টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতের করা ৩ উইকেটে ২৩৭ রানের বিশাল স্কোর তাড়া করতে নেমে শুরুতেই প্রোটিয়া ব্রিগেডকে বড় ধাক্কা দিয়েছিলেন আর্শদীপ সিং। তবে বিধ্বংসী মেজাজে ডেভিড মিলার সব হিসেবই প্রায় উল্টে দিচ্ছিলেন। কানের কাছ ঘেষে বেরিয়ে গিয়েছে ভারত। এ দিন দুরন্ত সেঞ্চুরি হাঁকান মিলার। একা হাতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে দু'শোর গণ্ডি পার করান তিনি। কিন্তু তাঁর শতরানেও হার আটকাতে পারেনি প্রোটিয়ারা। কারণ নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানেই শেষ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ১৬ রানে ম্যাচ জিতে ইতিহাস লেখে ভারত। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ জিতে গেলেন রোহিত শর্মারা।
তবে তাঁর দল হারলেও মিলার কিন্তু করে ফেলেছেন একাধিক নজির:
১) পাঁচে ব্যাট করতে নেমে একাধিক বার টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির রেকর্ড- রবিবার গুয়াহাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে ৪৭ বলে ১০৬ রান করার আগেও মিলার পাঁচে ব্যাট করতে নেমে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩৬ বলে ১০১ রান করেছিলেন। সেটা ২০১৭ সালের ঘটনা। পাঁচ বছর পর ফের পাঁচে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি করার নজির ডেভিড মিলারের।
আরও পড়ুন: ঘরের মাঠে T20 সিরিজে প্রোটিয়াদের হারিয়ে ইতিহাস অধিনায়ক রোহিতের
২) ডেথ ওভারে সর্বোচ্চ রান- টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ডেথ ওভারে সর্বোচ্চ রানের নজির গড়লেন ডেভিড মিলার। ভাঙলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির রেকর্ড। ডেথ ওভারে ৮৫৭ রান করেন মিলার। ৮৫৬ রানের নজির ছিল এমএস ধোনির। সেটাই ছাপিয়ে গেলেন ডেভিড মিলার। এ ছাড়াও শোয়েব মালিক ডেথ ওভারে করেছেন ৭৪৫ রান। ডেথ ওভারে নাজিবুল্লাহ জাদরানের সংগ্রহ ৭১৫ রান। মহম্মদ নবি আবার ডেথ ওভারে করেছেন ৬৭৭ রান। ৬৬৫ রান ডেথ ওভারে করেছেন বিরাট কোহলি।
রবিবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারই ভারতের ভিত শক্ত করে দেন। প্রথম উইকেটে ৯৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে রোহিত-রাহুল জুটি। ২৮ বলে ঝড়ো ৫৭ রান করেন রাহুল। কেএল রাহুলের কিছু আগেই ৩৭ বলে ৪৩ করে আউট হন রোহিত শর্মাও। ভারতের দুই ওপেনারকেই ফেরান কেশব মহারাজ। ভারতের দুই ওপেনার আউট হলেও ভারতের রানের গতি কিন্তু থামেনি। বরং বেড়েছে। কারণ তার পরেই শুরু হয় সূর্যকুমার যাদবের সাইক্লোন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন বিরাট কোহলি। যার জেরে ২০০ রানের গণ্ডি টপকে যায় ভারত।
আরও পড়ুন: ১৮ বলে ঝড়ো অর্ধশতরান,কেএল-কে ছুঁলেন সূর্য,সঙ্গে রাহুলের অন্য নজির ভাঙলেন আধঘণ্টায়
সূর্য অবশ্য তবে ২২ বলে ৬১ করে রান আউট হয়ে যান। তবে ইনিংস শেষ করে মাঠ ছাড়েন বিরাট কোহলি। ২৮ বলে অপরাজিত ৪৯ করেন বিরাট। আর ৭ বলে ঝড়ো ১৭ করে অপরাজিত থাকেন দীনেশ কার্তিক। যার জেরে ভারত এ দিন টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোর করে। ভারত এ দিন ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রানের বিশাল স্কোর করে।
রান তাড়া করতে নামলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আর্শদীপ সিং বল করতেই এসেই তেম্বা বাভুমা (৭ বলে ০) এবং রিলি রোসোউকে (২ বলে ০) প্যাভিলিয়নে ফেরান। এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে তিনি চাপে ফেলে দেন প্রোটিয়াদের। তবে ওপেন করতে নেমে হাল ধরেছিলেন কুইন্টন ডি'কক। তিনি এবং চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা এডেন মার্করাম দুরন্ত ছন্দে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৯ বলে ৩৩ করে মার্করামও আউট হলে, ফের ধাক্কা খায় প্রোটিয়া ব্রিগেড। এর পর পাঁচে ব্যাট করতে আসেন ডেভিড মিলার।
গুয়াহাটিতে এ দিন ভারতীয় সমর্থকেরাও মিলার ঝড়ের সাক্ষী থাকতে পেরে অভিভূত। প্রত্যেকেই উপভোগ করলেন ডেভিড মিলারের চোখ ধাঁধানো অনিন্দ্য সুন্দর ইনিংসটিকে। ঝড়ের গতিতে ব্যাট করে প্রোটিয়াদের প্রায় জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিলেন মিলার। অল্পের জন্য ফস্কে গেল লক্ষ্য। উল্টেদিকে উইকেট আঁকড়ে দর্শক হয়ে মিলারের ইনিংস উপভোগ করলেন কুইন্টন ডি'কক। ৪৭ বলে ঝড়ো ১০৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মিলার। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কা। স্ট্রাইকরেট ২২৫.৫৩। ডি'কক আবার ৪৮ বলে ৬৯ করে অপরাজিত থাকেন। এত লড়াইয়ের পরেও ২১ রানে ম্যাচ হারতে হল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেই সঙ্গে সিরিজও হাতছাড়া হল প্রোটিয়াদের।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।