অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছানোর কাজটা কঠিন করে ফেলল ভারত। এতদিন পর্যন্ত মিতালি রাজদের হাতেই সেমিফাইনালে পৌঁছানোর চাবিকাঠি ছিল। কিন্তু এবার ভারত শেষ চারে পৌঁছাবে কিনা, সেজন্য প্রচুর সমীকরণ চলে এল।
আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে ভারতকে বাকি দুটি ম্যাচ জিততেই হবে। আগামী মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বাংলাদেশ এবং আগামী ২৭ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নামতে চলেছেন মিতালিরা। যে দুই ম্যাচে জিততেই হবে। সেই দুই ম্যাচে জয় এলে সাত ম্যাচে ভারতের পয়েন্ট দাঁড়াবে আট। একই পয়েন্ট পেতে পারে আরও তিনটি দল (দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং নিউজিল্যান্ড/ইংল্যান্ড)। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে উঠে যাওয়ায় বাকি তিনটি স্থানের জন্য চারটি দলের লড়াই হবে। সেক্ষেত্রে যে দলের নেট রানরেট ভালো থাকবে, তারা শেষ চারের ছাড়পত্র পাবে।
ভারতের সমীকরণ:
১) নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ড (২০ মার্চ): সেই ম্যাচে অবশ্যই নিউজিল্যান্ডের জয় চাইবে ভারত। আগামিকাল নিউজিল্যান্ড জিতে গেলে ইংল্যান্ড টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাবে। ফলে সেমিফাইনালের লড়াই থেকে একটা দল কমে যাবে।
কিন্তু নিউজিল্যান্ডের জয় কেন চাইবে ভারত? কিউয়িরা আগামিকাল জিতে গেলে ভারতের থেকে দু'পয়েন্ট বেশি থাকবে। তবে তাঁরা একটি ম্যাচ বেশি খেলেছেন। সেইসঙ্গে কিউয়িদের থেকে ভারতের নেট রানরেট অনেকটাই ভালো। দু'দলই আট পয়েন্টে শেষ করলে ভারতের অ্যাডভান্টেজ থাকবে।
সেখানে ইংল্যান্ড আগামিকাল জিতলে পাঁচ ম্যাচে চার পয়েন্ট হবে। ভারত এবং ইংল্যান্ডের নেট রানরেটের ফারাক কম থাকায় আগামিকাল মিতালিদের ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন হিথার নাইটরা। যে ইংল্যান্ড শেষ দুটি ম্যাচ বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ম্যাচ দুটিতে বড় ব্যবধানে জয়ের সুযোগ আছে ইংল্যান্ডের। ফলে নেট রানরেটের দিক থেকে শেষবেলায় ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন নাইটরা। তাই ইংল্যান্ডের থেকে কিউয়িদের জয়ে বেশি লাভ হবে ভারতের।
২) ওয়েস্ট ইন্ডিজ: আগামী ২২ মার্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামছেন ক্যারিবিয়ানরা। নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের জয় চাইবে ভারত। তবে সেটা কতদূর সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সেই ম্যাচে জিতলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট দাঁড়াবে আট।
শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জিতলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট হবে ১০। হেরে গেলে পয়েন্ট হবে আট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ানরা হেরে গেলে ভারতের কিছুটা অ্যাভডান্টেজ হবে। কারণ সেক্ষেত্রে ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট দাঁড়াবে আট (ভারত বাকি দুটি ম্যাচ জিতবে ধরে নিয়ে)। আর মিতালিদের থেকে ক্যারিবিয়ানদের নেট রানরেট অনেকটাই কম।
শুধু তাই নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে নামার আগেই সেমিফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। সেটা হলে বাকি দুটি স্থানের জন্য লড়াইটা হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড বা ইংল্যান্ড এবং ভারতের মধ্যে। সেক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকারই জয় চাইবে ভারত।
৩) দক্ষিণ আফ্রিকা: চারটি ম্যাচেই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২২ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামবেন প্রোটিয়ারা। লিগ তালিকার শীর্ষে থাকা দুই দলের লড়াই হতে চলেছে। যদি দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে যায়, তাহলে সেমিফাইনালে উঠে যাবে। হেরে গেলে আট পয়েন্টে থাকবে।
সেক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় দল নির্ধারিত হবে। যে দল জিতবে (ক্যারিবিয়ানরা পাকিস্তানকে হারিয়ে ধরে নিয়ে), সেই দলের পয়েন্ট ১০ হবে। উঠে যাবে সেমিফাইনালে। যে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়েই গলা ফাটাতে পারে ভারত। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে নেট রানরেটের লড়াই হলে ভারতের পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল (অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকা হারবে ধরে নিয়ে। নাহলে একটি ম্যাচ জিতলেই সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবেন প্রোটিয়ারা)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখন দলগুলির যা নেট রানরেট আছে, তার মারাত্মক পার্থক্য হবে না বলে ধরা হয়েছে (অত্যন্ত দুটি শক্তিশালী দলের লড়াইয়ে)।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।