শেলডন কটরেলের ওভারটা শুরু হওয়ার আগেও তুমুল সমালোচনা হচ্ছিল স্টিভ স্মিথদের সিদ্ধান্ত নিয়ে। কার্যত কোনও বলই কানেক্ট করতে পারছিলেন না রাহুল তেওটিয়া। আর স্রেফ ছয় বলের ব্যবধানে ফিনিক্স পাখির উত্থানের সাক্ষী থাকল শারজা - সমগ্র ক্রিকেট দুনিয়া।
অথচ বড় রানের বোঝা নিয়ে চার নম্বরে নেমে একটা সময় রীতিমতো 'ঝুলিয়ে' দিয়েছিলেন তেওটিয়া। একটা বলও ব্যাটের মাঝখানে ঠেকাতে পারছিলেন না। ১৪ ওভারের শেষে ১৬ বলে মাত্র সাত রান করেছিলেন। এক রান নিয়ে অপর প্রান্তে সঞ্জু স্যামসনকেও স্ট্রাইক দিতে পারছিলেন না। সেই সময় বাকি ছিল ৯২ রান। স্বভাবতই ক্রমশ চাপ বাড়ছিল দুর্ধর্ষ ফর্মে থাকা সঞ্জুর উপর।
তেওটিয়া চেষ্টা করলেও কোনওভাবেই ব্যাটে ঠেকাতে পারছিলেন না। তাঁর সমালোচনা করলেও রাজস্থান রয়্যালসের টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশি প্রশ্ন তুলছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান না পাঠিয়ে তাঁকে পাঠানো হল, তা নিয়ে ভ্রূ কুঁচকেছিলেন সবাই। হর্ষ ভোগলে টুইট পর্যন্ত করেন, ‘এটা নিষ্ঠুর খেলাও হতে পারে, যেটা তেওটিয়া অনুভব করছে।’ পরে আরও একটি টুইটবার্তায় বলেন, ‘তেওটিয়ার বিষয়টা বুঝছি। কিন্তু নিজের দলকে হারাচ্ছেন তিনি।’
তারইমধ্যে ১৫ তম ওভারের পঞ্চম বলে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পান তেওটিয়া। দুর্দান্ত টাইমিং না হলেও রবি বিষ্ণোইয়ের মাথার উপর ছক্কা মারেন। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। এমনকী ১৬ তম ওভারে এক রান নিয়ে তেওটিয়াকে স্ট্রাইক দেননি সঞ্জু। দলের দু'উইকেট পড়ার পর বড় রান তাড়ার সময় সেটা ভাবা যায়! কিন্তু সঞ্জুকেই সেটাই করতে হয়েছিল। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ১৭ তম ওভারের প্রথম বলে আউট হয়ে যান সঞ্জু।
কেরালার ব্যাটসম্যান যেটা ২২ গজ দূর থেকে দেখে যেতে পারেননি, তা ১৮ তম ওভারে পিচের ৭০ মিটার দূর থেকে দেখেন। চাক্ষুষ করেন, কীভাবে মাত্র ছ'বলে ‘জিরো’ থেকে ‘হিরো’ হয়ে উঠলেন তেওটিয়া।
শেলডন কটরেলের ওভারটা ছয় দিয়ে শুরু করেছিলেন। প্রথম চার বলে চারটি ছক্কা মারেন। ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ, ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ, লং-অফ, মিড-উইকেটের উপর দিয়ে প্রথম চারটি বল বাউন্ডারি পার হয়ে যায়। পরের বলে কোনও রান না হলেও শেষ বলে আবারও মিড উইকেটের বাউন্ডারির বাইরে কটরেলকে বল আনতে পাঠিয়ে দেন তেওটিয়া।
সেই ১৮ তম ওভারে ৩০ রানের সৌজন্যেই কিংস ইলেভন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে ফিরে আসে রাজস্থান। পরে ১৮.৫ ওভারে মহম্মদ শামিকে ছক্কা মেরে অর্ধশতরান পূরণ করেন - মাত্র ৩০ বলে (সাতটি ছক্কা মেরেছেন)। পরের বলেই আউট হয়ে গেলেও তেওটিয়া প্রমাণ করে দিয়ে গেলেন - কেন তাঁকে চার নম্বরে নামানো হয়েছিল।
পরে তিনি বলেন, 'এখন ভালো লাগছে। আমার জীবনের জঘন্যতম ২০ টা বল ছিল। আমি নেটে ভালো খেলছিলাম। তাই আমার নিজের উপর বিশ্বাস ছিল।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।