ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের শেষ ওভারের পরতে পরতে ছিল রোমাঞ্চে ভরা। উত্তেজনা, টেনশনের চোরাস্রোত, আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ, উইকেট পতন- সব মিলিয়ে কোনও রোমহর্ষক কাহিনীর আদর্শ ক্লাইম্যাক্স। তবে ম্যাচ হেরে এই ওভারের একটি নো-বলকে নিয়েই বিতর্ক তৈরি করেছে পাকিস্তান।
মহম্মদ নওয়াজের ওভারের চতুর্থ বল কোহলির কোমরসমান উচ্চতায় করেন নওয়াজ। ডিপ স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে তা মাঠের বাইরে পাঠান কিং কোহলি। কিন্তু তার পর কোহলির দাবিতে, সেটা নো-বল দেন আম্পায়ার। আর এর পরেই উত্তাপ ছড়ায়। আম্পায়ারকে ঘিরে ধরেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। পাক অধিনায়ক বাবর আজম তর্ক জোড়েন। তাঁদের দাবি, ওটা কোনও মতেই নো বল ছিল না। তবে আম্পায়ার তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।
এই ঘটনায় ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন পাকিস্তানের প্রাক্তনীরা। প্রাক্তন অধিনায়ক ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব মালিকরা আবার দাবি করেছেন, এই সিদ্ধান্তটি তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠানো উচিত ছিল।
আরও পড়ুন: অনবদ্য ইনিংসে T20-তে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড, ম্যান অফ দ্য ম্যাচেও নজির কোহলির
A Sports-কে আক্রম বলেছেন, ‘বলটা ক্রমশ নীচু হয়ে যাচ্ছিল। খালি চোখে দেখে কখনও-ই ওটা নো বল মনে হয়নি। ব্যাটে লাগার আগেই বলটা অনেক নীচু হয়ে গিয়েছিল। যে কোনও ব্যাটারই নো বলের দাবি জানাবে। কোহলির কোনও দোষ ছিল না। কিন্তু এত বড় ম্যাচে যেখানে প্রযুক্তি রয়েছে, তা হলে সেটা ব্যবহার করা হোক। কেন ম্যাচটাকে উত্তপ্ত হতে দেওয়া হল?’
আক্রম আরও বলেছেন যে, তিনি এবং ওয়াকার ইউনিস যদি ধারাভাষ্য প্যানেলে থাকতেন, তবে তাঁরা এই বিষয়টি উত্থাপন করতেন। তাঁর দাবি, ‘আমরা ওখানে (ধারাভাষ্য প্যানেল) ছিলাম না। আমি বা ওয়াকার যদি ওখানে থাকতাম, আমরা আমাদের মনের কথা ওখানেই বলতাম।’
ওয়াকার ইউনিস আবার বলেছেন, ‘বল কোমর সমান উচ্চতায় থাকলে স্কোয়ার লেগ আম্পায়ারের প্রথম কাজই হচ্ছে হাত তুলে নো বলের ইঙ্গিত দেওয়া। উনি (মারাইস ইরাসমাস) অভিজ্ঞ আম্পায়ার। সরাসরি নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারতেন। তা না করে তিনি রিপ্লে দেখে এবং কোহলি বলার পর নো বল দিলেন। নো বল ছিল কি না, সেই বিতর্কে যেতে চাই না। কিন্তু আম্পায়ারের উচিত ছিল তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে হারিয়েও পিছিয়ে ভারত, শীর্ষে শাকিবরা, দেখুন পয়েন্ট টেবল
তিনি আরও যোগ করেন, ‘নো-বল চাওয়া বিরাট কোহলির অধিকার এবং ওর সেটা করা উচিত। প্রধান আম্পায়ারের সঙ্গে লেগ আম্পায়ারের পরামর্শ করা উচিত ছিল এবং তাঁদের তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে যাওয়া উচিত ছিল। এটা থার্ড আম্পায়ারের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল।’
ওয়াসিম এবং ওয়াকারের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে শোয়েব মালিকও বলেছেন যে, ‘তৃতীয় আম্পায়ারের মতো বিকল্প হাতের সামনেই ছিল। সেটা আগে নেওয়া হল না কেন? এ ধরনের উত্তেজক ম্যাচে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করা উচিত হয়নি। যে কেউ ভুল করতে পারে। কিন্তু আগে তো তৃতীয় আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলা দরকার।’
আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক মইন খান আবার মনে করেন, এটি নো বল ছিল, তবে তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। জিও সুপারকে মইন বলেছেন, ‘রিপ্লে-তে দেখা গিয়েছে, এটি অবশ্যই নো বল ছিল। আম্পায়ারের উচিত ছিল তবে এই সিদ্ধান্ত তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠানো। এখানে ভুলটা হল যে, তাঁরা তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেননি।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।