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। অধিনায়ক বাবর আজম এবং শান মাসুদ সহ টপ অর্ডারের সব ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হলেও সরফরাজ আবারও ক্রিজে তাঁর ঘাঁটি তৈরি করেন। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে গিয়ে সেঞ্চুরি করেন তিনি। তিনি ১৭৬ বলে ১১৮ রান করে পাকিস্তানের লজ্জা বাঁচান। সরফরাজ এই ইনিংসে শতরান না করলে ঘরের মাঠে হারতে হতে পারত পাকিস্তানকে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।