আইসিসি ট্রফি কি ফের হাতছাড়া হতে বসেছে? বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিনের শেষেই এই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বুধবার অস্ট্রেলিয়া দিনের শেষে ৩ উইকেট ৩২৭ করে ফেলে। ২৫১ রানের বিশাল পার্টনারশিপ করেন ট্রেভিস হেড এবং স্টিভ স্মিথ। তারা ভাঙে ৯০ বছরের পুরনো রেকর্ড। ১৯৩০ সালে ওভালে চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ ছিল ডন ব্র্যাডম্যান এবং আর্চি জ্যাকসনের। ২৪৩ রান তুলেছিল এই জুটি। এ দিন তাঁদের ছাপিয়ে ওভালে নতুন রেকর্ড করেন হেড-স্মিথ জুটি।
ট্রেভিস হেড সেঞ্চুরি করে ফেলেন। মাত্র ১০৬ বলে একশোয় পৌঁছন বাঁ-হাতি তারকা। এটি হেডের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। তবে দেশের বাইরে প্রথম শতরান, লন্ডনেও প্রথম। লাল বলের ক্রিকেটে একদিনের ম্যাচের ভঙ্গিমায় খেলেন হেড। কঠিন সময় নেমে অনবদ্য ব্যাটিং। দিনের শেষে ১৫৬ বলে ১৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন হেড। তাঁর ইনিংস সাজানো ২২টি চার এবং একটি ছয়ে।
আরও পড়ুন: পরিস্থিতি দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- অশ্বিনকে বাদ দেওয়া নিয়ে সাফাই বোলিং কোচের
অন্য দিকের উইকেট আগলে রাখেন স্মিথ। তিনি ধরে ধরে খেলতে থাকেন। দিনের শেষে ৯৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন স্মিথ। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ১৪টি চার। এই দুইয়ের যুগলবন্দিতে ক্রমশ ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ভারত। ৩ উইকেটে ৭৬ রান থেকে ৩ উইকেটে ৩২৭ করে ফেলেছে। দ্বিতীয় দিন রানের পাহাড় গড়ার লক্ষ্য নিয়েই নামবে অজিরা।
উইকেট দেখে বিভ্রান্ত ভারতীয় শিবির। সবুজ পিচ এবং মাথার ওপর মেঘলা আকাশ দেখে টেস্টের সেরা বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বাদ দিয়ে চার পেসারে নামে ভারত। একমাত্র স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা। ওভালে সকালের পরিবেশ এবং পরিস্থিতি দেখে টসে জেতা মাত্র তড়িঘড়ি বোলিং নেন রোহিত শর্মা। যে সিদ্ধান্তটা বুমেরাং-ই হয়ে গিয়েছে।
টেস্টের শুরুতে আকাশ কালো মেঘে ঢাকা থাকলেও বেলা বাড়তেই মেঘ সরে রোদ উঁকি মারে। তাতেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। বোলারদের পরিবর্তে উইকেট থেকে সাহায্য পেল ব্যাটাররা। সুতরাং দেখতে গেলে, ভারতের দুটো ভুল- ১) অশ্বিনকে না খেলানো, দুই) প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত- ম্যাচে অনেকটাই পিছিয়ে দিল রোহিত বাহিনীকে। এখন যদি ভারতীয় ব্যাটাররা দুরন্ত কিছু না করে, তবে কপালে দুঃখ আছে টিম ইন্ডিয়ার। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, শুভমন গিলদের উপরই সবটা এখন নির্ভর করছে।
তবে প্রথম দিনের শুরুটা কিন্তু খারাপ করেননি ভারতীয় পেসাররা। শুরুতেই উসমান খোয়াজার উইকেট তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে ধাক্কা দেন মহম্মদ সিরাজ। শূন্য রানে ফেরেন অজি ওপেনার। ২ রানে প্রথম উইকেট হারায় অজিরা। ডেভিড ওয়ার্নার শুরুতে সুবিধা করতে না পারলেও, ধীরে ধীরে উইকেটে থিতু হয়ে যান। অন্য প্রান্তে ঠাণ্ডা মাথায় খেলছিলেন মার্নাস লাবুশেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঠিক আগে আউট হন ওয়ার্নার। ৬০ বলে ৪৩ রান করে শার্দুল ঠাকুরের বলে উইকেটের পেছনে শ্রীকর ভরতের হাতে ধরা পড়েন অজি তারকা। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই মার্নাস ল্যাবুশেনকে (২৬) বোল্ড করে আশার আলো দেখিয়েছিলেন মহম্মদ শামি। ৭৬ রানে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তার পর থেকেই ভারতের যাবতীয় পরিকল্পনা ঘেঁটে যায়।