সালটা ২০১০। দক্ষিণ আফ্রিকার সকার সিটি স্টেডিয়ামে স্পেন বনাম নেদারল্যান্ডস ফাইনাল। ৬১ মিনিটের আর্জেন রবেনের শটটা ইকের কাসিয়াসের ডান পায়ে লেগে দ্বিতীয় পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। সেটা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা সেভই ছিল না, কাসিয়াসের ডান পায়ের জাদুতে সেদিন প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল স্পেন।
কিন্তু আর ফুটবল মাঠে আর দেখা যাবে না কাসিয়াসের সেই অবিস্মরণীয় সেভ। কারণ পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিলেন ‘সেন্ট কাসিয়াস’। গত বছর মে মাসে হার্ট অ্যাটাকের পর আর কোনও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে খেলেননি ৩৯ বছরের সদ্য প্রাক্তন তারকা ফুটবলার। তবে সম্প্রতি এফসি পোর্তোর কাপ জয়ের উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার টুইটারে নিজের অবসর ঘোষণা করে বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলকিপার বলেন, ‘আপনি কোন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন এবং কোন কোন মানুষ আপনার সঙ্গে আছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। গন্তব্যটা নয়, সেটা আপনাকে যেখানে নিয়ে যায়। আপনি যা চান, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনি সবসময় সেখানে পৌঁছে যেতে পারেন। আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি, এটাই সেই পথ এবং গন্তব্য, যা নিয়ে আমি চিরকাল স্বপ্ন দেখেছি।’

অবসর ঘোষণার পর কাসিয়াসকে ‘আমাদের ক্লাব এবং বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম এক কিংবদন্তী’ এবং ‘রিয়াল মাদ্রিদ এবং স্পেনীয় ফুটবলের ইতিহাসে সেরা গোলকিপার’ হিসেবে মন্তব্য করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। যে ক্লাবে মাত্র ন'বছরে যোগ দিয়েছিলেন কাসিয়াস। তারপর প্রথম দলের হয়ে ১৬ টি মরশুম তেকাঠির নীচে দাঁড়িয়েছেন। অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড পরেছেন। সবমিলিয়ে রিয়ালের হয়ে ৭২৫ ম্যাচ খেলে পাঁচটি লা লিগা, তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-সহ ১৯ টি ট্রফি জিতেছেন।
যদিও শেষবেলায় ক্লাবে প্রাপ্য সম্মান পাননি। ক্লাবের তরফে ন্যূনতম বিদায় সংবর্ধনারও আয়োজন করা হয়নি। সাংবাদিক বৈঠকে চোখের জলে একাকী নিজের প্রিয় ক্লাব ছেড়ে গিয়েছিলেন। তারপর পোর্তোতে পাঁচ বছর কাটিয়েছেন কাসিয়াস। আর স্পেনের স্বর্ণযুগে তো তিনি দলের অন্যতম ভরসাযোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন। জিতেছেন একটি বিশ্বকাপ এবং দুটি ইউরো কাপ।