তিনি যে দুর্ধর্ষ খেলেছেন, তা মোটেও নয়। তা সত্ত্বেও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে জয়ের শটের পর যেন কিছুটা হলেও টানা তিন ইনিংসে ব্যর্থতার দাগ ঘুচল বিরাট কোহলির। যেন কিছুটা অক্সিজেন পেলেন তিনি।
ত্রয়োদশ আইপিএলের শুরু থেকেই একেবারে ছন্দে নেই বিরাট। প্রথম ম্যাচে ১৩ বলে ১৪ রান করে বাঁ-হাতি টি নটরাজনের বলে আউট হয়েছিলেন। সেটাই এখনও পর্যন্ত আইপিএলে বিরাটের সর্বোচ্চ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে কিংস ইলেভন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে বড় রান তাড়ার জন্য ‘চেজ মাস্টার’-এর দিকে তাকিয়ে ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। কিন্তু সেই ম্যাচেও নিরাশ করেন তিনি। পাঁচ বলে এক রান করে শেলডন কটরেলের বলে আউট হয়েছিলেন। বাঁ-হাতি বোলারদের যে অ্যাঙ্গেল তৈরি হয়, তাতে যে বিরাটের দুর্বলতা আছে, প্রযুক্তির যুগে সেটা কারোর কাছে অজানা নয়। এবারের আইপিএলে সেই বিভীষিকা যেন আরও চেপে বসছিল বিরাটের কাঁধে।
আইপিএলের যাবতীয় আপডেট, লাইভ স্কোর দেখুন
তবে হাল ছাড়েননি তিনি। প্রথম দু'ম্যাচে রান না পাওয়ায় মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে বিরাট বাড়তি উদ্যম নিয়ে খেলবেন বলে আশা করেছিল ক্রিকেট মহল। উদ্যমে কোনও ঘাটতি না থাকলেও সোমবার দুবাইয়ে বিরাটের শোচনীয় অবস্থা হয়েছিল। রাহুল চাহারের বিরুদ্ধে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ছিলেন। টাইমিং তো দূর অস্ত, বলের লাইনও কার্যত ঠাহর করতে পারছিলেন না। যিনি কিনা স্পিনারদের অনায়াসে খেলেন। সম্ভবত ওভার দ্য উইকেট দিয়ে চাহারের বল যে অ্যাঙ্গেলে আসছিল, তার জেরে বিরাটের ০.০১ শতাংশের ছন্দও দুবাইয়ে দেখা যায়নি। শেষপর্যন্ত ১১ বলে তিন রান করে চাহারের বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
স্বভাবতই তাঁর ব্যর্থতার হ্যাটট্রিক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিশেষত একই স্টেডিয়ামে তিনটি ম্যাচ খেলার পরেও বিরাটের মতো খেলোয়াড়ের ওরকম অবস্থা কেন, তা নিয়ে কাঁটাছেড়া চলতে থাকে। তারইমধ্যে সুপার ওভারে এবি ডি'ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন বিরাট। সুপার ওভারের অর্ধেক কাজ করে দিয়েছিলেন নভদীপ সিং। জয়ের জন্য বিরাটদের মাত্র আট রান দরকার ছিল। লক্ষ্যমাত্রা কম হলেও বিরাট যেভাবে ছন্দহীনতায় ভুগছিলেন, তাতে অনেকের মনেই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। একটাই প্রশ্ন ছিল - কোহলি পারবেন তো?
সুপার ওভারের দ্বিতীয় বলেই সেই উত্তর দেন বিরাট। জসপ্রীত বুমরাহের শর্ট বলে পুল মারেন। ডিপ স্কোয়ার লেগে নিশ্চিত বাউন্ডারি আটকে দেন ট্রেন্ট বোল্ট। সেই শট দেখে কে বলবে, চূড়ান্ত ছন্দহীনতায় ভুগছিলেন বিরাট। শেষ বলে যখন এক রান বাকি ছিল, তখন একেবারে চেনা ছন্দের বিরাটের দেখা মেলে। লো-ফুল টসে ট্রেডমার্ক ফ্লিক করে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সামনে এগিয়ে এসে দায়িত্ব নিয়েছেন বিরাট। আর সুপার ওভারে যেভাবে দুটি শট মারলেন, তা হয়তো কোহলির ফর্মে ফেরার ‘ট্রেলার’ হতে চলেছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।