আবেগের কাছে কি যুক্তি ও নিয়ম হার মানছে পাকিস্তানিদের? নো বল নিয়ে পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা যে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছেন, তার জেরে এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ যে বিষয়গুলি নিয়ে তাঁরা অভিযোগ তুলছেন, তা আইসিসির নিয়মে ব্যাখ্যা করা আছে।
কোমরের উপরে থাকায় রবিবার মেলবোর্নে ২০ তম ওভারের চতুর্থ বলটি ‘নো বল’ দেওয়া হয়। তাতে ছক্কা মারেন বিরাট কোহলি। তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের একাংশের দাবি, ওটা নো বল ছিল না। সেইসঙ্গে তাঁদের দাবি, ওইরকম একটা চাপের মুহূর্তে তো তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য চাইতে পারতেন দুই অনফিল্ড আম্পায়ার। সেইসঙ্গে স্কোয়ার-লেগে দাঁড়িয়ে থাকা আম্পায়ার মারে এরেসমাস কেন দেরিতে নো বলের ইঙ্গিত করলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
এ স্পোর্টসে পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার ওয়াকার ইউনিস বলেন, 'আমি বলছি না যে ওটা নো বল ছিল। আমি সেটা বলতেও চাই না। আমি বিতর্কে জড়াতে চাই না। কিন্তু আম্পায়ারের তখনই নো বল ডাকা উচিত ছিল। নো বলের আবেদনের অধিকার আছে বিরাট কোহলির এবং সেটা ওর সেটা করা উচিত। মূল আম্পায়ারের সঙ্গে স্কোয়ার-লেগ আম্পায়ারের আলোচনা করা উচিত ছিল এবং তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে উচিত ছিল। সেজন্যই তৃতীয় আম্পায়ার আছেন। ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বটা তাঁর উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল - সেটা নো-বল হোক বা ছক্কা হোক।'
কোমরের উঁচুতে বলের ক্ষেত্রে কী নিয়ম আছে?
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ফ্রন্টফুট (ক্রিজের বাইরে বোলারের পা) নো বলের ক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ার নিজে থেকেই সেই বিষয়টি জানাতে পারেন এবং অনফিল্ড আম্পায়ার নো বল ডাকতে পারেন। কিন্তু কোমরের উপরের বলের ক্ষেত্রে সেটা হয় না। সেই সিদ্ধান্তটা নেন স্কোয়ার-লেগ আম্পায়ার। তারপর মূল আম্পায়ার নো বলের ঘোষণা করেন।
ওয়াকার যে দাবি করেছেন, সেটাও সম্ভব নয়। কারণ আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোমরের উপরে বলে ব্যাটার আউট হয়ে যান, তবেই সেটা নো বল কিনা খতিয়ে দেখার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারকে ‘রেফার’ করতে পারেন অনফিল্ড আম্পায়াররা। যদি ব্যাটার আউট না হন, তাহলে অনফিল্ড আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। অনফিল্ড আম্পায়াররা তৃতীয় আম্পায়ারকে রেফার করতে পারেন না।
আইসিসির ২.১.১ ধারা অনুযায়ী, রান-আউট, স্টাম্পিং, বোল্ড বা হিট উইকেটের ক্ষেত্রে তৃতীয় আম্পায়ারকে ‘রেফার’ করতে পারেন সংশ্লিষ্ট অনফিল্ড আম্পায়ার। অর্থাৎ কোমরের উঁচুতে বলের মাধ্যমে আউট হলে তবেই তৃতীয় আম্পায়ারকে রেফার করা যায়। কিন্তু রবিবার কোমরের উঁচু বলে আউট হননি বিরাট। তাই নিয়মের গণ্ডির মধ্যে থেকেই কাজ করেছেন অনফিল্ড আম্পায়াররা।
অন্যদিকে, স্কোয়ার-লেগ আম্পায়ার দেরিতে নো বল কল করেছেন বলে যে দাবি করেছেন ওয়াকাররা, তা নিয়ে আইসিসির তরফে নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ‘অবিলম্বে’ (আইসিসির ৪১.৭.১ ধারা) নো বল ডাকতে বলা হয়েছে। রবিবার বিরাটের শটটা মারার পর আম্পায়ারের কাছে আবেদন করেন। ততক্ষণে অবশ্য বলটার দিকে ঘুরে যান স্কোয়ার-লেগ আম্পায়ার। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আম্পায়ার দেখতে চাইছিলেন যে বলটা ছক্কা হচ্ছে নাকি ক্যাচ ধরা হচ্ছে। সেই কারণেই কিছুটা পরে নো বল ডেকেছেন। তিনি যা করেছেন, সেটা একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ নয়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।