টিম ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিনের শেষে বেশ চাপে রয়েছে। অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে রোহিত শর্মার দল। কারণ অজিরা প্রথম দিনেই মাত্র ৩ উইকেট হারিে ৩২৭ রানের বিশাল স্কোর করে ফেলেছে। ট্রেভিস হেড দুরন্ত ছন্দে ইতিমধ্যে সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন। আর তাঁর সঙ্গী স্টিভ স্মিথ শতরানের অপেক্ষায়। দিনের শেষে হেড মাত্র ১৫৬ ডেলিভারিতে ১৪৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তারকা ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ আবার উইকেট আঁকড়ে থেকে ২২৭ বল খেলে ৯৫ করে ফেলেছেন। সেঞ্চুরি থেকে তিনি আর ৫ রান দূরে।
ওভালে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত শুরুর দিকের কিছুটা সময়ে কার্যকরী বলে হয়েছিল। তার পরেই বুমেরাং হতে শুরু করে। ম্যাচ শুরুর পরেই মাত্র চতুর্থ ওভারে উসমান খোয়াজাকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বড় ঝটকা দিয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজ। ডেভিড ওয়ার্নারকে (৪৩) লাঞ্চের মিনিট পাঁচেক আগে আউট করেন শার্দুল ঠাকুর। আর লাঞ্চের ঠিক পরে মহম্মদ শামি দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে বিপজ্জনক মার্নাস ল্যাবুশানকে (২৬) বোল্ড করেন।
আরও পড়ুন: পরিস্থিতি দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- অশ্বিনকে বাদ দেওয়া নিয়ে সাফাই বোলিং কোচের
তখন মনে হচ্ছিল, ভারত একেবারে ঠিকঠাক শুরু করেছে। কিন্তু তার পর থেকেই খেলার রং বদলাতে শুরু করে। আকাশে মেঘ সরে রোদ হাসে।আর কাঁদতে হয় ভারতীয় বোলারদের। ভারতীয় পেসারদের চাপে রাখতে ট্রেভিস হেড পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। লাল বলের ক্রিকেটে একদিনের ম্যাচের ভঙ্গিমায় খেলতে থাকেন হেড। আর তাতেই চাপে পড়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। উল্টোদিকে ঠাণ্ডা মাথায় উইকেট আঁকড়ে রাখার স্ট্র্যাটেজি নেন স্মিথ। দিনের শেষে এই জুটি ২৫১ রানের বড় পার্টনারশিপ গড়ে অপরাজিত রয়েছেন।
দিনের শেষে চালকের আসনে অজিরা। ভারত কোণঠাঁসা। আর এর জন্য রোহিত শর্মাকেই দায়ী করেছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে, রোহিত শর্মার ফিল্ড প্লেসমেন্টের কারণে অস্ট্রেলিয়া সহজে রান পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর একটা সময় ৩ উইকেটে ৭৬ রান ছিল। কিন্তু রোহিত শর্মা এমন ভাবে ফিল্ডিং সাজিয়েছিলেন, যাতে অস্ট্রেলিয়া সহজেই রান করতে থাকে। স্টিভ স্মিথ এবং ট্রেভিস হেড স্ট্রাইক পরিবর্তন করতে থাকেন। যার ফলাফল এখন চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া।
সৌরভ ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় বলেন, ‘ভারত কিছুটা হতাশই করছে। অস্ট্রেলিয়ার ৭৬/৩ ছিল। এবং সেখানে অজিদের আরও চাপে ফেলা দরকার চিল। আমি জানি যে, এই ক্ষেত্রে বড় ধরনের পার্টনারশিপ হয় ক্রিকেটে। একটি ব্যাটিং দল থাকবে, যারা ঘুরে দাঁড়িয়ে ভালো খেলবে। আমি ভেবেছিলাম, ভারত ভালো শুরু করেছে। লাঞ্চের ঠিক পরে খেলার রং বদলাতে শুরু করে দেয়।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি মনে করি, ট্রেভিস হেডকে ভারত খুব সহজেই রান করতে দিয়েছে। আমি জানি, ও ভালো ফর্মে আছে, অনেক রান করেছে,। তবুও অজিরা ৭৬/৩ ছিল। আমার মনে হয়, রোহিত শর্মা ওর ফিল্ডিং প্লেসমেন্ট ঠিকঠাক করতে পারেনি। এমন ভাবে ও ফিল্ডিং সাজিয়েছিল যে, অস্ট্রেলিয়া সহজেই রান পেতে থাকে এবং ভালো অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছে।’
রবি শাস্ত্রী আবার ভারতের ডিফেন্সিভ মানসিকতার জন্য ক্ষোভ উগরেছেন। বুধবার প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়ার পর শাস্ত্রী আইসিসিকে বলেছেন, ‘ভারতের মানসিকতা যদি ইতিবাচক থাকত, তবে তারা ব্যাট করতে চাইত। প্রথম সেশনে ধরে খেলে, তার পর দেখতে হত, স্কোরবোর্ডে ২৫০ রান উঠছে কিনা! ২৫০-২৬০-এর বেশি ভাবার দরকার ছিল না। যদি পরিস্থিতি আরও ভালো টিক থাকত, তবে প্রথম সেশন দেখে নিয়ে আরও বেশি রান করতে পারত। আমি মনে করি, অস্ট্রেলিয়া এখন ভালো জায়গায় রয়েছে। ভারত খেলায় ফিরতে পারবে কিনা, সেটা অস্ট্রেলিয়ার উপরেই এখন নির্ভর করবে। ’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।