কেএল রাহুল এবং শ্রেয়স আইয়ার কি ২০২৩ এশিয়া কাপের আগে ফিট হয়ে উঠবেন? তাঁরা এশিয়া কাপে খেলতে না পারলেও কি সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে? একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, কেএল রাহুল এবং শ্রেয়স আইয়ার- দুই তারকাকে নিয়ে দ্বিধা রয়েছে এশিয়া কাপে। কারণ তাঁরা এখনও ৫০ ওভারের ক্রিকেট খেলার মতো ফুট হয়ে ওঠেনি।
সম্প্রতি রাহুলের কিপিং অনুশীলনের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। এর মানে এই নয় যে, রাহুল ৫০ ওভারের জন্য এখনই সম্পূর্ণ ভাবে ফিট হয়ে উঠেছেন। তবে এই ভিডিয়ো দেখার পর ভক্তরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, ডানহাতি এই তারকা ব্যাটার দীর্ঘ চোট সারিয়ে খুব দ্রুত ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করবে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ২০২৩ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালী ফিল্ডিং করার সময়ে উরুতে চোট পেয়েছিলেন রাহুল। যে কারণ তিনি আইপিএলের বাকি মরশুমে খেলতে পারেননি। এমন কী এর পর তিনি ২২ গজের নামতেই পারেননি। লন্ডনে অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছিল এবং কয়েক সপ্তাহ আগে নেটে ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। তাঁর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, ৫০ ওভারের ক্রিকেট খেলার মতো শক্তি যাতে তাঁর চোটগ্রস্ত উরু ফিরে পায়, সেই চেষ্টায় সফল হওয়া।
ভারতের এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় রাহুল নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। টি-টোয়েন্ট এবং টেস্টে তাঁর খারাপ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও, ওডিআই-তে তিনিই ভারতের প্রথম পছন্দের রক্ষক-ব্যাটসম্যান। ৫ নম্বরে ব্যাট করার ক্ষেত্রে তাঁর পরিসংখ্যান সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা। যদি তিনি পুরোপুরি ফিট না হন, তবে এটি ভারতের জন্য একটি বিশাল বড় ধাক্কা হবে। কারণ টিম ইন্ডিয়াকে তখন আর একজন উইকেটকিপারের সন্ধান করতে হবে, যিনি আবার মিডল অর্ডারে কার্যকর ভাবে ব্যাট করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: PCB-তে ঐতিহাসিক পরিবর্তন, বিশাল অঙ্কের বেতন পেতে চলেছেন বাবর-রিজওয়ান-আফ্রিদিরা
শ্রেয়স আইয়ারের ব্যাপারটা একটু বেশিই উদ্বেগজনক। ডানহাতি-ব্যাটার ব্যাক ইনজুরি থেকে সেরে উঠছেন। তবে এই চোট তাঁকে ২০২৩ পুরো আইপিএল থেকেই ছিটকে দিয়েছে। তবে তাঁকে বিশ্বকাপের দলে থাকতে হলে, নিজের ফিটনেসের প্রমাণ দিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের হোম সিরিজে খেলতে হবে। শ্রেয়স আইয়ার বেশ কিছু দিন ধরে ওডিআই-তে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বর জায়গায় খেলে থাকেন। প্রায় সব পরিস্থিতিতেই চারে ব্যাট করতে নেমে ধারাবাহিক ভাবে পারফরম্যান্স করে জায়গাটি আরও মজবুত করেছেন শ্রেয়স। তিনি না খেলতে পারলে, ভারতের জন্য চার নম্বর জায়গায় পরিবর্ত খোঁজাটা কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
আইয়ার এবং রাহুল ফিট না হলে ভারতের ব্যাকআপ কারা?
ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট সেরা দল গড়ার পক্ষপাতী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থেকেই অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং কোচ রাহুল দ্রাবিড় ইতিমধ্যেই ব্যাকআপ খুঁজতে শুরু করেছেন। তবে কেএল রাহুল এবং শ্রেয়স আইয়ার সময় মতো ফিট না হলে, তাঁদের ব্যাকআপ কারা হবেন? যা পরিস্থিতি, তাতে সূর্যকুমার যাদব এবং সঞ্জু স্যামসন স্পষ্ট পছন্দের বলে মনে হচ্ছে। তবে তারা সরাসরি একাদশে নাও খেলতে পারেন।
ওয়ানডেতে স্কাই কাঙ্খিত সাফল্য পাননি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ দু'টি ওডিআইতে তিনি যেখানে ব্যাটিং করেছিলেন, সেই ছয় নম্বর স্থানটির জন্য তাঁকে সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে তিনি শ্রেয়শ আইয়ার বা কেএল রাহুলের বদলি হতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: IPL মাতিয়েছেন কিন্তু দেশের হয়ে খেলা যে অনেক শক্ত, বুঝতে পারছেন আর্শদীপ
সঞ্জু স্যামসন কখনও-ই কোনও ফরম্যাটে ভালো রান পাননি। কিন্তু তিনি ওডিআই-তে চার নম্বরে বা তার নীচে ব্যাটিং করে খুব খারাপ পারফরম্যান্স করেননি। তিনি রাহুলের পরিবর্ত হলেও হতে পারেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি রাহুলের অনুপস্থিতিতে ইশান কিষানের পারফরম্যান্সই তাঁকে প্রথম পছন্দ করে তুলেছে।
রাহুল এবং শ্রেয়স ফিট না হলে বিরাট কোহলিকে তাঁর তিন নম্বর জায়গা বদলাতে হতে পারে
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে, যদি রাহুল এবং শ্রেয়স আইয়ার এশিয়া কাপে খেলতে না পারেন, তবে ভারত তাদের ব্যাটিং-অর্ডার সম্পূর্ণরূপে বদলে ফেলবে। কিষান খেললে, তিনি ওপেন করবেন। তাঁর সঙ্গে ওপেন করতে পারেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সে ক্ষেত্রে শুভমন গিল কোথায় ব্যাট করবেন? এটা একটা কঠিন প্রশ্ন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে এবং ক্যারিয়ারের শুরুতে গিল ৩ নম্বর বা তার নীচে ব্যাট করেছেন। যদি তাঁকে ৩ নম্বরে ব্যাট করার দায়িত্ব দেওয়া হয়, তার মানে বিরাট কোহলিকে সেই জায়গা ছাড়তে হবে। এটি সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত হবে। কারণ বিশ্ব ক্রিকেটে এই মুহূর্তে বিরাট কোহলির চেয়ে তিন নম্বরে সেরা ওডিআই ক্রিকেটার নেই। ওয়ানডে-তে তাঁর ১২৮৯৮ রানের মধ্যে ১০৭৭৭ রান এসেছে ৩ নম্বরে ব্যাট করার সময়ে। এই পজিশনে খেলেই ৪৬টি ওডিআই সেঞ্চুরির মধ্যে ৩৯টিই করেছেন তিনি।
তবে টিম ম্যান হিসেবে শ্রেয়স আইয়ারের অনুপস্থিততে কোহলিকে সে ক্ষেত্রে চারে ব্যাট করতে হতে পারে। এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে শুভমন গিলকে চারে ব্যাট করতে বলা সঠিক সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে কোহলি নীচে নেমে যেতে পারেন, হার্দিক পান্ডিয়া ৫ নম্বরে এবং স্যামসন বা স্কাই ৬ নম্বরে ব্যাট করতে পারেন। যদি রাহুল ফিট থাকে, যা ফলাফলের সম্ভাবনা বেশি বলে মনে হচ্ছে, তবে হার্দিক ছয়ে ব্যাট করতে পারেন।
ভারতের অন্য বিকল্প কী?
ভারত যদি বিরাট কোহলির ব্যাটিং পজিশন বদলাতে না চায়, তবে হার্দিককে ৪ নম্বরে ব্যাট করতে পাঠাতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে আইপিএলে তিনি চারে ব্যাট করেছেন। ভারতের হয়েও করেছেন। রোহিতের সঙ্গে শুভমন গিল ওপেন করলে, স্যামসন বা স্কাই ছয় নম্বরে ব্যাট করতে পারেন। তবে রাহুল ফিট থাকলেই, সেটা সম্ভব হবে। যদি তিনি ফিট না হন, তবে ইশান কিষান প্রথম পছন্দের কিপার হয়ে যাবেন এবং তিনিই ওপেন করবেন, যদি না ভারত স্যামসনকে কিপিংয়ের দায়িত্ব দিতে চায়।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।