আফগানিস্তানকে ৪ রানে হারালেও একরাশ হতাশা ধাওয়া করে বেড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে। নিউজিল্যান্ডের সমান সাত পয়েন্ট নিয়ে তারা দ্বিতীয় স্থানে উঠেও এসেছে। কিন্তু রানরেটে তারা অনেকটাই পিছিয়ে। তাই কিউয়িরা সেমিতে পৌঁছে গেলেও, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ভাগ্য ঝুলেই রয়েছে। তাদের ভাগ্যের ডোর এখন শ্রীলঙ্কার হাতে।
শনিবার শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে। সেই ম্যাচ যদি ইংল্যান্ড জিতে যায়, তবে ইংল্যান্ডেরও ৭ পয়েন্ট হবে নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার মতো। তবে নিউজিল্যান্ডের মতোই ব্রিটিশরা রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে সেমিতে চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া- দু’দলের জয়ের সংখ্যাও হবে একই। কারণ এ দিন অস্ট্রেলিয়া কোনও মতে মাত্র ৪ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে। রানরেট খুব বেশি তারা বাড়াতে পারেনি।
একমাত্র যদি ইংল্যান্ডকে কোনও ভাবে শ্রীলঙ্কা হারিয়ে দেয়, তা হলে অস্ট্রেলিয়ার সেমিতে উঠতে কোনও বাধা থাকবে না। এ দিন অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড দুই দলই ম্যাচ জেতায় লঙ্কার আর সেমিফাইনালে যাওয়ার কোনও আশা বেঁচে থাকল না। তাই তাদের হারানোর কিছু নেই। ফলে শ্রীলঙ্কাও চাইবে শেষ ম্যাচ জিতে মান রক্ষা করতে। এবং গ্রুপ টেবলের তিন নম্বরে শেষ করতে। সেখানে ইংল্যান্ডের উপর চাপ অনেক বেশি থাকবে। এক কথায়, শনিবার গ্রুপ ওয়ানের ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি কার্যত গ্রুপের ফাইনাল ম্যাচে পরিণত হয়েছে।
এ দিন অস্ট্রেলিয়া হারলেও অবাক হওয়ার ছিল না। একার হাতেই ম্যাচের রং বদলে দিয়েছিলেন রশিদ খান। বিগ ব্যাশ লিগে খেলার অভিজ্ঞতা থাকার কারণে অস্ট্রেলিয়ার মাঠগুলো কমবেশি তাঁর চেনা। খেলে অভ্যস্ত তিনি। ফলে একার হাতে দায়িত্ব ২৩ বলে অপরাজিত ৪৮ করে ফেলেছিলেন রশিদ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। নাজিবুল্লাহ জাদরান আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন রশিদ। তার আগে পর্যন্ত মনেই হচ্ছিল ম্যাচ হাতছাড়া আফগানদের। কিন্তু রশিদ দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচে ফেরান আফগানিস্তানকে। জশ হ্যাজলেউড, প্যাট কামিন্স, মার্কাস স্টোইনিসদের পিটিয়ে প্রায় জয়ের রান তুলে নিয়েছিলেন। তবে ৪ রানে পিছিয়ে পড়ল আফগানিস্তান।
আরও পড়ুন: ৬১ করে রেকর্ড গড়লেন, সমালোচকদের মুখও বন্ধ করলেন কেন উইলিয়ামসন
আফগানিস্তান টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠায়। শুরুতেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসে তৃতীয় ওভারে অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে ব্যাটার ক্যামেরন গ্রিনকে (২ বলে ৩ রান) ফেরান ফজলহক ফারুকি। এর পর বিধ্বংসী মেজাজে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার (১৮ বলে ২৫) ফেরান নবীন-উল-হক। এর পর স্টিভ স্মিথও (৪) ব্যর্থ হন। সেই সময়ে দলের হাল ধরেছিলেন মিচেল মার্শ। তিনটি চার এবং দু’টি ছয়ের সাহায্যে ৩০ বলে ৪৫ করেন তিনি। পরের দিকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাফসেঞ্চুরি অস্ট্রেলিয়াকে ১৫০ রানের গণ্ডি টপকে দেন। তিনি শেষ পর্যন্ত ৩২ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসং রয়েছে ছ’টি চার এবং দু’টি ছক্কা। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয় ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রানে। এ দিকে অস্ট্রেলিয়া ১৮৫ রান তুলতে না পারায় নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠা তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উসমান ঘানিকে হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান। তার পর তারা হানা রহমানুল্লাহ গুরবাজকেও (৩০)। ইব্রাহিম জাদরান (২৬) এবং গুলবাদিন নায়েব (৩৯) চেষ্টা করলেও জয়ের লক্ষ্য থেকে দূরে সরতে থাকে আফগানিস্তান। এর পরেই রশিদ মাঠে নামলে ম্যাচের রং বদলাতে শুরু করে। ১৫তম ওভারে রশিদ যখন নামেন, তখন আফগানিস্তানের জিততে প্রায় ৬৬ রান বাকি ছিল। ১৮তম ওভারের শেষ দু’টি বলে কেন রিচার্ডসনকে বিরাট ২টি ছক্কা হাঁকান। দু’ওভারে দরকার ছিল ৩৩। পরের ওভারে হ্যাজলেউডকে একটি চার এবং একটি ছয় মারেন। শেষ ওভারে বল করতে আসেন স্টোইনিস। দরকার ছিল ২২ রান। প্রথম বলেই ফেরেন দারউইশ রসুলি। কিন্তু রশিদকে স্ট্রাইকে দিয়ে যান। স্টোইনিসকে দু’টি চার এবং একটি ছয় মারলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।