২০২২ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে এই টুর্নামেন্টে প্রথম পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে ভারত। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থাকা টিম ইন্ডিয়া সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে। আর এই ম্যাচে হারের দায় চাপানো হচ্ছে আর্শদীপের সিংয়ের উপর। ১৭.৩ ওভারে আসিফ আলির একটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেন আর্শদীপ সিং। যেটাকে সকলে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলছেন। যে কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় আর্শদীপের তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে। তবে ম্যাচের পরে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি থেকে হরভজন সিং, ইরফান পাঠান, পাকিস্তানর প্রাক্তনী মহম্মজ হাফিজ সকলেই তরুণ ফাস্ট বোলার আর্শদীপের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সমর্থনে কোহলিরা রীতিমতো সরব।
ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিরাট কোহলি বলেন, ‘চাপের মধ্যে যে কারও সঙ্গে এটা হতে পারে। এটা একটা বড় ম্যাচ, পরিস্থিতিও ছিল টানটান। আমার মনে আছে, আমি যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমার প্রথম ম্যাচ খেলেছিলাম, তখন বাজে শট খেলে আউট হয়েছিলাম। চাপের মুখে যে কেউ ভুল করতেই পারে। খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ককে ধন্যবাদ এই মুহূর্তে দলের পরিবেশ খুবই ভালো। তাই একজনের উচিত নিজের ভুল স্বীকার করা, নিজের পারফরম্যান্সে মনোনিবেশ করা এবং আবারও সেই চাপের পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা।’
আরও পড়ুন: সমালোচিত হলেন আর্শদীপ, কিন্তু দোষ কম নয় ভুবি, যুজি, হার্দিকেরও
কোহলি ছাড়াও ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইরফান পাঠান, হরভজন সিং এবং প্রাক্তন পাক তারকা মহম্মদ হাফিজও আর্শদীপের সমর্থনে টুইট করেছেন। ইরফান যেমন লিখেছেন, ‘আর্শদীপ একজন শক্তিশালী ব্যক্তি, এমনই থাকুন।’ প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিং লিখেছেন, ‘আর্শদীপ সিংয়ের সমালোচনা করা বন্ধ করুন, কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে একটি ক্যাচ ছাড়ে না। আমরা আমাদের ছেলেদের জন্য গর্বিত, পাকিস্তান এখানে অনেক ভালো খেলা খেলেছে। লজ্জা এমন লোকেদের জন্য, যাঁরা এই প্ল্যাটফর্মে আর্শ এবং দল নিয়ে খারা কথা বলছে এবং আমাদের নিজেদের ছেলেদের ছোট করছে.. আর্শ হল গোল্ড।’ হাফিজ আবার লিখেছেন, ‘ভারতীয় দলের সমর্থকদের কাছে আমার অনুরোধ, খেলাধুলায় আমরা মানুষ হিসেবে ভুল করি। দয়া করে এই ভুলগুলো নিয়ে কাউকে হেয় করবেন না @আর্শদীপসিং।’
সচিন তেন্ডুলকরের আবার অন্য কথা বলছেন। তাঁর দাবি, মহম্মদ রিজওয়ান এবং মহম্মদ নওয়াজের জুটি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ এই ম্যাচে হারের দায় কিন্তু বোলারদেরও। কারণ এই দুই ক্রিকেটারকে তারা সহজে ফেরাতে পারেননি। এবং রান করা আটকাতে পারেননি। প্রসঙ্গত, ভুবনেশ্বর কুমার, যুজবেন্দ্র চাহাল, হার্দিক পাণ্ডিয়ারাও খারাপ বল করেছেন। তাঁরা কার্যত হরির লুটের মতো রান বিলিয়েছেন। বরং আর্শদীপ এবং রবি বিষ্ণোই সেই তুলনায় কম রান দিয়েছেন। এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলির (৬০) হাফ সেঞ্চুরির ভিত্তিতে ভারত পাকিস্তানের সামনে জয়ের জন্য ১৮২ রানের লক্ষ্য রেখেছিল। এক উইকেট বাকি থাকতেই এই স্কোর অর্জন করে বাবর আজমের দল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের কাছে হারের পর কোন অঙ্কে ফাইনালে উঠতে পারে ভারত?
ভারতের হারের পর সচিন তেন্ডুলকর টুইট করে লিখেছেন, ‘IND বনাম PAK ম্যাচ সব সময়েই রোলারকোস্টার রাইড। বিরাট কোহলির একটি ভালো ইনিংসের সাহায্যে ভারত প্রতিযোগিতামূলক স্কোর করেছিল, কিন্তু মহম্মদ রিজওয়ান এবং মহম্মদ নওয়াজের জুটি আমার জন্য একটি গেম চেঞ্জার ছিল। সব মিলিয়ে ভালো প্রতিযোগিতা!’
১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে শর্ট থার্ডম্যানের নির্দেশে আসিফ আলির সহজ ক্যাচ ফেলে দেন আর্শদীপ। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে আর্শদীপ যখন আসিফের ক্যাচ ফেলে দেন, তখন রানের খাতাই খোলেননি পাক তারকা। এর পর ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৮ বলে ২টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৬ রানের ইনিংস খেলেন। যা পাকিস্তানের জয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। সেই সময় যদি আর্শদীপ যদি আসিফের ক্যাচ মিস না করতেন, তা হলে হয়তো ম্যাচের ফল ভারতের পক্ষেই যেত।
সুপার ফোরে টিম ইন্ডিয়ার পরবর্তী ম্যাচ ৬ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। আর রোহিত শর্মার দল ৮ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে। ভারতকে ফাইনালে উঠতে হলে, যে কোনও অবস্থাতেই দু'টি ম্যাচই জিততে হবে। টিম ইন্ডিয়ার একটি ভুল কিন্তু তাদের ফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে দিতে পারে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।