২০০৭ সালের কিংসমিড। সেও এক টি২০ বিশ্বকাপ। স্টুয়ার্ড ব্রডের বলে যুবরাজ সিংয়ের এক ওভারে ছয় ছক্কার ওপর ভর করে ভারত ২০০ রানের গণ্ডি পার করেছিল। ইংল্যান্ডও খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল ভারতের লক্ষ্যের। তবে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হেসেছিল ধোনি ব্রিগেড। ২০০৭ সালে সেই ম্যাচে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে মাত্র একজনই এখনও সাদা বলের ক্রিকেটে খেলে চলেছেন। তিনি হলেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ২০০৭ সালে সুপার সিক্স পর্বে প্রথমবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে ভারত জিতেছিল। পরবর্তীতে সেই বিশ্বকাপও ঘরে নিয়ে এসেছিল ভারত। এবার ১৫ বছর পর আরও এক বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি ভারতের সামনে। সামনে জস বাটলারের ইংরেজ বাহিনী। অ্যাডিলেডে ইংরেজদের হারালেই এমসিজির ফাইনালের টিকিট মিলবে। তার আগে এটা জেনে ভারতীয় সমর্থকরা খুশিই হবেন যে, ঐতিহাসিক ভাবে টি২০ ফর্ম্যাটে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতই এগিয়ে।
মুখোমুখি লড়াইতে এগিয়ে ভারত
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর বিগত দেড় দশকে ভারত এবং ইংল্যান্ড আরও ২১টি টি২০ ম্যাচ খেলেছে। আজও পর্যন্ত ভারত ও ইংল্যান্ড মোট ২২ বার টি২০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। আর এর মধ্যে ভারতের ঝুলিতে গিয়েছে ১২টি জয়। ইংল্যান্ড জিতেছে ১০ বার। তাই বলাই যায়, খাতায় কলমে এগিয়ে ভারত। ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভারতের জয়ের হার ৫৪.৫৪ শতাংশ। ২০০৭ সালের পর ২০১২ সালে শেষবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারত ও ইংল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার ইল্যান্ডকে মাত্র ৮০ রানে অলআউট করে দিয়ে ৯০ রানে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। সেই ম্যাচটি হয়েছিল কলোম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। এমনকি ২০২১ সাল থেকে ভারত ৮ বার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ ম্যাচ খেলে জয়ী হয়েছে ৫ বার। অবশ্য, ট্রেন্ট ব্রিজে দুই দলের শেষ টি২০ ম্যাচে জয়ী হয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত চারটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজেই ভারত জয়ী হয়েছে। এত পরিসংখ্যানের মধ্যেও এটা সত্যি, অস্ট্রেলিয়াতে কখনও টি২০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়নি ভারত ও ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যান
এদিকে ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে অধিনায়ক রোহিত শর্মার টি২০-তে সেঞ্চুরি রয়েছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে। বিগত ১৫ বছরে রোহিত শর্মা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মোট ১৪টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। ৩৪.৮১ গড়ে তিনি ৩৮৩ রান করেছেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। এদিকে ভারতের অপর ওপেনার কেএল রাহুলের গড় (২৬.৮৮) সেই অর্থে ভালো না হলেও ইংরেজদের বিরুদ্ধে টি২০-তে শতরান রয়েছে তাঁরও। এছাড়া তিন নম্বরে নামতে চলা বিরাট কোহলি ইংরেজদের বিরুদ্ধে চারটি অর্ধশতরান করেছেন। বাটলারদের বিরুদ্ধে ১৯ ম্যাচে তাঁর গড় ৩৯.২৬। অন্যদিকে ছয় ম্যাচে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ৫২-র গড়ে ২৬০ রান করেছেন সূর্যকুমার যাদব। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নটিংহ্যামে খেলা শেষ ম্যাচে ১১৭ রান করেছিলেন বিশ্বের এক নম্বর টি২০ ব্যাটার। বোলারদের মধ্যে ভুবনেশ্বর কুমার ৯ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯ উইকেট নিয়েছেন। মহম্মদ শামি জীবনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি মাত্র টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৪ সালের সেই ম্যাচে তিনি ৩ উইকেট নিয়েছিলেন।
ভারতের বিরুদ্ধে ইংরেজ ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যান
এদিকে টি২০-তে ভারতের বিরুদ্ধে ইংরেজ অধিনায়ক জস বাটলারের গড় মাত্র ২৮.২১। ২০ ম্যাচে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ৩৯৫ রান করেছেন। ইংল্যান্ডের অপর ওপেনার অ্যালেক্স হেলস নয় ম্যাচে ভারতে বিরুদ্ধে ২৪৫ রান করেন ৩০.৬২ গড়ে। এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে ৯টি টি২০ ম্যাচে কোনও দিন অর্ধশতরানের গণ্ডি পার করেননি বেন স্টোকস। ভারতের বিরুদ্ধে টি২০-তে সব মিলিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে ৮টি টি২০ ম্যাচে মাত্র ৮০ রান করেছেন মোইন আলি। ৭টি উইকেট নিয়েছেন মোইন। এছাড়া মার্ক উড ভারতের বিরুদ্ধে ৪ ম্যাচ খেলে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। এদিকে সাতটি টি২০ ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে মাত্র ২টি উইকেট নিতে পেরেছেন স্যাম কারান। ব্যাট হাতে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর গড় মাত্র ৯। ইংরেজদের মধ্যে কারও সেই অর্থে দুর্দান্ত রেকর্ড নেই ভারতের বিরুদ্ধে। এই আবহে অ্যাডিলেডে মাঠে নামার আগে খাতায় কলমে কিছুটা হলেও পিছিয়েই আছে ইংরেজরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।