কুলদীপ যাদবদের ঝড়ে মাত্র ৯৯ রানেই শেষ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। হেনরিক ক্লাসেনের ৩৪ রানই প্রোটিয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাকিদের অবস্থা তথৈবচ। ২০ রানের গণ্ডিই টপকাতে পারেননি কেউ। ভারতের সামনে মাত্র ১০০রানের লক্ষ্য রেখেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সহজেই ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় ভারত। ম্যাচের পর হতাশা উগড়ে দিলেন ডেভিড মিলার। সঙ্গে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে খুঁজলেন কিছু অজুহাতও।
ম্যাচের পর প্রোটিয়া অধিনায়ক ডেভিড মিলার পরিষ্কার বলে দেন, ‘মাত্র ৯৯ স্কোর করে জেতা যায় না। এই ভাবে সিরিজ শেষ করাটা সত্যিই হতাশাজনক।’ এর সঙ্গেই অবশ্য অজুহাতের সুরে যোগ করেছেন, ‘পিচে বল ঘুরছিল। আবার বৃষ্টির কারণে পিচটি কভার করা ছিল বলে নীচে কিছুটা শক্ত ছিল। আমরা নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সত্যিই ভালো করেছি। ওয়ানডেতে আমাদের শুধু আরও ভালো করার অপেক্ষা।’
আরও পড়ুন: পন্টিংয়ের স্বপ্নের দলের বিশ্বরেকর্ড ছুঁয়ে ফেলল টিম ইন্ডিয়া
প্রসঙ্গত ভারতের বিরুদ্ধে এই ওডিআই সিরিজের তিন ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিলেন তিন জন। প্রথম ম্যাচে তেম্বা বাভুমা নেতৃত্ব দেন। তিনি অসুস্থ থাকায় দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়ক হন কেশব মহারাজ। সিরিজ নির্ণায়ক তথা তৃতীয় ম্যাচে কেশব মহারাজকেও বিশ্রাম দেওয়ায় নেতৃত্ব দেন মিলার।
দিল্লির বৃষ্টিতে ভেজা আবহাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে মঙ্গলবার টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শিখর ধাওয়ান। তাঁর এই সিদ্ধান্ত কাজে লেগে যায়। দিল্লির ২২ গজে সুবিধা করতে পারলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। ২৭.১ ওভারে মাত্র ৯৯ রানেই শেষ হয়ে গেল সফরকারীদের ইনিংস। ভারতীয় স্পিনারদের বল বুঝতেই পারলেন না ডেভিড মিলাররা।
প্রথম থেকেই ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারাতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। হেনরিক ক্লাসেন, জানেমন মালান এবং মার্কো জানসেনের ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বাকিরা কেউই দু’অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। ক্লাসেনের ব্যাট থেকে এল ৪২ বলে ৩৪ রান। চারটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। ওপেন করতে নেমে মালানের সংগ্রহ ২৭ বলে ১৫। তাঁর ইনিংসে রয়েছে তিনটি চার। এ ছাড়া মার্কো জানসেনের সংগ্রহ ১৯ বলে ১৪। বাকিরা কেউই উইকেটে থিতু হতে পারলেন না।
আরও পড়ুন: 'বোলো তারা রারা', সিরিজ জিতে সাজঘরে ফাটিয়ে নাচ শিখর ধাওয়ানদের: ভিডিয়ো
দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুতেই ধাক্কা দেন মহম্মদ সিরাজ। তাঁর পর ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদব, শাহবাজ আহমেদরাও নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট তুলে নিলেন। ভারতের সফলতম বোলার কুলদীপ মাত্র ৪.১ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। বিয়র্ন ফরটুইন এবং এনরিখ নরকিয়াকে পর পর দু’বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন কুলদীপ। যদিও সেটা কাজে লাগেনি। ১৫ রানে ২ উইকেট নিলেন ওয়াশিংটন। ১৭ রানে ২ উইকেট সিরাজের। বাংলার শাহবাজ ২ উইকেট নিলেন ৩২ রান খরচ করে।
জয়ের জন্য ১০০ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ভারত শুরুতে আগ্রাসী মেজাজ দেখালেও শিখর ধাওয়ান ব্যর্থ হন। তিনি মাত্র ৮ রান করে রান আউট হয়ে গেলেও উইকেটের অন্য প্রান্তে মেজাজে ছিলেন শুভমন গিল। তিন নম্বরে নেমে ইশান কিষাণও করলেন মাত্র ১০ রান। তবে ৫৮ রানে ২ উইকেট হারালেও লক্ষ্য বেশি না হওয়ায় সমস্যা হয়নি ভারতের। শুভমনের সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন শ্রেয়স আইয়ারও। দলকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দিয়ে আউট হন শুভমন। ৫৭ বলে ৪৯ রান করলেন আটটি বাউন্ডারির সাহায্যে। এক রানের জন্য মিস করলেন হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত শ্রেয়স ২৮ রানে এবং সঞ্জু স্যামসন ২ রানে অপরাজিত থাকেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ফরটুইন ২০ রান দিয়ে ১ উইকেট এবং লুঙ্গি এনগিডি ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। ৭ উইকেটে তৃতীয় ওডিআই জিতে সিরিজ পকেটে পোড়েন শিখর ধাওয়ানরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।