টিম ইন্ডিয়ার তারকা ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব বুধবার হংকংয়ের বিরুদ্ধে একেবারে আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন। তিনি মাত্র ২৪ বল খেলে ৬৮ রান করে দলের স্কোর ভদ্রস্থ জায়গায় নিয়ে যান। তাঁর এই রানের সৌজন্যেই হংকং-কে ৪০ রানে হারিয়ে ২০২২ এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠে পড়ে ভারত। সূর্যের বিধ্বংসী ইনিংসের পর বিরাট কোহলি তাঁকে মত নত করে কুর্নিশ জানিয়েছেন। আর তাতে একেবারে আবেগাপ্লুত স্কাই।
দ্রুত গতিতে রান তোলার লক্ষ্যেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন সূর্যকুমার। তাঁর ইনিংসে ভর করেই ভারতীয় দল হংকংয়ের বিরুদ্ধে সম্মানজনক ১৯২ রান তুলতে পেরেছে। ভারতীয় ইনিংসের শুরুতে লোকেশ রাহুল (৩৯ বলে ৩৬) ছিলেন কিছুটা মন্থর। যদিও রোহিত (১৩ বলে ২১) শুরুটা আক্রমণাত্মক মেজাজেই করেছিলেন। কিন্তু তিনি উইকেটে বেশীক্ষণ স্থায়ী হননি। রাহুল আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন ভারতের স্কোর ছিল ১৩ ওভারে মাত্র ৯৪ রান। শেষ সাত ওভারে ওঠে ৯৮ রান। উইকেটে সূর্যকুমারের সঙ্গে ছিলেন বিরাট কোহলি। তবু তাঁদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৬৮ রানই এল সূর্যকুমারের ব্যাট থেকে। যার মধ্য়ে ২৬ রান সূর্য করেছেন শেষ ওভারে। শেষ ওভারে চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সূর্য।
আরও পড়ুন: সূর্যকুমার আসার পরেই আমাদের পা হড়কে যায়- স্বীকার করলেন হংকং অধিনায়ক
সূর্যের বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখে কোহলি যেন মন্ত্রমুগ্ধ। পুরো ভারত যখন সূর্যকুমারের ঝড়ো ইনিংসকে উপভোগ করছিলেন, তখন উল্টোপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছেন নিঃসন্দেহে কোহলি। মন্থর পিচে সূর্যকুমারের আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে কোহলি নিজেই যেন চমকে গিয়েছেন। মাঠের সর্বত্র শট খেলেছেন সূর্য। তিনি বুধবার মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি হয়ে উঠেছিলেন।
সূর্যকুমার যখন শেষ ওভারের চতুর্থ ছক্কা মেরেছিলেন, কোহলি তখন রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। অবাক হয়ে সূর্যকে ইশারায় জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘ভাই এটা কী ছিল?’ সেই ভঙ্গি এখন রীতিমতো ভাইরাল। পাশাপাশি ভারতের প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ার পরে সূর্যকুমার যাদবকে কুর্নিশ জানাতে মাথাও নত করেন কোহলি। বুকে হাত দিয়ে মাথা হেঁট করে সূর্যকে অভিবাদন জানান প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। আর এই ভিডিয়োই এখন নেটমাধ্যমে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।
আর বিরাটের এমন সৌজন্যে আবেগপ্রবণ সূর্যকুমার যাদব। তিনি ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘এটি খুবই স্পর্শকাতর সৌজন্য ছিল। আমি এমনটা আগে কখনও দেখিনি। আমি ওর (কোহলি) দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম, কেন ও সামনে এগোচ্ছে না? তার পর আমি ওর কাছে এসে,একসঙ্গে হাঁটার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।। আমি ওর সঙ্গে ব্যাটিং উপভোগ করেছি। আমি এ কথা ওকে বলেওছি।।’
সূর্যকুমার যখন ক্রিজে আসেন, তখন ভারতের ১৩ ওভারে সংগ্রহ ছিল ৯৪ রান। এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্কাই বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন ছিল যে, আমাকে ক্রিজে গিয়ে দ্রুত রান যোগ করতে হয়েছিল। উইকেট শুরুতে একটু ধীরগতির ছিল। এই নিয়ে আমি বিরাট কোহলির সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ও বলেছিল, শুধু নিজেকে মেলে ধরো এবং নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলো। ব্যাটিং নিয়েও আমার খুব পরিষ্কার পরিকল্পনা ছিল। আর ওর সঙ্গে ব্যাট করাটা বেশি মজার ছিল।।’