পিকে-চুনী-বলরাম, ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগের তিনমূর্তির নাম উচ্চারিত হয় একসঙ্গে। বরং বলা ভালো ভারতীয় ফুটবলের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর হলেন এই তিন স্ট্রাইকার। এক মাসের ব্যবধানে প্রয়াত হয়েছেন পিকে-চুনী। একা রয়ে গেলেন বলরাম।
জীবন সম্পর্কে নিতান্ত দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির তুলসীদাস জানালেন, মৃত্যু অনিবার্য। সবাইকে যেতে হবে। ডাক এলে তাঁকেও। তবে কখনই ভাবেননি মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রাণের বন্ধুকে হারিয়ে বসবেন।
এমনিতে একাই থাকেন উত্তরপাড়ার বাড়িতে। সঙ্গী ছিল অতীতের সুখস্মৃতি। দুই বন্ধু পাশে না থেকেও সবসময় থাকতেন মনের কাছাকাছি। পিকে-চুনীকে হারিয়ে আজ আক্ষরিক অর্থেই বড় একা বলরাম।
হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় এসে খ্যাতির চূড়ায় পৌছনো বলরাম আবেগে বুজে আসা গলায় জানালেন, চুনীর জন্যই তিনি আজ বলরাম হয়ে উঠতে পেরেছেন। চুনীকে দেখে সেদিন ঈর্ষা না হলে তাঁর পক্ষে নিজেকে পরিণত করে তোলা সম্ভব হতো না।
স্মৃতিচারণায় বলরাম ফিরে যান ১৯৫৬-র সন্তোষ ট্রফিতে। 'আগের বছরই বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছে চুনী। স্বাভাবিকভাবেই ওকে ঘিরে ছিল বহু মানুষের ভিড়। রীতিমতো তারকা ইমেজ। প্রথমবার এই ছবিটা দেখেই মনে ঈর্ষা জেগেছিল। মনে হয়েছিল ছেলেটার মধ্যে কী এমন আছে, যা আমার মধ্যে নেই? নিজেকে বুঝিয়েছিলাম, ও যদি এই বয়সে ভালো খেলতে পারে, আমি কেন পারব না। এই ভালো খেলার তাগিদটাই আমাকে বলরাম করে তুলেছিল। সেদিন যদি ওকে না দেখতাম, আমার পক্ষে বোধহয় পিকে-চুনির পাশে বসে পড়া সম্ভব হতো না কোনও দিনই।'
ক্লাব ফুটবলে কখনও একসঙ্গে খেলেননি ভারতীয় ফুটবলের থ্রি মাস্কেটিয়ার্স। পিকে কখনও বড় ক্লাবে খেলেননি। চুনী খেলতেন মোহনবাগানে। বলরাম বরাবর লাল-হলুদের চোখের তারা। প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরে থাকা সত্ত্বেও চুনী ও বলরাম ছিলেন হরিহর আত্মা। তাই চুনী না থাকলেও বলরামের পক্ষে ভোলা সম্ভব নয় বড় ম্যাচের পর মোহনবাগান তাঁবুতে কোল্ড ড্রিংকসের গ্লাস এগিয়ে দিয়ে সুবিমলের সেই জড়িয়ে ধরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।